জনগণের কল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করুন: এমপি সৌরেন   

এফএনএস (রওশন জাহান; মহাদেবপুর, নওগাঁ) : : | প্রকাশ: ১৮ মে, ২০২৪, ০৬:৫৩ এএম

নওগাঁ-৩ (মহাদেবপুর-বদলগাছী) আসনের এমপি সৌরেন্দ্রনাথ চক্রবর্ত্তী সৌরেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিজেদের মধ্যে ভেদাভেদ ভূলে জনগণের কল্যাণে নিজেদের উৎসর্গ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি পরিচ্ছন্ন রাজনীতির মাধ্যমে এলাকার মানুষের উন্নয়ন করতে চাই। যারা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে চান, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার আদর্শকে ধারণ করেন তাদেরকে কখনোই কটু কথা বলা যাবেনা।

তাদেরকে সহযোগিতা করতে হবে।’ তিনি এমপি নির্বাচিত হবার পর এলাকার উন্নয়নের ফিরিস্তি দিয়ে বলেন, ‘ইতোমধ্যেই মহাদেবপুরকে পৌরসভায় রুপান্তরের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এ ছাড়া এখানে একটি কৃষি ইন্সটিটিউট নির্মাণেরও পরিকল্পনাও নেয়া হয়েছে।’ এমপি সৌরেন বলেন, ‘আমার কোন আত্মীয়স্বজন নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেনা। আগামী ৫ জুন মহাদেবপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে যিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের বাস্তবায়ন করবেন, যিনি জনগণের সেবা করবেন তাকে আপনারা নির্বাচিত করবেন।’ 

গত শুক্রবার (১৭ মে) বিকেলে এমপি তার নির্বাচনী এলাকা নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলা সদরের বাসস্ট্যান্ডে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালন উপলক্ষে উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দানকালে কথাগুলো বলেন। 

অনুষ্ঠানের শুরুতে আওয়ামী লীগের একটি গ্রুপের সাথে আয়োজকদের কথা কাটাকাটি মারামারি, মাইক কেড়ে নেয়া, ধাওয়া ও চেয়ার ভাঙচুৃরের ঘটনা ঘটে। অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে এমপি সৌরেন্দ্রনাথ চক্রবর্ত্তী সৌরেন এসে উভয়পক্ষকে মঞ্চে নিয়ে বক্তব্য দেন। সরকারি দলের প্রকাশ্য সমাবেশে এ ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ঘটনাটি একসময় ট্যক অব দ্য টাউনে পরিণত হয়। 

আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে সাবেক সিনিয়র সচিব সৌরেন্দ্রনাথ চক্রবর্ত্তী সৌরেনকে নৌকা প্রতিক দেয়া হয়। তখনকার এমপি ছলিম উদ্দিন তরফদার নৌকা প্রতিক না পেয়ে ট্রাক মার্কা প্রতিক নিয়ে স্বতন্ত্র হিসেবে ভোটে অংশ নেন। ভোটে নৌকার বিজয় হবার পর কোন কোন নেতা ট্রাকের কর্মীদের বয়কট করা শুরু করেন। কিন্তু এমপি সৌরেন উভয় গ্রুপের নেতাকর্মীদের মধ্যে সমন্বয় করে দলীয় কর্মকা- পরিচালনার উদ্যোগ নেন। এরই অংশ হিসেবে এই প্রথম দলীয় বড় সমাবেশে সব নেতাকর্মীদের ডাকা হয়।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক এমপি ছলিম উদ্দিন তরফদার সেলিম সমাবেশে অনুপস্থিত থাকায় সমাবেশের শুরুতে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা, সদর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা বঙ্গবন্ধু পরিষদের আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমান ধলু উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি গোলাম নুরানী আলালকে সমাবেশে সভাপতিত্ব করার, উপণ্ডদপ্তর সম্পাদক মাস্টার ফণিভূষণ মহন্তকে উপস্থাপনা করার আহ্বান জানান। উপস্থাপক উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান আহসান হাবীব ভোদনের মৃত্যুতে ১নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাবুল চন্দ্র বাবু ঘোষকে বক্তব্য দানের আহ্বান জানান।

তিনি বক্তব্য শুরু করলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম, সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও রাইগাঁ ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলম মঞ্জু ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার রাহেনুল হক লুসার নেতৃত্বে মাইক কেড়া নিলে বিশৃঙ্খলার সূত্রপাত ঘটে। পরে এমপি সৌরেন ঘটনাস্থলে পৌঁছলে নেতাকর্মীরা শান্ত হোন। 

জানতে চাইলে মঞ্জুর আলম মঞ্জু জানান, শহীদুল ইসলাম একজন সিনিয়র নেতা তিনি গত নির্বাচনে নৌকার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু গোলাম নুরানী আলাল ও বাবুল চন্দ্র ঘোষ ট্রাকের ভোট করেছেন। এজন্য তারা চেয়েছিলেন যারা জননেত্রী শেখ হাসিনার আদর্শকের ধারণ করে নৌকার ভোট করেছেন তাদেরকে সামনে রাখা হোক। অন্যদেরকে তাদের পরের স্থানে রাখা হোক।

এই হিসেবে শহীদুল ইসলামেরই সভাপতিত্ব করার কথা। কিন্তু এমপি সমাবেশস্থলে আসার আগেই গোলাম নুরানী আলালের নাম সভাপতি হিসেবে ঘোষণা করা হয়। তারা এই ঘটনার প্রতিবাদ করছেন। সার্বিকভাবে এমপি সৌরেন আওয়ামী লীগের সবগ্রুপকে একত্র করে এলাকার উন্নয়নে একসাথে পরিচ্ছন্ন রাজনীতি পরিচালনার উদ্যোগ নেয়ায় সর্বস্তরের নেতাকর্মী তাঁকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।

 

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW