কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের কাদবা গরু বাজার চলাকালে শুক্রবার ইজারাদার ও বাজারের জমির মালিকদের দু'পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে স্থানীয় কাদবা গরু বাজারে এ সংঘর্ষের শুরু হয়ে চলে ঘন্টা ব্যাপী।
থানা পুলিশের অন্তত ১৫সদস্য-সহ নির্বাহী ম্যাজিস্টেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি মেহেদী হাসান ঘটনাস্থলে এসে প্রায় ১ঘন্টার প্রচেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সন্ধ্যায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুরাইয়া আক্তার লাকী ও থানা অফিসার ইনচার্জ দেবাশীষ চৌধুরী। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ধারালো অস্ত্রশস্ত্র ও লাঠি সোটার আঘাতে ৮জন আহত হয়েছে। আহতরা হলেন, বাঙ্গড্ডা গ্রামের মরহুম বাবুল মিয়ার ছেলে সবুজ মিয়া (৩৮), একই গ্রামের হেদায়েত উল্লাহর ছেলে আবদুল মান্নান (৪০), মরহুম আবদুল কাদেরের ছেলে গিয়াস উদ্দিন (৩৫), মরহুম আবদুস সোবহানের ছেলে আকাশ মিয়া (২৫), হিরন মিয়ার ছেলে ফাহাদ (২৪), কাদবা গ্রামের মরহুম আবদুল হামিদের ছেলে মোহাম্মদ (৪০), একই গ্রামের মরহুম মোহাম্মদ আলীর ছেলে মোবারক হোসেন (৩৫), গান্দাছি গ্রামের পলাশ মিয়া (৪০)। আহতদের নাঙ্গলকোট ও লাকসাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে বাঙ্গড্ডা গ্রামের সবুজ মিয়া ও কাদবা গ্রামের মোহাম্মদের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাদের দু'জনকে কতব্যরত চিকিৎসক কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে।
এব্যাপারে কাদবা গরু বাজার জমির মালিক হুমায়ুন কবির বজলুর ০১৮৩৩৮৫৪৫৭৫ নাম্বারে একাধিক বার ফোন দিয়ে না পাওয়ায় ও বাজার ইজারাদার সবুজ মিয়া আশংকাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
বাঙ্গড্ডা ইউনিয়নের কাদবা ওয়ার্ড মেম্বার জামাল হোসেন বলেন, আমাদের পাশ্ববর্তী যুক্তিখোলা গরু বাজার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কাদবা গ্রামের ব্যবসায়ী হুমায়ুন কবির বজলুকে স্থানীয় গরু ব্যবসায়ীরা অনুরোধ করায় তিনি নিজের ৮৫ শতক জমি ৪০লাখ টাকা দিয়ে ভরাট করে গরু বাজার শুরু করে। বিগত ৫-৬ মাস যাবৎ তারা গরু বাজারটি চালিয়ে আসছে। শুক্রবার গরু বাজার চলাকালে বাঙ্গড্ডা গ্রামের সুবজ নিজেকে ওই বাজারের ইজারাদার দাবি করে গরু বিক্রির চাঁদা উঠাতে বাজারের জমির মালিককে নিষেধ করে। এনিয়ে উভয় পক্ষের মাঝে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে আমি বিষয়টি নির্বাহী, এসিল্যান্ড ও ওসি'কে জানাই। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এসিল্যান্ডকে পাঠালে তিনি বাঙ্গড্ডা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম, সাবেক চেয়ারম্যান শাহজাহান মজুমদার'সহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে উভয় পক্ষের মাঝে সমঝোতার চেষ্টা করে। এ সময় বাঙ্গড্ডা গ্রামের এক ব্যাক্তি তার গায়ে ধাক্কা দিয়েছে দাবি করে। এর জেরে উভয় পক্ষ এসিল্যান্ডের উপস্থিতিতে সংর্ঘষে জড়িয়ে পড়ে। পরে আমি এসিল্যান্ডকে সরিয়ে নিয়ে যাই। সংঘর্ষে আমাদের গ্রামের ৩জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে মোহাম্মদ নামে একজনের অবস্থা আশংকাজনক।
নাঙ্গলকোট থানা অফিসার ইনচার্জ দেবাশীষ চৌধুরী বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। এখন পরিস্থিতি শান্ত আছে। কোন পক্ষ লিখিত অভিযোগ করলে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুরাইয়া আক্তার লাকী বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বাজারটি স্থানীয়দের জন্য হুমকি স্বরূপ, যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাজারটি বন্ধ থাকবে।