ঘুর্ণিঝড় রেমেলের প্রভাবে ঝড়ের তান্ডবে ঝালকাঠি জেলার অধিকাংশ এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাছপালা পরে অনেক বাড়িঘর ভেঙে পরেছে। ঘূর্নিঝড়ের ৬ দিন পার হলেও নিচু অঞ্চলে এখনও পানি জমে আছে। কয়েকশত মাছের ঘের ও পুকুর তলিয়ে মাছ বেড়িয়ে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন মৎস্যজীবিরা। বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ সংযোগ চালু হলেও টানা চারদিন ধরে বিদ্যুৎ বঞ্চিত এক বীর মুক্তিযোদ্ধা ওজোপাডিকে অফিসে এসে ক্ষোভে ফেঁটে পড়েন। বিদ্যুৎ বিভাগের গাফিলতিকে দায়ি করে মুক্তিযোদ্ধা দায়িত্বরত প্রকৌশলী বলেন, আপনার ঘুষ খাওয়ার জন্য দেশ স্বাধীন করিনি। সঠিক ভাবে দায়িত্ব পালন না করলে রিজেইন দিয়ে চলে যাবেন।’ ঝালকাঠি ওজোপাডিকো অফিসে বৃহস্পতিবার দুপুরে এভাবে তীব্র ক্ষোভ ঝাড়েন এই মুক্তিযোদ্ধা।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টা। ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্টিবিউশন লিমিটেড ওজোপাডিকোর ঝালকাঠি অফিসে সংবাদ সংগ্রহের জন্য সাংবাদিকরা উপস্থিত হন। এ সময় তাদের কাছে ছুটে আসেন এক বয়োজেষ্ঠ্য ব্যক্তি। তীব্র ক্ষোভের সাথে হন্তদন্ত হয়ে তিনি ঢুকে পড়েন বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের উপণ্ডবিভাগীয় প্রকৌশলীর কক্ষে। এ সময় তিনি নিজেকে একজন মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দিয়ে প্রকৌশলীর কাছে জানতে চান, রেমেলের চার দিন পার হলেও এখনও কেন তিনি বিদ্যুৎ সংযোগ পান নি। শহরের কৃষ্ণকাঠি এলাকাটির এ বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম খন্দকার শফিকুল আলম (৭০)। কৃষ্ণকাঠি এলাকাটিতে তিনিসহ দুই শতাধিক পরিবার এখনও বিদ্যুৎ সংযোগ না পাওয়ায় ওজোপাডিকোর দায়িত্বহীনতা দায়ী করে ক্ষোভে ফেটে পড়েন তিনি। বিদ্যুত লাইন সংস্কার না করায় তীব্র গরমের সাথে পানি বঞ্চিত হয়ে এ মুক্তিযোদ্ধা রাগে থরথর করে কাঁপাতে থাকেন। এ সময় মুক্তিযোদ্ধা প্রকৌশলীকে বলেন, আপনার দায়িত্ব কী ঘুষ খাওয়া, ঘুষ খাওয়ার জন্য কী দেশ স্বাধীন করেছি। পরে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করতে প্রকৌশলীকে হুশিয়ারী করে চলে যান মুক্তিযোদ্ধা।
তবে ঝালকাঠি ওজোপাডিকোর উপণ্ডবিভাগীয় প্রকৌশলী (বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ) মো: আবদুস সালাম বলেন, ঝড়ে পৌর শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন স্থানে ব্যপক গাছপালা এবং বিদ্যুৎ খুটি উপড়ে পড়েছে। যে কারণে শ্রমিক ভাড়া করেও সব স্থানে সংযোগ দেয়া সম্ভব হয়নি। তবে খুব শীগ্রই পুরো কাজ সম্পন্ন করে সব স্থানে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হবে।
প্রসঙ্গত, ঝালকাঠি ওজোপাডিকোর আওতায় ২৫ হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহক রয়েছে। এরমধ্যে মধ্যে রেমেলের ৭২ ঘন্টা পর বুধবার রাতে জেলা শহরে অর্ধেক সংখ্যক গ্রাহক বিদ্যুৎ সংযোগ পায়।