ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে কলেজছাত্র ফয়সাল হত্যার ঘটনায় ওসিকে স্বাক্ষী মেনে নিজেকে নির্দোষ দাবী করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান ছায়েদ হোসেন। বুধবার সকালে উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা সভায় কালীকচ্ছ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এই দাবী জানান। সেই সাথে তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হলে আইনি পক্রিয়ায় বিচার মেনে নেওয়ার ও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। তবে অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আসলাম হোসেন সভায় বলেন, সঠিক ও স্বচ্ছ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষী ব্যক্তিদের বিরূদ্ধেই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। সূত্র জানায়, গতকাল উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা সভায় উপস্থিত হন ফয়সাল হত্যা মামলার এজহার নামীয় প্রধান আসামি কালীকচ্ছ ইউপি চেয়ারম্যান ছায়েদ হোসেন। ছায়েদ হোসেন বলেন, কালীকচ্ছ বাজারে রাতের বেলা দুই গ্রামের বাসিন্দারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। জনগণের ভোটে নির্বাচিত চেয়ারম্যান হিসেবে উভয় পক্ষের লোকজনের যানমালের নিরাপত্তার লক্ষে সংঘর্ষ থামাতে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। আমার সাথে আ.লীগ নেতা শফিক মুন্সিসহ আরো কয়েকজন ছিলেন। অবস্থা বেগতিক দেখে আমি পাশের একটি মার্কেটে অবস্থান করছিলাম। তখন উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষ শুরূর ১০-১২ মিনিট পরই সরাইল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে। এ সময় আমি মার্কেট থেকে বেরিয়ে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে সহযোগিতা করার চেষ্টা করি। কিছু লোক পুলিশকে লক্ষ করে ঢিল ছুঁড়ে। এতে ২/৩ জন পুলিশ সদস্য আহতও হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পুলিশ রাবার ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করেন। আমি বাড়িতে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর শুনি ফয়সাল নামের এক যুবক মারা গেছে। পরে নিহত ফয়সালের স্বজনরা আমাকে এক নম্বর আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এই মামলার দশ দিন পর ফয়সালের পিতা জাকির মিয়া বাদী আবারও আমাকে প্রধান আসামি করে আরেকটি হত্যা মামলা দেয়। সংঘর্ষ বা ফয়সাল হত্যাকান্ডের সাথে আমার কোন ধরণের সম্পৃক্ততা নেই। আমি শুধু পুলিশকে সহায়তা করেছি এটির স্বাক্ষী ওসি নিজেই। আমি ওসি সহ আইন-শৃঙ্খলা সভার সকল সদস্যদের বলছি, তদন্তে ফয়সাল হত্যার সাথে আমার জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে আইনি পক্রিয়ায় আমার বিচার করা হউক। আর আমি নির্দোষ হয়ে থাকলে আইনি পক্রিয়ায়ই আমাকে মুক্ত করে দেয়া হউক। অফিসার ইনচার্জ মো. আসলাম হোসেন বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগে সেখানে উভয় পক্ষ লাঠিসোটার সাথে ককটেলের বিশাল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। নিরপেক্ষ সঠিক ও স্বচ্ছ তদন্তের মাধ্যমে আমরা প্রকৃত সত্য বিষয়টিই বের করে আনব। তদন্তে নির্দোষ প্রমাণিত হলে আপনি (চেয়ারম্যান) মামলা থেকে অবশ্যই মুক্তি আশা করতে পারেন। তদন্ত কাজ সমাপ্ত হওয়ার আগে নিশ্চিত করে কিছুই বলা যাচ্ছে না।