খুলনার পাইকগাছা পৌরসভার প্রাণকেন্দ্র থেকে শিবসা নদীতে নৌ-পথেই সহজেই যাতায়াত করতো খুলনা-সাতক্ষীরার জনগণ। এই নদীকে ঘিরে চলছে হাজার হাজার মানুষের জীবন-জীবিকা। অথচ প্রবল খরস্রােতা সেই নদী এখন পলি জমে ভরাট হয়ে নালায় পরিণত হয়েছে। জেগে উঠছে বিশাল চর। সেই চর ও নদীর জায়গা দখলের প্রতিযোগিতা চলছে। ফলে প্রতিনিয়ত জোয়ারের পানিতে পাইকগাছা পৌরসভা প্লাবিত হচ্ছে। আবার একই নদীতে গড়-ইখালীর দিকে প্রবল ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে শিবসা পাড়ের মানুষ। একইভাবে অবৈধ দখল, দূষণ, ভরাট ও ভাঙ্গনের কারণে ক্রমেই রুগ্ন হচ্ছে কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের স্মৃতিধন্য কপোতাক্ষ নদ। শুধু তাই নয়, জলবায়ু পরিবর্তন ও মুনষ্য সৃষ্ট নানা কারণে সারাদেশের ন্যায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নদণ্ডনদীগুলো অস্তিত্ব সংকটে ভূগছে। ফলে নদী পাড়ের মানুষের জীবন-জীবিকা, সম্পদ, খাদ্য, পানি, বাসস্থানসহ অন্যান্য সংকট সৃষ্টি হচ্ছে এবং মানুষের বাস্তচ্যুতির সংখ্যা বাড়ছে। এই সংকট থেকে উত্তরণে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে অদূর ভবিষ্যতে দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চল জনশূন্য হয়ে পড়বে। এই সংকট মোকাবেলায় ওই অঞ্চলের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘ওয়াটারকিপার্স-বাংলাদেশ’ এবং নাগরিক সংগঠন ‘সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলন’ দীর্ঘ দিন নানা কর্মসূচি পালন করে আসছে। তারই ধারবাহিকতায় বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় পাইকগাছা উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে একটি নাগরিক সংলাপের আয়োজন করা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আল-আমিন এর সভাপৎি¦তে ‘কপোতাক্ষ-শিবসাসহ নদণ্ডনদী ভরাট-দখল-দূষণঃ জরুরি করণীয়’ শীর্ষক নাগরিক সংলাপে ধারণাপত্র উত্থাপন করেন শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ এ- একোয়াকালচার বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মীর মোহাম্মদ আলী। সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলন সংগঠনের সমন্বয়ক সাংবাদিক নিখিল চন্দ্র ভদ্র সঞ্চালনায় সংলাপে প্রধান আলোচক ছিলেন ওয়াটারকিপার্স-বাংলাদেশের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপার) সাবেক সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল। আলোচনায় অংশ নেন পাইকগাছা পৌর মেয়র সেলিম জাহাঙ্গীর, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শিয়াবুদ্দীন ফিরোজ বুলু, লিপিকা ঢালী, কাউন্সিরর মাহাবুর রহমান রঞ্জু, কবিতা রানী দাশ, ইউপি চেয়ারম্যান মো. কওসার আলী জোয়ার্দ্দার, রিপন মন্ডল, প্রধান শিক্ষক রহিমা আক্তার শম্পা, সাবেক অধ্যক্ষ হরেকৃষ্ণ দাস, অনির্বাণ লাইব্রেরীর সাধারন সম্পাদক প্রভাত দেবনাথ, এ ছাড়া খুলনা, কয়রা, তালা, সাতক্ষীরার স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, মুক্তিযোদ্ধা, বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিক, পরিবেশ আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিগণ ও ভূক্তভোগী সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করেন।