বন্ধ হোক অবাধে বৃক্ষ নিধন

এফএনএস: : | প্রকাশ: ৯ জুন, ২০২৪, ০৬:৩৯ এএম

সারাদেশে অবাধে কাটা হচ্ছে গাছ। বছর বছর বাড়ছে তাপমাত্রা। তপ্ত বাতাসে নাভিশ্বাস মানুষের। এর জন্য গাছ কাটা জলাশয় কম থাকাকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। দেশে নির্বিচারে গাছ কাটার ফলে জলাভূমি সবুজবলয় ধ্বংস হচ্ছে। প্রাকৃতিক বৈচিত্রের বিলুপ্তির কারণে বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়ছে। কারণে তীব্র তাপদাহ চলছে। উন্নয়নের নামে গাছ কাটা বন্ধ করতে হবে। প্রাকৃতিক পরিবেশ বিনষ্ট এবং প্লাস্টিক-বর্জ্য উৎপাদনের কারণে আমাদের পরিবেশ জনস্বাস্থ্যকে হুমকির মুখে ফেলছে। ২৫ ভাগ বনভূমি থাকার কথা থাকলেও দেশে মাত্র ১৫ ভাগ বনভূমি আছে, যার অধিকাংশই নানাভাবে সংকটাপন্ন। অবস্থায় ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য স্থানে গাছ কাটা বন্ধ করে গাছ নিধনের সঙ্গে জড়িতদের জবাবদিহির আওতায় আনার ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন। পরিবেশ জীববৈচিত্র্যের ভারসাম্য রক্ষায় বৃক্ষের গুরুত্ব অপরিসীম। বৃক্ষ পরিবেশের অতিরিক্ত তাপমাত্রা শোষণ করে পরিবেশকে যেমন নির্মল রাখে তেমনি পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর গ্যাস কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্রহণ করে প্রাণীর বেঁচে থাকার মূল উপাদান অক্সিজেন নির্গমন করে। কিন্তু জনসংখ্যার চাপে দিনে দিনে প্রতিনিয়ত গাছ নিধন হচ্ছে। এর কারণে বাতাসে কার্বন ডাইঅক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে; আবহাওয়া ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। গাছ নিধনের কারণে বৃষ্টিও হচ্ছে না। বৃষ্টির অভাবে আমাদের নিত্যজীবন বিপর্যস্ত হচ্ছে। আর সেই সঙ্গে গাছ নিধনের ফলে পরিবেশ তার ভারসাম্য হারাচ্ছে, জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে; বাস্তুসংস্থান ভেঙে পড়ছে। গাছ, পশুপাখি, কীটপতঙ্গ অণুজীবের আশ্রয়স্থল হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নির্বিচারে বন নিধনের কারণে বিভিন্ন জাতের উদ্ভিদ পশুপাখি বিলুপ্তির পথে। অতি সাধারণ প্রাণী, যেমন- শিয়াল, বেজি, খরগোশ, কাঠবিড়ালি, বানর, হনুমান, চিল, শকুন, ডাহুক, বাবুই, চড়ুইসহ আরও অনেক পশুপাখি আগের মতো দেখা যায় না। গাছপালা এবং গাছের কারণেই আমরা এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে পেরেছি। বিকাশ হচ্ছে মানব সভ্যতার। গাছ শুধুমাত্র আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এমন নয়। গাছ অক্সিজেন ত্যাগ করে বলেই মানুষসহ অন্যান্য প্রাণী বেঁচে থাকে। গাছ আমাদের খাদ্য আশ্রয় দেয়। অনেক গাছে ফল ধরে যা পাখি অন্যান্য প্রাণী খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে। মানুষও বিভিন্ন ফল যেমন- আম, আপেল এবং কলাসহ বিভিন্ন ফলের স্বাদ গ্রহণ করে। গাছের পাতা বাকল ওষুধ তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। গাছ পশুপাখি মানুষকে আশ্রয় দেয়। বিশাল ঘনগাছ গাছ-পালা ভরা অরণ্য বন্যপ্রাণী পাখিদের আবাসস্থল হিসেবে কাজ করে এবং সমৃদ্ধ জীব-বৈচিত্র্যের দিকে অবদান রাখে। গাছ বনাঞ্চলকে বেড়ে ওঠার সুযোগ দিতে হবে। গাছকাটা বন্ধ হলে প্রকৃতিই নিজে নিজেকে সাজিয়ে নেবে। আর যদি আমরা নির্বিচারে গাছ কাটতে থাকি তাহলে প্রকৃতি একদিন আমাদের থেকে সেই বদলা নেবে। তাই 'পৃথিবীকে বাঁচাতে গাছকাটা বন্ধ করতে হবে' সরকারকে বৃক্ষ নিধনে জোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW