ফল আমদানিতে নিরুৎসাহিত করা সত্ত্বেও গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে আপেল আমদানি বেড়েছে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১৭ শতাংশ। অবশ্য একই সময়ে কমলা আমদানি কমেছে। এনবিআরের কাস্টমস বিভাগের এ-সংক্রান্ত এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। গত বছর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর সরবরাহ শৃঙ্খল ব্যাহত হওয়ায় আমদানি পণ্যের মূল্য বাড়তে থাকলে সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় নয় এমন কিছু পণ্য যেমন ফল, কসমেটিকস, ফার্নিচারসহ শতাধিক পণ্য আমদানি নিরুৎসাহিত করার পদক্ষেপ নেয়। এর অংশ হিসেবে এসব পণ্যের উপর ২০২২ সালের মে মাসে বাড়তি ২০ শতাংশ রেগুলেটরি ডিউটি (আরডি) বা নিয়ন্ত্রকমূলক শুল্ক আরোপ করা হয়। এর ফলে আমদানিকৃত ফলের দাম বাজারে বাড়তে থাকে এবং খুচরা ফল বিক্রেতাদের তথ্য অনুযায়ী, ফল বিক্রি কমেও গেছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাস্টমস বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, গত অর্থবছরে ১৫ লাখ ৬২ হাজার মেট্রিকটনের বেশি আপেল আমদানি হয়েছে, যা এর আগের অর্থবছরের চেয়ে প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার টন বেশি। গত অর্থবছর আমদানিকৃত আপেল থেকে সরকার রাজস্ব আদায় করেছে ৯৯২ কোটি টাকার। তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ বিশ্ববাজার থেকে কমলা আমদানি করেছে ২ লাখ ২০ হাজার ৫৬১ টন, যা এর আগের অর্থবছরের তুলনায় ২৫ শতাংশ কম। গত অর্থবছর আমদানিকৃত কমলা থেকে সরকার রাজস্ব পেয়েছে ১ হাজার ১১২ কোটি টাকা। তথ্য অনুযায়ী, কমলা আমদানি ২৫ শতাংশ কমলেও এই পণ্যটি থেকে রাজস্ব আদায় বেড়েছে ১৪ শতাংশ। আমদানিকারকরা বলছেন, ডলারের বিপরীতে টাকার দর কমে যাওয়ায় আমদানিতে বাড়তি ব্যয় হয়েছে, যার কারণে আমদানি কমলেও সরকারের রাজস্ব আদায় বেশি হয়েছে। কমলা ও আপেল গত অর্থবছরে সরকারের আমদানি রাজস্বে অবদান রাখা শীর্ষ ১০টি পণ্যের তালিকায়ও রয়েছে। কাস্টমসের তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরে শীর্ষ ১০ আমদানি খাত থেকে সরকারের আমদানি শুল্কের প্রায় ২৮ শতাংশ আদায় হয়েছে, যার পরিমাণ ২৬ হাজার ৪৯৫ কোটি টাকা। এই ১০ পণ্য হলো- হাই স্পিড ডিজেল, চিনি, ফার্নেস অয়েল, ক্লিংকার, ব্রোকেন স্টোন, প্রি-ফেব্রিকেটেড স্টিল শিট, কয়লা, বিটুমিন, কমলা এবং আপেল। সরকারের কৃচ্ছ্রসাধন নীতির অংশ হিসেবে আমদানি নিরুৎসাহিত করার কারণে ২০২১-২২ অর্থবছরের তুলনায় ২০২২-২৩ এ শীর্ষ ১০ আমদানি পণ্যের মধ্যে ছয়টি আমদানির পরিমাণ কমেছে। এই ছয়টি পণ্য হলো চিনি, ফার্নেস অয়েল, সিমেন্ট ক্লিংকার, প্রিফেব্রিকেটেড স্টিল শিট, বিটুমিন এবং কমলা।