রংপুর সিটি করপোরেশনের ৬ নং ওয়ার্ডভূক্ত ঐতিহ্যবাহী বুড়িরহাট বাজারের প্রায় ৭০ জন ব্যবসায়িকে তাদের ব্যবসার স্থান অবৈধভাবে উচ্ছেদের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় কাউন্সিলর আবু হাসান চঞ্চলের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় জীবন জীবিকা হুমকির মুখে এসব ব্যবসায়ীদের। বৃহস্পতিবার দুপুরে বুড়িরহাটে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ী আবদুল খালেক এসব কথা বলেন। তিনি বিষয়টি দ্রুত সমাধানের জন্য সরকার প্রধান, সিটি করপোরেশনের প্রশাসক এবং আইনশৃঙখলা বাহিনীর জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বুড়িরহাট বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি হাফিজুর রহমান, ইজাদার প্রতিনিধিসহ স্থানীয় দেড়শতাধিক ব্যবসায়ী উপস্থিত ছিলেন। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বুড়িরহাট বাজারটি রংপুর সিটি করপোরেশন এলাকার একটি বড় গরু-ছাগলের হাট। এই হাটে প্রায় ১০০ বছর ধরে বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা নিয়মিতভাবে ইজারাদারকে টোল দিয়ে ব্যবসা করে আসছেন। গত ৩০ বছর আগে হাটে সরকারিভাবে কয়েকটি সেড নির্মানও করা হয়। রংপুর সিটি করপোরেশন হওয়ার পর বুড়িরহাটটি সিটির আওতাভূক্ত হয়। এরপর সিটি করপোরেশন এই হাটের মধ্যে কংক্রিটের রাস্তা ও পাকা ড্রেণ নির্মাণ করে। ব্যবসায়ীরা সিটি করপোরেশন থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে নিয়মিত টোল দেয়ার মাধ্যমে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। কন্তুু বিগত ২০২২ সালের সিটি নির্বাচনে ৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হিসেবে জনাব আবু হাসান চঞ্চল (অন্তর্বতিকালীন সরকারের সময়ে অপসারিত) নির্বাচিত হওয়ার পর হঠাৎ করে হাটের ২৫ শতাংশ জমি তার নিজের বলে দাবি করেন। সেখানে সরকারি পাকা সেড, ৫ টি সরকারি এলএসডি গোডাউন, ঢালাই রাস্তা ও পাকা ড্রেন আছে। এছাড়াও যেখানে ৭০ টিরও বেশি ছোট বড় দোকান করে ব্যবসায়ীরা তাদের জীবন-জীবিকা করছেন। শুধু দাবিই নয়, সাবেক কাউন্সিলর চঞ্চল হাটের ওই জমি থেকে আমাদের বেআইনিভাবে উচ্ছেদের চেস্টা করতে থাকেন। বিষয়টি জানতে সেই সময়কার সিটি মেয়র জনাব মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা হস্তক্ষেপ করলে চঞ্চল পিছু হটেন। শত বছরের একটি হাটের দখলে থাকা জমি কিভাবে একজন জনপ্রতিনিধি নিজের বলে দাবি করে সেটা আমাদের বোধগম্য নহে।
তিনি আরও বলেন, ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার অভ্যুন্থানের পর সাবেক কাউন্সিলর চঞ্চল বেপরোয়া হয়ে উঠেন। ব্যবসায়ীদের হাটের জায়গা থেকে উচ্ছেদ করার জন্য নানা ধরণের হুমকি ধামকি দিচ্ছেন। নানাভাবে আইন শৃঙখলা বাহিনীকে ভুল বুঝিয়ে আমাদের উচ্ছেদ করার জন্য চেস্টা করছেন। আমরা বিষয়টি সিটি করপোরেশনের বর্তমান প্রশাসক মহোদয়কে জানালে তিনি আমাদের বলেন, এ বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ নেয়া হবে এবং যথাযথ পরিমাপ করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। আমরা সে অনুযায়ী ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলাম কিন্তু সিটি করপোরেশনের প্রশাসক বিষয়টি নিয়ে সুরাহা না করার আগেই আবারও সাবেক কাউন্সিলর চঞ্চল আইনশৃঙখলাবাহিনীকে দিযে আমাদের উচ্ছেদের পায়ঁতারা করছেন। এতে আমরা উচ্ছেদ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি। আমাদের উচ্ছেদ করা হলে অন্তত ৭০ টি পরিবার পথে বসবে। পরিবার পরিজন নিয়ে আমাদের না খেয়ে থাকতে হবে। আমরা দাবি করছি, ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ যেন না করা হয়। সিটি করপোশন যেন বিষয়টি তড়িতগতিতে উদ্যোগ নিয়ে সমাধান করেন। ওই জমিতে যদি ব্যাক্তিমালিকানাধীন জমি থাকেও তাহলে যেন সেটি শত বছরের ঐতিহ্যবাহী বুড়ির হাটের স্বার্থে তা মাপজোক করে অধিগ্রহন করেন এবং আমাদের সকল ব্যবসায়ীকে সঠিকভাবে ব্যবসা পরিচালনার সুযোগ করে দেন। অন্যথায় আগামীতে ব্যবসায়ীরা বৃহত্তর আন্দোলনে যাবে বলে তিনি হুশিয়ারি দেন।