পণ্য পরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন সচিবদের। গত ৫ ফেব্রুয়ারি প্রধান মন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ‘সচিব সভায়’ এ নির্দেশনা দিয়েছেন। একই সাথে দুর্নীতি দমনে ব্যবস্থা, আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে পদক্ষেপ গ্রহণ, কর আদায়ের আওতা বাড়ানোরসহ একগুচ্ছ নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। বৈঠকে সব সচিব উপস্থিত ছিলেন। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, খাদ্য নিরাপত্তা, নতুন শিক্ষাক্রম, বিদ্যুৎ সরবরাহ ও জ্বালানি নিরাপত্তা, সামষ্ঠিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা হয়। বাজারে নিত্য-পণ্যের সরবরাহ থাকলেও মূল্য বৃদ্ধির কারণে জনগণের জীবন যাত্রার ব্যয় বেড়ে গেছে। আর মূল্য বৃদ্ধির কারণ হিসেবে অনেকেই পণ্য পরিবহনে লাগামহীন চাঁদাবাজির কথা বলছেন। অতি সম্প্রতি রাজধানীর প্রবেশ মুখ এবং পাইকারি বাজার থেকে বেশকিছু চাঁদাবাজ আটক করেছে র্যাব। তারা জোটবদ্ধ হয়ে বিভিন্ন পণ্যপরিবহন থেকে চাঁদাবাজরা ইজারদারের নামে চাঁদা আদায় করে থাকে। প্রয়োজনে চাঁদায় রশিদও দেয় তারা। চাঁদার এ হিসেবে চুকাতে পরিবহন ভাড়া বেশি দিতে হয়, যার প্রভাব পড়ে পণ্যের বিক্রয় মূল্যে। ফলে ভোক্তার পকেট থেকেই টাকা যাচ্ছে। সড়ক-মহাসড়কে চাঁদাবাজির অভিযোগ অনেক পুরনো। শুধু স্থানীয় চাঁদাবাজিই নয়, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধেও মহাসড়কে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু তা নিয়ন্ত্রণে তেমন কার্যকর কোনো ব্যবস্থা চোখে পড়েনি। নীতি নির্ধারকেরা গাল ভরা বক্তব্য দিয়ে আশার আলো জ্বালিয়েছেন। কিন্তু অবস্থার পরিবর্তন হয় নি। সড়কের নিরাপত্তা দায়িত্বে রয়েছে হাইওয়ে পুলিশ। তাদের দায়িত্বে সচেতন করতে সচিবদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে নির্দেশনা দিতে হবে কেন? সরকার প্রধান হিসেবে তিনি সব কিছুর তদারকি করবেন, নির্দেশনা দিবেন, কতটা বাস্তবায়িত হচ্ছে দেখাবেন। বাংলাদেশের দুর্নীতি ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জিরো টলারেন্সের কথা আমরা জানি। কিন্তু দুর্নীতির রাশ কতটা ধরে রাখা সম্ভব তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। যার যার ক্ষেত্রে সবাই সচেতন না হলে কোনো কিছুতেই সফল হওয়া সম্ভব নয়। তাই প্রশাসনের নীচ থেকে ওপর পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিজ নিজ দায়িত্বে প্রতি সচেতন হতে হবে এবং নীতি নৈতিকতা মেনে কাজ করতে হবে। সারা দেশে ছোট থেকে বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে মনে করছেন বিশ্ব নেতারা। শুধু দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে, এদেশের দেশ আজ উন্নত দেশ হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারতো। এজন্য রূপকল্প ২০৪১ প্রণয়ন করতে হতো না। আশা করি সবাই সচেতন হবেন। এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হিসেবে পরিচিতি পাবে বাংলাদেশ।