ম্যাচের তখন মোটে একাদশ মিনিট চলছে। ধারাভাষ্যকার চিৎকার করে চলেছেন, “লুইস সুয়ারেসকে নিয়ে যত আলোচনা, সব তিনি মিলিয়ে দিলেন মুহূর্তেইৃ।” দ্বিমত করার সুযোগ সেখানে নেই। ততক্ষণে যে দুই গোল দিয়ে ফেলেছেন সুয়ারেস! দলের সবচেয়ে বড় তারকা লিওনেল মেসিই বা পিছিয়ে থাকবেন কেন। পরে দুটি গোল করলেন আর্জেন্টাইন জাদুকরও। সব মিলিয়ে ইন্টার মায়ামি পেল উড়ন্ত এক জয়। মেজর লিগ সকারে বাংলাদেশ সময় রোববার সকালের ম্যাচে অরল্যান্ডো সিটিকে ৫-০ গোলে বিধবস্ত করল ইন্টার মায়ামি। ম্যাচের প্রথম ১১ মিনিটের মধ্যেই দুটি গোল করেন সুয়ারেস। প্রথমার্ধেই ব্যবধান আরও বাড়ান রবার্ট টেইলর। দ্বিতীয়ার্ধে দুটি গোল করেন মেসি। লিগে নতুন মৌসুমের প্রথম দুই ম্যাচে মেসির গোল ছিল একটি। কিন্তু সুয়ারেস পাননি গোলের দেখা। তার ফিটনেস নিয়েও টুকটাক প্রশ্ন উঠছিল। এবার সংশয় উড়িয়ে দিলেন ৩৭ বছর বয়সী স্ট্রাইকার। সেরা ফর্মে থাকলে যেমন নিখুঁত ফিনিশিং দেখা যায় তার, ম্যাচের শুরুর ভাগে তাকে দেখা গেছে সেই রূপেই। চতুর্থ মিনিটে মেসির কাছ থেকে বল পেয়ে বক্সের ডান পাশের ঠিক বাইরে থেকে ক্রস করেন জুলিয়ান গ্রেসেল। বক্সের ভেতর তিন ডিফেন্ডারের মাঝখানেও ফাঁক জায়গা বের করে নিয়েছিলেন সুয়ারেস। প্রথম ছোঁয়াতেই ডান পায়ের গতিময় শটে গোলকিপারকে পরাস্ত করেন তিনি। পরের গোলটিও এই দুজনের সংযোগের ফসল। এবার বাঁ প্রান্ত থেকে টেইলর বল বাড়িয়ে দেন সুয়ারেসকে। কাছেই থাকা ডিফেন্ডারের বাধা ছিটকে তিনি পাস দেন বক্সের মুখে দাঁড়িয়ে থাকা গ্রেসেলকে। তিনি দারুণ এক ফ্লিক করে বক্সের ভেতর বল দেন প্রতিপক্ষের দুজনকে বিভ্রান্ত করে। সুয়ারেসস ততক্ষণে বক্সের ভেতর ঢুকে গেছেন। ডান পায়ের প্রথম ছোঁয়ায় বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বাঁ পায়ের নিখুঁত শটে বল জালে জড়ান তিনি। ২৯তম মিনিটে হ্যাটট্রিকের সুযোগ আসে সুয়ারেসের। এবারও বল পান তিনি গ্রেসেলের কাছ থেকে। তার সামনে কেবল ছিলেন গোলকিপার। তবে নিজে শট নেওয়ার ঝুঁকি না নিয়ে তিনি বাড়িয়ে দেন একদম ফাঁকায় দাঁড়িয়ে থাকা টেইলরকে। বিনা বাধায় জালে বল পাঠাতে কোনো সমস্যাই হয়নি তার। ৫৪তম মিনিটে সুয়ারেসের কাছ থেকে বল পেয়ে মেসির দারুণ এক শট একটুর জন্য বাইরে চলে যায়। পরের মিনিটেই গোল করার সুযোগ পান গ্রেসেল। সুয়ারেসের পাস থেকে তার শট গিয়ে লাগে গোলবারে। ৫৭তম মিনিটে দারুণভাবে বক্সে ঢুকে জর্দি আলবা আলতো করে বল পাঠিয়ে দেন আগুয়ান গোলকিপারের ওপর দিয়ে। কিন্তু প্রায় গোললাইন থেকে তা ফেরান অরল্যান্ডোর ডিফেন্ডার। তবে তিনিও পারেননি বল বিপদমুক্ত করতে। তার শট গোলবারে লেগে রয়ে যায় সেখানেই। কাছেই থাকা মেসি বুক দিয়ে বল নামিয়ে আলতো করে পাঠিয়ে দেন জালে। ৬২তম মিনিটে বক্মের বাঁ দিক থেকে সুয়ারেস বল উড়িয়ে দেন ডান পাশে একদম ফাঁকায় থাকা মেসির দিকে। নিয়ন্ত্রিত হেডে গোলকিপারের ডান পাশ দিয়ে তা জালে পাঠান আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী তারকা। এই জয়ে তিন ম্যাচে সাত পয়েন্ট নিয়ে মেজর লিগ সকারের ইস্টার্ন কনফারেন্সের শীর্ষে ইন্টার মায়ামি।