ধূমপানের সহজলভ্যতায় অকালমৃত্যুতে লাখো মানুষ!

এফএনএস: : | প্রকাশ: ১৯ জুন, ২০২৪, ০৫:৫৭ পিএম

বর্তমানে তামাক দ্রব্যের সহজ লভ্যতার কারণে এর চাহিদা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। এর মধ্যে ধূমপান অন্যতম। সাধারণত ছোট বয়সের থেকে শুরু করে বৃদ্ধ অধিকাংশ মানুষকে এমন তামাকের সাথে যুক্ত হতে দেখা যায়। রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজার, আড্ডাসহ বিভিন্ন জায়গায় ধূমপানে মেতে উঠে তারা। ধূমপানের সহজলভ্যতার কারণে সবাই এতে আসক্ত হচ্ছেন কিন্তু  বাস্তবে এর প্রভাব অনেক ভয়াবহ। যার ফলে মৃত্যু পর্যন্ত হয়ে থাকে। যেসমস্ত বস্তুর ব্যবহার বাদ দিলে অকাল মৃত্যু ঝুঁকি হ্রাস করা যায় তামাক এর মধ্যে শীর্ষে। যত লোক তামাক ব্যবহার করে তার প্রায় অর্ধেক এর ক্ষতিকর প্রভাবে মৃত্যুবরণ করে। গ্লোবাল অ্যাডাল্ট টোব্যাকো সার্ভে (গ্যাটস)-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশে এখনও ৩৫ দশমিক ৩ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ (৩ কোটি ৭৮ লাখ) তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার করেন, ধূমপান না করেও প্রায় ৩ কোটি ৮৪ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ বিভিন্ন পাবলিক প্লেস, কর্মক্ষেত্র ও পাবলিক পরিবহনে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন। তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারের কারণে হৃদ্রোগ, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস, ক্যান্সার ও শ্বাসতন্ত্রের দীর্ঘমেয়াদি রোগ বৃদ্ধি পাঁচ্ছে। বর্তমানে দেশে মোট মৃত্যুর ৬৭ শতাংশই অসংক্রামক রোগের কারণে ঘটছে। আর এই অসংক্রামক রোগ সৃষ্টির অন্যতম কারণ ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার। এ কারণে বাংলাদেশে প্রতিবছর ১ লাখ ৬১ হাজারের অধিক মানুষ অকালে মৃত্যুবরণ করে। তামাক ব্যবহারের দিক থেকে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব মতে প্রতিবছর সারাবিশ্বে প্রায় ৬০ লাখ লোক তামাকের ক্ষতিকর প্রভাবে মারা যায়। ১২ লাখ মানুষ সরাসরি ধূমপান না করে শুধু ধূমপায়ীদের সংস্পর্শে থাকার কারণে প্রাণ হারাচ্ছেন। এরূপ প্রেক্ষিতে তামাকের ব্যবহার কমিয়ে আনতে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণের পাশাপাশি তামাকজাত দ্রব্যের ওপর কার্যকরভাবে করারোপের মাধ্যমে মূল্য বাড়িয়ে তামাকের ব্যবহার হ্রাসের উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিৎ। এতে করে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষিত হবে। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গঠনেও তা সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। বাংলাদেশ ধূমপানমুক্ত পরিবেশ এবং তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন ও প্রণোদনা নিষিদ্ধ করার ক্ষেত্রে এখনো সর্বোত্তম মান অর্জন করতে পারেনি। এফসিটিসি’র ৫.৩ অনুচ্ছেদ জনস্বাস্থ্য কর্মীদের জন্য দেশের আইনকে তামাক কোম্পানির আগ্রাসন থেকে বাঁচানোর ‘রক্ষাকবচ’। বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে বৈশ্বিক মানদণ্ডে উপনীত করতে দ্রুত এফসিটিসি’র আলোকে সংশোধন করা প্রয়োজন। এছাড়াও ধূমপায়ীর মতো তার পাশে থাকা অধূমপায়ীও সমান ক্ষতি ও ঝুঁকির মধ্যে থাকে এ বিষয়টি অনুধাবন করে ধূমপান রোধের জন্য সবার আগে আমাদের নিজেদের সচেতন ও অভ্যাস বদলাতে হবে।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW