পঞ্চগড়ে সরকারি চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নৈশ্যপ্রহরীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এই মামলার আসামি পাল্টা ছিনতাই মামলা করেছেন তার বিরুদ্ধে করা মামলার দুই বাদীর বিরুদ্ধে। এতে আদালতে বিচার জট সৃষ্টি হয়ে প্রকৃত বিচার প্রার্থীরা বিচার পেতে দীর্ঘসময় দুর্ভোগ বা হয়রানির শিকার হয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার মিঠাপুকুর গ্রামের মো: কছির উদ্দীনের ছেলে মো: আজাহার আলীর বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আমলী আদালত-১ পঞ্চগড়ে মামলা দায়ের করেন চা বিক্রেতা মো: খলিলুর রহমান ও মো: রতন আলী। খলিলুর রহমান সদর উপজেলার পূর্ব জালাসী পাড়ার মৃত আবদুল মান্নানের ছেলে ও রতন আলী সদর উপজেলার মিঠাপুকুর গ্রামের মৃত খলিলুর রহমানের ছেলে। জানা গেছে, শহরের জালাসী মোড়ে মো: খলিলের চায়ের দোকানে আসার সুবাদে পরিচয় চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নৈশ্যপ্রহরী আজাহারের সাথে। কথার একপর্যায়ে আজহার জজকোর্টে খলিলকে চাকুরী দেওয়ার নাম করে ৬লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। এরপর চাকুরী দিতে ব্যর্থ হলে টাকা ফেরত দিতে গড়িমসি করার একপর্যায়ে আজহার ইসলামি ব্যাংকের ৪টি চেক স্বাক্ষর করে দেন। পরবর্তিতে খলিল চেকগুলো নিয়ে ব্যাংকে গেলে আজাহারের স্বাক্ষরের সাথে চেকের স্বাক্ষর মিলছে না এবং এই চেকের পাতাগুলো হারিয়ে গেছে মর্মে সদর থানায় করা একটি জিডির কপি ব্যাংকে দেওয়া হয়েছে বলে জানান ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। আজাহার আলী প্রতারণার উদ্দেশ্যেই চেকগুলোতে বাংলার পরিবর্তে ইংরেজিতে স্বাক্ষর করেছে বলে জানান ভুক্তভোগী খলিল। উপায় না পেয়ে বিজ্ঞ আমলী আদালত-১ পঞ্চগড়ে আজাহারের বিরুদ্ধে মামলা করেন খলিল। মামলা চলাকালীন বেশ কিছুদিন পর খলিল জানতে পারে তার বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের মামলা হয়েছে। নৈশ্যপ্রহরী আজাহারের করা এই মামলায় আসামি করা হয়েছে ৩জনকে। মামলার অপর দুই আসামি দ্বিমাতা ভাই ফারুক হোসেন ও রতন আলী। এরমধ্যে রতন আলী ২০২১ সালে আজাহারের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের মামলা করেছেন। মামলার বিষয়ে রতন আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা দুই ভাই টাকা দিয়েছি কারও কথা কেউকে বলতে দেয়নি। বিদেশী গরু বিক্রি করে আজাহারকে চাকুরীর জন্য টাকা দেন বলে জানান তিনি। রতন আলী আরও বলেন, নৈশ্যপ্রহরীর চাকুরী দেওয়ার কথা বলে আজাহার আলী আরও অনেকের কাছে টাকা নিয়েছে। চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চাকুরী করায় বিভিন্ন মামলা বা ঝামেলার হুমকি-ধমকি দেয় আজাহার আলী। চাকুরী নামের সোনার হরিণ ধরতে সহায় সম্বল বিক্রি করে, লোন করে দেওয়া টাকার শোক ও আজাহারের মিথ্যা মামলায় অসহায়ত্ব প্রকাশ করে ভুক্তভোগিরা বলেন, আমরা সহজ-সরল মানুষ। আমাদের টাকা দিয়ে সে তার উকিল শ্বশুরের মাধ্যমে ব্যবসা করতেছে। লোনের টাকা পরিশোধ ও আজাহারের মিথ্যা মামলায় আমরা দিশেহারা হয়ে পড়েছি। এ ব্যাপারে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নৈশ্যপ্রহরী অভিযুক্ত আজাহার আলী সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মিথ্যা মামলায় ফাসিয়ে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে একটি চক্র।