বন্ধ হোক ভেজাল ও নকল ওষুধের অবৈধ ব্যবসা

এফএনএস: : | প্রকাশ: ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪, ০৩:১৩ পিএম

রোগ প্রতিকারে, দুর্ঘটনায় আঘাতপ্রাপ্ত হলে বা অন্য যে কোনো শারীরিক জটিলতায় জীবন বাঁচাতে ওষুধের গুরুত্ব অপরিসীম। তবে এখন দেশের অনেক সমস্যার অন্যতম একটি হচ্ছে নকল ও ভেজাল ঔষধ। চারদিকে এত ভেজালের ছড়াছড়ি যে আসল খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হয়ে পরেছে। আজকাল ভেজাল খাবার খেয়ে মানুষ নানা রকম জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এরপরেও বর্তমানে ওষুধ নিয়ে চরম অরাজকতা চলছে বাংলাদেশে। এক শ্রেণির অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ীর কারণে আমরা ওষুধ নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। অধিক মুনাফার লোভে জীবন রক্ষাকারী অনেক ওষুধ ভেজাল হচ্ছে। দেশে কিছু ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান আছে, যেখানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিধি মেনে ওষুধ উৎপাদন করা হয় না। এ ছাড়া অবৈধপথে বিভিন্ন দেশ থেকে আসছে অনুমোদনহীন ওষুধ। দেশে ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ সেবনে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে। বস্তুত একটি চক্র ও অসাধু ব্যবসায়ীদের অপতৎপরতার কারণেই নকল ও নিম্নমানের ওষুধের উৎপাদন ও বিপণন বন্ধ হচ্ছে না। রোগব্যাধি হলে যে ওষুধ খেয়ে জীবন রক্ষা করে মানুষ। কিন্তু সেই ওষুধেও ভেজাল থাকাটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। মানহীন ও ভেজাল ওষুধ খেয়ে রোগ সারার বদলে আরো বৃদ্ধি পাঁচ্ছে। সবচেয়ে অবাক করা ব্যাপার হচ্ছে, দেশে ওষুধের উৎপাদন থেকে বিপণন পর্যন্ত কোনো স্তরেই সরকারি পরীক্ষাগারে মান নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজন হয় না। বিপণনের পর অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বাজার থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পাঠান। তখন ওষুধের মান জানা যায়। এর আগ পর্যন্ত পরীক্ষাহীন, মান না জানা ওষুধই ব্যবহার করে মানুষ। এভাবেই ওষুধ কোম্পানিগুলো এ দেশের মানুষগুলোকে রীতিমতো ঠকাচ্ছে। ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ তৈরি ও বাজারজাত দিন দিন বেড়েই চলেছে। অনেক কোম্পানি জেনেশুনে জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এ অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। যেখানে সার্বিক বিবেচনায় শুধু জনস্বার্থই নয়, কোম্পানিগুলোর নিজ স্বার্থেও ওষুধের মান ঠিক রাখা অত্যন্ত জরুরি। কারণ দেশে নকল ও নিম্নমানের ওষুধের উৎপাদন ও বিপণন পুরোপুরি বন্ধ না হলে ওষুধের আন্তর্জাতিক বাজারে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। এর ফলে দেশ অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই মানহীন ওষুধ তৈরির সঙ্গে জড়িত সবার বিরুদ্ধে ওষুধ প্রশাসনকে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এবং ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর যেন এ দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করে, সেজন্য সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।  জনস্বাস্থ্য রক্ষায় এ বিষয়ে আমরা সরকারের কঠোর অবস্থান দেখতে চাই।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW