ইমেইলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে সৌদি আরব থেকে যুবদলের আটক দুই নেতাকে ঢাকায় ফেরত এনেছে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্র্যান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। এই দুজন হলেন-কবির হোসেন ও দ্বীন ইসলাম বাদল; কবির সৌদি আরবে যুবদলের একাংশের সভাপতি এবং বাদলও যুবদলের এক নেতা। কবিরের বাড়ি বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জে চাঁনপুরের নয়নপুরে আর বাদলের কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে। সিটিটিসির প্রধান মো. আসাদুজ্জামান বলছেন, কবির ও বাদল গত ১৬/১৭ বছর ধরে সৌদিতে ছিলেন। সেখানে তারা চাকরির পাশাপাশি ব্যবসাও করেন। দুজনের কেউই দীর্ঘদিন বাংলাদেশে যাওয়া-আসা করেননি। বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হলে সৌদি পুলিশ কবির ও বাদলকে আটক করে গত ২৯ জানুয়ারি ঢাকায় ফেরত পাঠায়। ওই দিন শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে পুলিশ তাদেরকে গ্রেপ্তার করে বলে মো. আসাদুজ্জামান জানান। দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশ বলছে, কবিরের পরিকল্পনায় প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি দেওয়া মেইলটি বাদল পাঠিয়েছিলেন। এ ঘটনায় আর কেউ জড়িত কি না, তা খতিয়ে দেখছে সিটিটিসি। কবির ও বাদলের বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে রোববার ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে আসেন সিটিটিসির প্রধান মো. আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, গত বছরের ১৭ এপ্রিল বিকাল ৫টার ঠিক আগে ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া পাবলিক রিলেশন সেন্টারের ইমেইলে একটি হুমকি সম্বলিত বার্তা আসে। তাতে যা লেখা ছিল, সেটির বাংলা করলে দাঁড়ায়, "২৭ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভোর ৪টায় গুলি করা হবে। এই হামলা প্রতিরোধ করার ক্ষমতা বাংলাদেশ পুলিশের নেই। সিটিটিসি ইউনিটের প্রধান কর্মকর্তা বলেন, "ওই ইমেইলের বডিতেও এই হুমকি বার্তা লেখা ছিল। তৎক্ষণাৎ হুমকি বার্তার ভয়াবহতা এবং জাতীয় নিরাপত্তা ও শান্তি-শৃঙ্খলার স্বার্থে বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করা হয় এবং ইমেইল প্রেরণকারীকে দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য সিটিটিসি সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। সিটিটিসির একটি চৌকস টিম অনুসন্ধান এবং প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ শেষে ইমেইল বার্তা প্রেরণকারীকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয় এবং হুমকি বার্তা প্রেরণকারী ব্যক্তির নাম নাম দ্বীন ইসলাম বাদল বলে নিশ্চিত হয়। মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ইন্টারনেট (আইপি) অ্যাকটিভিটি পর্যালোচনা করে হুমকির বার্তা দেওয়া ব্যক্তির অবস্থান শনাক্ত হয় সৌদি আরবে। এরপর গত বছরের ২০ এপ্রিল এই ঘটনায় রমনা থানায় মামলাও করা হয়। "মামলার আসামি ও সহযোগীদের সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর জন্য পুলিশ সদরদপ্তর ইন্টারপোলের মাধ্যমে এবং একই সাথে ডিপ্লোমেটিক চ্যানেলে যোগাযোগ করা হয়। সৌদি কর্তৃপক্ষ তদন্ত শেষে ওই দুজনকে আটক করে এ বছরের ২৯ জানুয়ারি বাংলাদেশে পাঠায়। বর্তমানে তারা দুজন রিমান্ডে রয়েছে। মো. আসাদুজ্জামান বলেন, "দ্বীন ইসলামের কাছ থেকে হুমকি প্রদানকারী ইমেইল অ্যাড্রেসটির রিকভারী মোবাইল নম্বরসহ একটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। ওই দুজনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘প্রচুর দেশদ্রোহী কন্টেন্ট' মিলেছে বলে মো. আসাদুজ্জামানের ভাষ্য।