নাইজেরিয়ায় অন্তত ১০ কোটি মুসলমানের বসবাস। প্রতিবছর ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা পালিত হয় দেশটিতে। কিন্তু তীব্র অর্থনৈতিক সংকটে এবার পশু কোরবানি দিতে পারছে না নাইজেরিয়ার হাজারো মানুষ। রোববার (১৬ জুন) তাই অনেকটাই নিঃশব্দ ঈদ উদযাপন করছেন নাইজেরিয়ানরা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
দেশটিতে এবার উৎসবের চেয়ে সংকটই বড় হয়ে উঠেছে। ৭৮ বছর বয়সী মালান কাবিরু তুডুন বলেন, ১৯৭৬ সাল থেকে প্রতিবছরই ছাগল কোরবানি দিয়ে আসছি আমি, এবারই শুধু পারলাম না।
এবার জীবন যাত্রার ব্যয় সংকটের কারণে দেশটির বেভিরভাগ মানুষ পশু কোরবানি করছেন না। বা করতে পারছেন না। নাইজেরিয়ার উত্তরাঞ্চলের সবচেয়ে বড় শহরে কোনোমতে বিপুলসংখ্যক মুসলিম বসবাস করেন। এই শহরেরই বাসিন্দা ওয়াদা বলেন, এবারের মতো কঠিন পরিস্থিতি আর কখনোই ছিল না।
নাইজেরিয়া বর্তমানে সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে দেশটিতে অশান্তি ও ক্ষোভ বাড়ছে। মূল্যস্ফীতির কারণে দেশটিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম এখন গড়ে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে গেছে। মূল্যস্ফীতির এই হার গত কয়েক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। দেশটিতে খাবারের দামই বেড়েছে সবচেয়ে বেশি।
দেশটির নাগরিক ৫৪ বছর বয়সী শামসু মোহাম্মদ বলেন, কেউ যদি তাকে পশু কেনার অর্থ দেয়, তাহলে তা দিয়ে তিনি বরং সস্তা খাবার কিনে বাড়িতে মজুত করবেন।
তিনি বলেন, ইসলামে কোরবানি দেওয়া বাধ্যতামূলক নয়। এটা শুধু তাদের জন্যই যাদের সামর্থ্য আছে। যাদের সামর্থ্য নেই তাদের কোরবানি দেওয়ারও প্রয়োজন নাই।
ইব্রাহিম বলরাবে ওয়াম্বাই মেষ বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তিনি বলেছেন, গত বছর ১৫টি ভেড়া বিক্রি করেছি। কিন্তু এ বছর মাত্র সাতটি মেষ বিক্রি করতে পেরেছি।
দেশটিতে অনুষ্ঠিত ঈদের নামাজে তাই লাখ লাখ মুসল্লি আল্লাহর কাছে পরবর্তী বছরে যেন দেশ এবং নিজের অর্থনৈতিক সংকট না থাকে সেই প্রার্থনাই করেছেন।