ফুলতলার খানজাহানপুর গ্রামে বুধবার রাত সাড়ে নয়টায় শেখ মুজিবুর রহমান (৫৮) নামে কৃষককে কুপিয়ে হত্যা করেছে তার ভাইপো শেখ কুতুবউদ্দিন (২৮)।
এ সময় তার স্ত্রী এবং পুত্রকেও কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। এলাকাবাসী তাদেরকে দ্রুত ফুলতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে মুজিবুর রহমানকে মৃত ঘোষনা এবং তার স্ত্রী তাসলিমা বেগম পুষ্প’ (৪৮) ও পুত্র হাফেজ মিরাজুল ইসলামের (২২) অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় খুলনামেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। তবে ঘটনার একদিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ হত্যাকারী কুতুবকে আটক করতে পারেনি।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, ফুলতলা ইউনিয়নের খানজাহানপুর গ্রামের কৃষক মুজিবুর রহমান এশার নামাজ আদায় করে বুধবার রাত আনুমানিক সাড়ে নয়টার দিকে বাড়ি ফিরছিলেন। আগে থেকেই ওঁৎ পেতে থাকা তার ভাই সাবেক পুলিশ সদস্য মৃত শরিফুল শেখের পুত্র কুতুব উদ্দিন ধারালো হাসুয়া দিয়ে উপর্যুপরি কোপাতে থাকে। মুজিবুর রহমানের ছোট ছেলে হাফেজ মিরাজুল ইসলাম (শীতেরঘাট মসজিদে ইমাম) নামাজ পড়িয়ে বাড়িতে ঢুকতে গিয়ে চাচাতো ভাই কুতুব কর্তৃক পিতাকে কোপাতে দেখে তিনি ঢেকাতে যান। এদিকে চিৎকার শুনে পুষ্পা এগিয়ে আসলে কুলাংগার কুতুব তাদেরকেও কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যায়। এলাকাবাসী তাদেরকে দ্রুত ফুলতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে মুজিবুর রহমানকে মৃত ঘোষনা করে।
তার স্ত্রী তাসলিমা বেগম পুষ্প ও পুত্র হাফেজ মিরাজুল ইসলামের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। তবে পুষ্প’র অবস্থা শংকটাপন্ন হওয়ায় ভোর রাতে তাকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল বিএনএস তিতুমীর এবং বৃহস্পতিবার সকালে সম্মিলিত সমারিক হাসপাতাল যশোরে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ মুজিবুর রহমানের লাশের সুরতহাল রিপোর্ট শেষে মর্গে প্রেরণ করে। ময়নাতদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার ি বকালে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করে। এশার নামাজের পরে খানজাহানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে জানাযা শেষে পারিবারিক গোরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়।
প্রতিবেশীরা জানায়, শেখ মুজিবুর রহমান অত্যান্ত ধার্মিক ও নিরহ প্রকৃতির এবং পেশায় ছিলেন একজন কৃষক। তার বড় ছেলে ইয়াছিন আরাফাত সেনাবাহিনীর সদস্য হিসেবে পার্বত্য এলাকায় কর্মরত, ছোট ছেলে হাফেজ মিরাজুল ইসলাম মসজিদে ইমামতি এবং একমাত্র কন্যা আয়েশা সিদ্দিকা পার্শ¦বর্তী রহমানিয়া এলেমেন্টারি স্কুলের ৩য় শ্রেণির ছাত্রী।
ঘাতক কুতুবউদ্দিন ছোট বেলা থেকেই ছিলো দূর্ধর্ষ প্রকৃতির। বিভিন্ন সময়ে টাকা পয়সার দাবিতে সে তার পিতাকেও লাঞ্চিত করেছে বলে এলাকাবাসীর অভিয়োগ। সদ্য সমপ্ত ফুলতলা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দিনে তার পিতা শেখ শরিফুল ইসলাম ষ্ট্রোক করে মারা যান। সম্প্রতি তাকে ১০ লাখ টাকা অথবা জমি বিক্রির ব্যবস্থা এমন দাবি তার চাচা মুজিবুর রহমানের কাছে করে আসছিলো। বৃহস্পতিবার রাতে একই পরিবারের ৩জনকে কুপিয়ে কুতুবউদ্দিন হাসুয়া ও রক্ত মাখা কাপড় কোথায় লুকিয়ে রেখে খালি গায়ে শীতেরঘাট জামে মসজিদের সামনে থেকে একই এলাকার আজিজুরের ইজিবাইকে চড়ে ফুলতলার দিকে আসে। পথিমধ্যে ত্বরতীপুর মসজিদের কাছে আkkসলে পানি খাওয়ার জন্য ইজি বাইক ছেড়ে নেমে পড়ে বলে ইজিবাইক চালক জানিয়েছেন।
গত একদিনেও ঘাতক কুতুবউদ্দিনকে গ্রেপ্তার এবং হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত হাসুয়া উদ্ধার হয়নি।এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মামলার প্রস্তুতি চলছিল। ওসি মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, হত্যাকান্ডে জড়িত কুতুবউদ্দিন গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তবে ঘটনার পর থেকেই গ্রেপ্তারের জন্য সম্ভাব্য সকল স্থানে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।