বিশ্বের ‘সবচেয়ে বেশি দূরপাল্লার’ ড্রোন প্রথম বারের মতো প্রকাশ্যে এনেছে ইরান। একই সঙ্গে ব্যালিস্টিক ও হাইপারসনিক মিসাইলও প্রদর্শন করে প্যারেড করেছে তেহরান। প্রতিবেশী দেশ ইরাকের সঙ্গে ইরানের ১৯৮০-এর দশকের যুদ্ধবার্ষিকীতে এসব অস্ত্র প্রদর্শন করে মধ্যপ্রাচ্যের এ দেশটি। শুক্রবারের প্যারেডে ঐ ড্রোন প্রথম বারের মতো প্রদর্শন করা হয়। প্যারেডে প্রদর্শিত অন্য ড্রোনগুলো হলো মোহাজের, শাহেদ ও আরশ। ইরানের সামরিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, এ ড্রোন একই সঙ্গে কয়েকটি লক্ষ্যবস্তুকে চিহ্নিত করে একই সময়ে আঘাত হানতে সক্ষম। স্থিতিশীল লক্ষ্যবস্তুর পাশাপাশি চলমান লক্ষ্যবস্তুতেও আঘাত হানতে পারে এই ড্রোন। অবশ্য গত মাসে ইরান জানিয়েছিল যে, তারা ‘মোহাজের-১০’ নামের নতুন একটি ড্রোন উন্মোচন করেছে। ড্রোনটি মোহাজের-৬ এর একটি উন্নত সংস্করণ। এটি উন্নত অস্ত্র ধারণের পাশাপাশি অধিকতর উচ্চতায় দীর্ঘ সময়ের জন্য উড়তে পারে। ইরানের সরকারি বার্তা সংস্থা ইরনা জানিয়েছিল, ড্রোনটি ৭ হাজার ফুট উচ্চতায় ও ২ হাজার কিলোমিটারের পরিচালন পরিসীমাসহ সর্বোচ্চ ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত উড়তে পারে। ইরান থেকে ইসরাইলের দূরত্ব প্রায় ২ হাজার কিলোমিটার। যার অর্থ এটি ইসরাইলের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। ড্রোনটি ঘণ্টায় ২১০ কিলোমিটার গতিতে ভ্রমণ করতে পারে। এটি সাম্প্রতিক ইলেকট্রনিক ও ইন্টেলিজেন্স ব্যবস্থায় সজ্জিত। পাশাপাশি মনুষ্যবিহীন ড্রোনটি ৩০০ কেজি ওজন পর্যন্ত ভার বহনে সক্ষম, যা আগের মডেলের তুলনায় দ্বিগুণ। ইরানের দাবি, ড্রোনটি সব ধরনের বোমা ও গোলাবারুদ বহনেও সক্ষম। মার্কিন কর্মকর্তারা ইরানের বিরুদ্ধে ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য রাশিয়ার কাছে মোহাজের-৬ ড্রোন বিক্রি করার অভিযোগ এনেছে। তবে তেহরান বরাবরই সে অভিযোগ অস্বীকার করেছে। রাজধানী তেহরানে শুক্রবারের কুচকাওয়াজে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি বলেন, আমাদের বাহিনী এ অঞ্চলে ও পারস্য উপসাগরে নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে। আমরা এই অঞ্চলের মানুষকে বলতে চাই, প্রতিরোধই এখন টিকে থাকার পথ। একমাত্র প্রতিরোধই শত্রুকে পিছু হটতে বাধ্য করে। ১৯৮০ সালের ২২ সেপ্টেম্বর ইরাকের তৎকালীন সাদ্দাম সরকার ইরানে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে। প্রায় আট বছর ধরে চলা যুদ্ধ ১৯৮৮ সালে জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় আলজিয়ার্স চুক্তির মাধ্যমে শেষ হয়। তারপর থেকে প্রতি বছর ইরাকি আগ্রাসন শুরুর দিন থেকে জাতীয় প্রতিরক্ষা সপ্তাহ উদযাপন করে আসছে ইরান।