ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা দিতে চায় ৫২ প্রতিষ্ঠান

এফএনএস অর্থনীতি: : | প্রকাশ: ২১ আগস্ট, ২০২৩, ০৬:২৫ এএম

প্রচলিত ব্যাংকিং ধারার পাশাপাশি ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা দিতে চায় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। তারা শাখা ও বুথ ছাড়াও অ্যাপভিত্তিক ডিজিটাল লেনদেন কার্যক্রম পরিচালনা করবে। এ ধারার ব্যাংকিং সেবা দেওয়ার জন্য আবেদন করেছে ৫২টি প্রতিষ্ঠান। অনেকেই আবার জোটবদ্ধ সেবা আনতে চায়। প্রতিষ্ঠানগুলো লাইসেন্স পেতে এককভাবে এবং যৌথ উদ্যোগেও আবেদন করেছে। তবে জোটবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোকে ‘একক প্রতিষ্ঠান’ হিসাবে দেখছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে আবেদন করেছে এমন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে-দেশি-বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংক, মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠান, রাইড শেয়ারিং, ফুড ডেলিভারি, তথ্য প্রযুক্তি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান, ওষুধ কোম্পানি। রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, ডিজিটাল ব্যাংকের জন্য একটি ওয়েব পোর্টাল খোলা হয়েছিল। সেখানে নির্ধারিত সময়ে (বৃহস্পতিবার পর্যন্ত) আবেদন করেছে ৫২ প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানের আবেদন যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। নীতিমালা অনুযায়ী, আবেদনকারী প্রতিষ্ঠান এবং যোগ্যদের লাইসেন্সের জন্য এলওআই (লেটার অব ইন্টেন্ট) দেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ। এলওআই পেতে পরবর্তী বোর্ড সভায় ইস্যুটি আসতে পারে। তবে অপারেশনে যেতে আরও কিছু ধাপ অতিক্রম করতে হবে। বেসরকারি খাতের ১০ ব্যাংক মিলে ডিজিটাল ব্যাংক (ডিজি টেন ব্যাংক পিএলসি) করার উদ্যোগ নিয়েছে। ‘ডিজি টেন ব্যাংক পিএলসি’ এতগুলো ব্যাংক মিলে এ ধরনের উদ্যোগ প্রথম। ডিজিটাল ব্যাংক করার জন্য এক সঙ্গে জোট বা কনসোর্টিয়াম গঠন করেছে-সিটি ব্যাংক, মিউঁচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক (এমটিবি), ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড (ইবিএল), ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড (ডিবিবিএল), ট্রাস্ট ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, ন্যাশনাল ক্রেডিট অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক (এনসিসিবি), মার্কেন্টাইল ব্যাংক ও মিডল্যান্ড ব্যাংক। এ ছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংক মিলে ডিজিটাল ব্যাংক করতে চায়। যেসবের মধ্যে রয়েছে সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংক। গত জুনে বাংলাদেশ ব্যাংক এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ডিজিটাল ব্যাংকের জন্য আবেদন আহ্বান করেছিল। অনলাইনে আবেদন জমা নেওয়ার জন্য ওয়েবসাইটে আলাদা পেইজও খোলা হয়। আগ্রহী প্রতিষ্ঠান সেখান থেকে আবেদন জমা দেয়। আবেদন ফি বাবদ বাংলাদেশ ব্যাংককে অফেরতযোগ্য পাঁচ লাখ টাকা জমা দিতে হয় প্রতিষ্ঠানকে। প্রত্যেকটি ডিজিটাল ব্যাংক স্থাপনে নূন্যতম মূলধন লাগবে ১২৫ কোটি টাকা। প্রচলিত ধারার ব্যাংক করতে যেখানে প্রয়োজন হয় ৫০০ কোটি টাকা। ডিজিটাল ব্যাংকের প্রত্যেক উদ্যোক্তাকে কমপক্ষে ৫০ লাখ টাকা মূলধন জোগান দিতে হবে। লাইসেন্স দেওয়ার পাঁচ বছরের মধ্যে ডিজিটাল ব্যাংককে দেশের পুঁজিবাজারে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিওর মাধ্যমে শেয়ার ছাড়তে হবে। ব্যাংক স্থাপনে উদ্যোক্তাদের অর্ধেককে হতে হবে প্রযুক্তিভিত্তিক ব্যাংকিং, উদীয়মান প্রযুক্তি, সাইবার আইন ও বিধিবিধান বিষয়ে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন। বাকি অর্ধেক হতে হবে ব্যাংকিং, ই-কমার্স এবং ব্যাংকিং আইন ও বিধিবিধান বিষয়ে পর্যাপ্ত অভিজ্ঞতাসম্পন্ন। ডিজিটাল ব্যাংককে কোম্পানি আইন অনুযায়ী প্রচলিত ব্যাংকের মতো সময়ে সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারিত নূন্যতম নগদ জমা (সিআরআর) ও বিধিবদ্ধ জমা (এসএলআর) বজায় রাখতে হবে। তবে কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণখেলাপি ব্যক্তি বা তার পরিবারের কোনো সদস্য ডিজিটাল ব্যাংকের উদ্যোক্তা হতে পারবেন না। এক পরিবার থেকে সর্বোচ্চ কতজন পরিচালক হবেন, তা ঠিক হবে ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী। ডিজিটাল ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) ব্যাংকিং পেশায় কমপক্ষে ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। ডিজিটাল ব্যাংক ভার্চুয়াল কার্ড, কিউআর কোড ও অন্য কোনো উন্নত প্রযুক্তিভিত্তিক পণ্য দিতে পারবে। লেনদেনে কোনো প্লাস্টিক কার্ড হবে না, এই ব্যাংকের সেবা নিতে গ্রাহকরা অন্য ব্যাংকের এটিএম, এজেন্টসহ নানা সেবা ব্যবহার করতে পারবেন। ডিজিটাল ব্যাংকে এলসি খোলা যাবে না। বড় ও মাঝারি শিল্পেও কোনো ঋণ দিতে না পারলেও ছোট ঋণ দিতে পারবে।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW