ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ মেরামত করুন : জন দুর্ভোগ রোধ করুন

এফএনএস: : | প্রকাশ: ৯ জুন, ২০২৪, ০৬:৩৮ এএম

উপকূলীয় জেলা খুলনা দেশের অন্যতম জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা দুর্যোগকবলিত অঞ্চল। বর্ষা এলেই খুলনাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উপকূলজুড়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করে। আইলা, ফণী, বুলবুল, ইয়াস আম্পানের মতো প্রলয়ংকরী সব ঘূর্ণিঝড় মাসেই আঘাত করেছিল। সময় সুন্দরবন সংলগ্ন উপকূলীয় উপজেলা কয়রার বিভিন্ন বেড়িবাঁধে দেখা দেয় ধস। দুর্বল বেড়িবাঁধ উদ্বেগকে আরও ভয়াবহ করে তোলে। ঘূর্ণিঝড় আর জলোচ্ছ্বাস হলে যে কয়েকটি জনপদ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, খুলনার কয়রা তার মধ্যে অন্যতম। ফলে, ঘূর্ণিঝড়ের কথা শুনলেই খুলনার কয়রার মানুষ আঁতকে ওঠে। আইলার ১৫ বছর পার হলেও এখনো নির্মাণ হয়নি স্থায়ী বেড়িবাঁধ। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সূত্রে জানা যায়, কয়রা সদর ইউনিয়নের মদিনাবাদ লঞ্চঘাট থেকে গোবরা পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার, হরিণখোলা-ঘাটাখালী এলাকায় এক কিলোমিটার, নম্বর কয়রা ক্লোজার, স্লুইস গেট-সংলগ্ন ৫০০ মিটার, নম্বর কয়রা এলাকায় ৬০০ মিটার, নম্বর কয়রা এলাকায় ৫০০ মিটার, মহারাজপুর ইউনিয়নের মঠবাড়ী-দশহালিয়া এলাকায় দুই কিলোমিটার, উত্তর কাশির হাটখোলা থেকে কাটমারচর পর্যন্ত ৭০০ মিটার, পাথরখালি এলাকায় ৬০০ মিটার তেঁতুলতলার চর চৌকুনি এলাকায় তিন কিলোমিটারের মতো বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঝড়-বন্যায় বাঁধ ভেঙে অনেকের ঘরবাড়ি সব নদীতে চলে গেছে। এছ্ড়াাও বর্তমান বেড়িবাঁধ নিয়ে অনেকে আতঙ্কে আছেন। প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, শাকবাড়িয়া নদীর পানির চাপে কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশন-সংলগ্ন সুতি বাজার স্লুইস গেটের দুই পাশে বাঁধে ফাটল ধরেছে। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ড তা মেরামত করছে না। কয়রা সদর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, প্রতি বছরের মে মাস এলেই পাউবো কর্তৃপক্ষ বাঁধ মেরামতের তোড়জোড় শুরু করে। অথচ শীত মৌসুমে কাজ করলে অনেক সুবিধা হতো। তথ্য সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে কয়রার উত্তর বেদকাশী দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নে বাঁধ নির্মাণসহ প্রায় হাজার ২০০ কোটি টাকার মেগা প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। প্রকল্প শেষ হলে ৩১ কিলোমিটার বাঁধ ঝুঁকিমুক্ত হবে। তবে পাউবো কর্মকর্তাদের বক্তব্যের সঙ্গে বাস্তব পরিস্থিতির মিল পাওয়া যায়নি। টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে নেয়া প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়নের কাজ ধীরগতিতেই চলছে। মিলছে না কোনো সুফল। প্রতিবছরই বাঁধ ধসে পড়াই দুর্ভোগে পড়তে হয় উপকূলীয় বাসিন্দাদের। তাহলে প্রশ্ন থেকেই যায় যে, সরকার এত টাকা বরাদ্দ করেও কেনো মানুষ দুর্ভোগে পড়তে হয়? ওই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের থেকে জবাবদিহিতা করতে হবে সরকারকে। কয়রাবাসীর দুর্ভোগ নিরসনে সরকারকে নজরদারি বাড়াতে হবে। বরাদ্দকৃত অর্থ কাজে আসছে কিনা সে বিষয়ে সচেতন হতে হবে। ওই সমস্যা সমাধানে টিকসই পদক্ষেপ নিন, বিনিময়ে কয়রাবাসীর মাঝে স্বস্তি ফিরিয়ে আনুন।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW