সাতক্ষীরার কলারোয়ায় স্বামীর পুরুষাঙ্গ কেটে স্ত্রীর আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (২০ এপ্রিল) ভোরে উপজেলার কেঁড়াগাছি ইউনিয়নের পাঁচপোতা গ্রামে ওই ঘটনাটি ঘটেছে। স্থানীয়রা জানান, ওই গ্রামের মৃত আনছার আলীর ছেলে আজাহারুল ইসলাম (৩৫) এর পুরুষাঙ্গ কেটে আত্মহত্যা করে তার দ্বিতীয় স্ত্রী ঝর্ণা খাতুন (৩০)। ভোরে তাদের ঘরে ভিতর থেকে দরজা দেয়া অবস্থায় আজহারুলের গোঙানী শুনে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। পরে দরজা ভেঙ্গে আজহারুলের রক্তাক্ত অবস্থায় পুরুষাঙ্গ কাটা ও পাশে স্ত্রী ঝর্নাকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখতে পায়। পুলিশ এসে তাদের দুইজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ঝর্না খাতুনের লাশ সাতক্ষীরা মর্গে রয়েছে এবং আহত আজহারুলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চলের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কেঁড়াগাছি ইউপি চেয়ারম্যান এস এম আফজাল হোসেন হাবিল জানান, ‘ঝর্না খাতুনের বাপের বাড়ি দক্ষিনে। তার প্রথম বিবাহ একই ইউনিয়নের গাড়াখালিতে। পরবর্তীতে পাঁচপোতা গ্রামের আজহারুলের সাথে তার বিয়ে হয়। আজহারুল পেশায় রাজমিস্ত্রির কাজ করতো। তারা ওই গ্রামের হাসানের বাড়িতে ভাড়া থাকতো। শনিবার ভোরে ঘরে গোঙানির শব্দ শুনে স্থানীয়রা আমাকে জানালে আমি চৌকিদার পাঠাই। পরে পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। তখন দেখা যায় আজারুলের পুরুষাঙ্গ কাটা ও মহিলাটি অচেতন অবস্থায় রয়েছে। কলারোয়া হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা: শফিকুল ইসলাম জানান, ‘দুজনকে অচেতন অবস্থায় পুলিশ হাসপাতালে নিয়ে আসে। পুরুষটির পুরুষাঙ্গ পুরোপুরি কাটা ছিলো। অবস্থা খারাপ থাকায় তাদের দুজনকেই সাতক্ষীরায় প্রেরণ করা হয়। কলারোয়া থানা অফিসার ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম জানান, ‘সাতক্ষীরায় হাসপাতালে নেয়া হলে ঝর্ণা খাতুনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা আর গুরুতর আহত অবস্থায় আজহারুলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। তিনি আরো জানান, ‘আজহারুল ও ঝর্না দুজনেরই দ্বিতীয় বৈবাহিক সম্পর্ক। পারিবারিক কলহের জের ধরে রাগে ক্ষোভে দুঃখে স্বামীর পুরুষাঙ্গ কেটে স্ত্রী আত্মহত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, ‘আজহারুল ইসলামের বড় স্ত্রীর নাম রাশিদা খাতুন ও ছোট স্ত্রীর নাম ঝর্না খাতুন। প্রথম স্ত্রীকে নিয়ে সম্প্রতি দ্বিতীয় স্ত্রী ঝর্ণা খাতুনের সাথে আজহারুল ইসলামের পারিবারিক দ্বন্দ্ব চলছিলো। শনিবার রাতে আজহারুল ইসলামকে ভাতের সাথে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দেয় ঝর্ণা খাতুন। পরে ঘুমন্ত স্বামী আজহারুল ইসলামের পুরুষাঙ্গ কেটে নেয় সে। একপর্যায়ে ঝর্ণা খাতুনও ঘুমের ওষুধ খেয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। ভোরে ঘটনাটি জানাজানি হলে স্থানীয়রা পুলিশি সহায়তায় তাদেরকে উদ্ধার করে কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখানে তাদের অবস্থা অবনতি হলে তাদেরকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে ওসি রফিকুল ইসলাম জানান। সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রেজিস্ট্রার ডাক্তার মানস কুমার জানান, সামেক হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আগে ঝর্না খাতুন মারা গেছে। আর আজহারুল ইসলামের অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।