ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার দুই সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে সারবোঝাই একটি কার্গো জাহাজ এডেন উপসাগরে ডুবে গেছে। ইয়েমেন সরকার শনিবার এ তথ্য জানিয়েছে বলে এএফপির এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হুতিরা ১৯ ফেব্রুয়ারি বেলিজিয়ান পতাকাবাহী কার্গো জাহাজ রুবিমারের বিরুদ্ধে আক্রমণের দাবি করেছিল। লেবানিজ ফার্ম পরিচালিত জাহাজটিতে দাহ্য সার পরিবহন করা হচ্ছিল। দুটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাতের পর ক্রুরা জাহাজটি পরিত্যাগ করে নিরাপদে সরে যান। জাহাজটি সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে রওনা হয়েছিল এবং বুলগেরিয়ান ভার্না বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিল। ইয়েমেনের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারের ক্রাইসিস সেল বলেছে, ‘গত রাতে বিরূপ আবহাওয়া এবং সমুদ্রে প্রবল বাতাসের কারণে এমভি রুবিমার ডুবে গেছে।’ জাহাজের অপারেটর ব্লু ফ্লিটের প্রধান নির্বাহী রায় খৌরি বলেছেন, তিনি ডুবে যাওয়ার বিষয়ে অবগত নন। তিনি এএফপিকে বলেন, ‘এটি সত্য কি না তা যাচাই করার জন্য জাহাজে আমাদের কেউ নেই।’ ম্যাক্সার টেকনোলজিসের শেয়ার করা এবং এএফপি প্রকাশিত স্যাটেলাইট চিত্রগুলোতে জাহাজ থেকে জ্বালানি তেল বের হতে দেখা গেছে। ট্যাংকারট্র্যাকার্স ওয়েবসাইট বলেছে, ডুবে যাওয়ার ফলে ‘(ইয়েমেনি) আঞ্চলিক জলসীমা এবং লোহিত সাগরে পরিবেশগত বিপর্যয় ঘটবে’। মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকায় গ্রিনপিসের প্রগ্রাম ডিরেক্টর জুলিয়েন জেরেসাটি বলেছেন, ‘সমুদ্রে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট সারের ছিটা সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রের ওপর বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। ’ব্রটিশ নৌবাহিনী পরিচালিত মেরিটাইম সিকিউরিটি এজেন্সি ইউকেএমটিও বলেছে, রুবিমার ইয়েমেনি বন্দর মোখা থেকে ৩৫ নটিক্যাল মাইল (৬৫ কিলোমিটার) দূরে ছিল, যখন এর ক্রুরা এটি পরিত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিল। এএফপির বলেছে, রুবিমারকে মার্কিন সামরিক ও নিরাপত্তা সংস্থা অ্যামব্রে ব্রিটিশ নিবন্ধিত জাহাজ হিসেবে চিহ্নিত করেছিল, কিন্তু খৌরি এ তথ্য অস্বীকার করেছেন। নভেম্বর থেকে হুতিরা লোহিত সাগর এবং এডেন উপসাগরে ইসরায়েলের সঙ্গে সংযুক্ত জাহাজগুলোতে হামলা চালিয়ে আসছে। এর মাধ্যমে তারা গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছে জানিয়েছে। গণমাধ্যমটির তথ্য অনুসারে, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীর নজিরবিহীন হামলার পর থেকে গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেছে ইসরায়েল। হুতিদের হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলের প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্র কৌশলগত জলপথে সামুদ্রিক যানবাহন রক্ষায় ডিসেম্বরে একটি বহুজাতিক বাহিনী প্রতিষ্ঠা করে। জানুয়ারি থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা ইয়েমেনে হুতি লক্ষ্যবস্তুগুলোর বিরুদ্ধে অসংখ্য হামলা চালিয়েছে, যেখানে ইরান সমর্থিত গোষ্ঠীটির বিদ্রোহীরা ২০১৪ সাল থেকে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারের প্রতি অনুগত বাহিনীর সঙ্গে লড়াই করছে।