নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা। এগুলোর কারণে প্রতিদিন নানা সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে, বাড়ছে সড়কে বিশৃঙ্খলা। আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষা করেই বছরের পর বছর চলছে এসব অবৈধ যানবাহন। ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধে অভিযান অব্যাহত থাকলেও রাজধানীতে দিনদিন এ বাহনের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এসব অবৈধ যানের কারণে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি। সমস্যাটির সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া না হলে তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। দিনে বিভিন্ন অলিগলিতে চলাচল করলেও রাত ৯টার পর এগুলো মূল সড়কেই চলাচল করছে। পুলিশ বলছে, ব্যাটারিচালিত রিকশার বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হয়। প্রশ্ন হলো, যেসব গ্যারেজে রিকশা রাখা হয় এবং চার্জ দেওয়া হয়, সেসব গ্যারেজ মালিকদের আইনের আওতায় আনার উদ্যোগ নেওয়া হয় না কেন? জানা যায়, রাজধানীতে টোকেনের বিনিময়ে চলে ব্যাটারিচালিত রিকশা। এসব অবৈধ যান বন্ধ না হওয়ার পেছনে সক্রিয় রয়েছে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। অভিযোগ রয়েছে, এ সিন্ডিকেটের সঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতা, পুলিশ ও চাঁদাবাজরা যুক্ত। ব্যাটারিচালিত রিকশার চালকরা বলছেন, তারা নিয়মিত মাসোহারা দিয়ে টোকেন নিয়ে এসব যানবাহন চালাচ্ছেন। এক গবেষণায় দেখা যায়, প্রতিবছর সড়ক দুর্ঘটনায় যত মানুষের মৃত্যু হয়, এর ২০ শতাংশই ঘটে ব্যাটারিচালিত রিকশার কারণে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ঝুঁকিপূর্ণ এ যানবাহনটি যাতে রাজধানীতে চলাচল করতে না পারে সেজন্য কর্তৃপক্ষের কঠোর হওয়া উচিত। অনুমোদিত যানবাহনের কারণে দুর্ঘটনা ঘটলে সেক্ষেত্রে আলোচনার সুযোগ থাকে। কিন্তু অবৈধ যানবাহনের কারণে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে আলোচনার সুযোগ থাকে না। বর্তমানে বিদ্যুৎ সংকটের সময়েও ব্যাটারিচালিত রিকশাগুলোর পেছনে যে প্রতিদিন এত বিদ্যুতের অপচয় হচ্ছে, সেদিকে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি নেই কেন? ব্যাটারিচালিত রিকশাকে কেন্দ্র করে চাঁদাবাজির যে নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছে, এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ উদাসীন থাকলে চাঁদাবাজির নতুন নতুন নেটওয়ার্ক গড়ে উঠবে, যা নাগরিকদের গলার কাঁটা হয়ে উঠবে। রাজধানীর বাইরে কোনো জেলায়ই মানসম্মত গণপরিবহণব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। এ চাহিদা পূরণ করছে ব্যাটারিচালিত রিকশা। তবে এ ধরনের যানবাহনের কারণে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েই চলেছে। রাজধানীর বাইরে যেসব ব্যাটারিচালিত রিকশা চলছে, সেগুলোর কাঠামোর মানোন্নয়ন করে সড়কে চলাচলের উপযোগী করতে হবে।