প্রস্রাব একটি স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া। এর মাধ্যমে শরীর থেকে ক্ষতিকর সব উপাদান বাইরে বেরিয়ে যায়। ফলে আমরা সুস্থ-সবল জীবন কাটাই। তবে আমাদের মধ্যে অনেকে আবার ক্ষণে ক্ষণে প্রস্রাবে যান। আর এই লক্ষণই কিছু অসুখের ইঙ্গিত দেয় বলে জানান বিশেষজ্ঞরা। চিকিৎসকদের মতে, সারা দিনে মোটামুটি ৩ লিটার প্রস্রাব স্বাভাবিক। তবে এর বেশি নয়। সহজ করে বললে প্রতি ঘণ্টায় একবারের বেশি ইউরিনে এবং রাতে একবারের বেশি প্রস্রাবে যেতে হলে সাবধান হতে হবে। কারণ, এর পিছনে অন্য কোনো রোগের ইঙ্গিতও থাকতে পারে। ঘন প্রস্রাবের পিছনে কী রোগ থাকতে পারে তা জানবেন এ প্রতিবেদনে। চলুন জেনে নেওয়া যাক।
ডায়াবেটিস
অত্যন্ত জটিল একটি অসুখ হলো ডায়াবেটিস।
এই রোগে আক্রান্ত হলে বারবার প্রস্রাব পেতে পারে। কারণ, এই রোগে ভুক্তভোগীদের রক্তে মাত্রাতিরিক্ত গ্লুকোজ থাকে। শরীর এই গ্লুকোজ মূত্রের মাধ্যমে বের করে দিতে চায়। যার ফলে বারবার প্রস্রাব পায়। তাই ক্ষণে ক্ষণে প্রস্রাব পেলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
ইউটিআইয়ের ভ্রƒকুটি
ইউরিনারি ট্র্যাক্টের ইনফেকশন বা ইউটিআই হলেও বারবার প্রস্রাব পেতে পারে। সেই সঙ্গে প্রস্রাব করার সময় জ্বালা-যন্ত্রণা হওয়াও সম্ভব। তার পাশাপাশি পেটে ব্যথা ও জ্বরের ফাঁদে পড়ার আশঙ্কাও বাড়ে। তাই এসব লক্ষণে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নিন। না হয় পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যেতে পারে। এমনকী কিডনিতেও পৌঁছে যেতে পারে সংক্রমণ। তাই তাড়াতাড়ি চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে খান ওষুধ।
প্রস্টেটের সমস্যা
বয়স একটু বাড়লে পুরুষের প্রস্টেট বড় হয়ে যেতে পারে। যে কারণে বারবার প্রস্রাব পাওয়া সম্ভব। কারণ, এই রোগে ভুক্তভোগীদের সমস্ত প্রস্রাব একবারে বের হতে চায় না। আবার অনেক ক্ষেত্রে প্রস্টেট বড় হয়ে গেলে প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যেতেও পারে। তাই এই ধরনের সমস্যা দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। তার পরামর্শ মতো করে ফেলুন টেস্ট। তার পর তিনি যেই ওষুধ দেবেন, তা খেয়ে যান।
স্পাইনাল কর্ড
বর্তমান সময়ে বেশির ভাগ মানুষই সারা দিন বসে কাজ করেন। আর এই ভুলটা করেন বলেই বাড়ছে বিপদ। সেক্ষেত্রে সুষুম্নাকাণ্ডে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। নার্ভগুলো ঠিকঠাক কাজ করতে পারছে না। সে কারণে অনেক সময়ই প্রস্রাব আটকে রাখা যাচ্ছে না। বারবার বেগ চাপছে। সেই সঙ্গে পিঠে, কোমরে ব্যথাও থাকতে পারে। তাই এই ধরনের সমস্যা দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
কিডনিতে পাথর
ঘন প্রস্রাবের ভয়ে আমরা অনেক সময় পানি খুব একটা পান করতে চাই না। কিন্তু কম পানি পান করলে অনেক সময় কিডনিতে পাথর হয়। সেই পাথর আবার মূত্রনালীতে চলে আসতে পারে। সেই সময় বারবার প্রস্রাব পায়। প্রস্রাব করার সময় খুব ব্যথা হতেও পারে। এমনকী প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত বেরোতেও পারে।