সরকার দেশের উন্নয়নের স্বাথে বিপুল পরিমাণে অর্থ বরাদ্দ করে থাকেন প্রতিবছর। কিন্তু সেই বরাদ্দকৃত অর্থ কী সঠিক ভাবে মানুষের উন্নয়নে আসছে? তা নিয়ে আছে সংশয়। বাস্তবতায় দেখা যায় বরাদ্দ বিপুল পরিমাণের হলেও তা উন্নয়নের কাজে আসছে বিন্দু পরিমাণ। উন্নয়নের নামে এমন অনিয়মের অভিযোগ এখন অধিকাংশ জায়গায় দেখা মিলছে। ক্ষমতাশীন কিছু কিছু দালালেরা সরকারি অর্থ লুট করে নিচ্ছে। অথচ এই অর্থ জনগণের সেবার জন্য বরাদ্দ করা হয়। সম্প্রতি রাজধানী ঢাকায় উন্নয়নমূলক কাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। মূলত নির্মাণ কাজ সময় মতো না করায় বেশি তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। তথ্য সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ডিএনসিসির ৩১৯ কোটি টাকার ‘ট্র্যাফিক অবকাঠামো ও সড়ক নিরাপত্তার উন্নয়ন’ প্রকল্প অনুমোদন করে। এ প্রকল্পের অধীনে ৩৬টি নতুন পদচারী সেতু ও ৪৭টি পদচারী সেতু (ফুটওভারব্রিজ) সংস্কারের কথা বলা হয়। এ ছাড়া যাত্রীছাউনি, চলন্ত সিঁড়িসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছিল এ বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু চার বছর পেরোলেও নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করতে পারে নাই ডিএনসিসি। গত চার বছরে মাত্র তিনটি সেতুর কাজ সম্পূর্ণ করতে সক্ষম হয়েছেন ডিএনসিসি। যা রীতি মতো হতাশ করার মতো চিত্র। এর মধ্যে ১১টি সেতু নির্মাণের জন্য এখনো জায়গা হস্তান্তর করতে পারেনি সিটি করপোরেশন। এতে যে সব এলাকায় এসব পদচারী সেতু নির্মাণ হওয়ার কথা ছিল সেখানে মানুষ ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার করছে। উন্নয়নমূলক কাজ যদি এমন ধীরগতিতে চলতে থাকে তাহলে দেশের উন্নয়ন তো কেবল মাত্র মুখের কথায় থাকবে যে হচ্ছে কিন্তু বাস্তবে তা কখনোই সম্ভব হয়ে উঠবে না। রাজধানী ঢাকা বাংলাদেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি শহর। এই দিক বিবেচনায় যানজট নিরসনে এবং বিভিন্ন ভোগান্তি থেকে মুক্তির জন্য সরকার এমন বিপুল পরিমাণে বরাদ্দ করেছেন জনসাধারণের উন্নয়নের স্বার্থে। কিন্তু কী লাভ হলো এটাই প্রশ্ন থেকেই গেলো? যারা এমন উন্নয়নমূলক কাজ সময় মতো সম্পন্ন করতে পারছে না তাদের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে না কেনো? সরকারি বরাদ্দ কেনো ডিএনসিসির কোষাগারে থাকবে। তা তো থাকার কথা মানুষের উন্নয়নের কাজে। এখনি উপযুক্ত সময় ওই ধীরগতির কাজের ব্যাপারে সচেতন হওয়ার। ডিএনসিসির থেকে এর সঠিক জবাবদিহি নিতে হবে। পাশাপাশি জনগণের ভোগান্তি বিবেচনায় যতদ্রুত সম্ভব উন্নয়নমূলক বাকি কাজ গুলো সম্পন্ন করা হোক। জনগণের মাঝে স্বস্তি ফিরিয়ে আসুক এটাই আমাদের সরকারের কাছে প্রত্যাশা।