অসুস্থ প্রতিযোগিতা থেকে বেড়িয়ে আসতে হবে তরুণদের

এফএনএস: : | প্রকাশ: ৩ নভেম্বর, ২০২৪, ০৬:১৯ পিএম

তরুণরাই আগামী প্রজন্মের ভবিষ্যৎ। বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা যায়, একটি দেশ এবং সমাজের সার্বিক উন্নতির পেছনে সবচেয়ে বেশি অবদান থাকে তরুণদের। কিন্তু বর্তমানে আমাদের সেই তরুণরাই চাকচিক্যপূর্ণ ফিচারে ভরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কারণে মানসিকভাবে অসুস্থ। অযথা নষ্ট করছে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার মূল্যবান মাহেন্দ্রক্ষণ। পিছিয়ে পড়ছে তাদের জীবনের লক্ষ্য থেকে এবং বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ব থেকেও। সমীক্ষায় দেখা যায়, আমাদের দেশের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর মধ্যে ফেসবুকই সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় একটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। ফেসবুক ব্যবহারকারীদের বড় একটি অংশ বয়সে তরুণ। তরুণদের কাছে নিজেদের ভাবনা-চিন্তা তুলে ধরার জন্য এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম একটি সহজ প্ল্যাটফর্ম। তারা প্রধানত এটাকে পারস্পরিক যোগাযোগমাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করলেও এর বাইরে নেতিবাচক ব্যবহারও কম নয়। একটি বেসরকারি পর্যবেক্ষণ বলছে, যারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা ফেসবুক ব্যবহার করেন, বিশেষ করে তরুণরা, তাদের শতকরা ৭০-৮০ ভাগই ব্যক্তিগত তথ্য, ছবি বা অনুভূতি শেয়ার করেন। শেয়ার করে তারা তাদের ব্যক্তিত্বের প্রকাশ ঘটাতে চান, অবস্থার জানান দিতে চান। বর্তমান যুগে সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার আকাক্সক্ষা যেন একটি সাধারণ প্রবণতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানের এই ডিজিটাল যুগে সোশ্যাল মিডিয়া একটি শক্তিশালী প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে, যেখানে মানুষ তাদের চিন্তাধারা, সৃজনশীলতা এবং অভিজ্ঞতাকে সহজে শেয়ার করতে পারে। এমনকি ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক এবং অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে প্রতিদিন লাখ লাখ মানুষ নতুন কন্টেন্ট তৈরি করছেন। যার ফলে, ভাইরাল হওয়ার আকাক্সক্ষা মানুষের মধ্যে একটি সাধারণ প্রবণতা হয়ে উঠেছে। তরুণ প্রজন্মের কাছে এটি শুধুমাত্র বিনোদনের মাধ্যম নয়, বরং স্বীকৃতি ও জনপ্রিয়তার একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবেও কাজ করছে। ফলে, ভাইরাল হওয়ার জন্য তরুণদের মধ্যে এক ধরনের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে, যা অনেক সময় বিপজ্জনক ও অস্বাস্থ্যকর হয়ে উঠছে। আমাদের চারপাশে প্রতিনিয়ত এমন অনেক কন্টেন্ট চোখে পড়ছে, যা মুহূর্তেই লাখ লাখ মানুষ দেখছে, শেয়ার করছে এবং আলোচনাও করছে। বর্তমান সময় সামাজিক মাধ্যম আমাদের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। অনেকেই মনে করে, ভাইরাল মানেই সাফল্য। এই ধারণা তরুণদের মধ্যে একটি অপরিসীম চাপ সৃষ্টি করছে। সামাজিক মাধ্যমের এই অবাধ ব্যবহার বর্তমানে তরুণদের কুক্ষিগত করে রেখেছে তাদের বাস্তবিক চিন্তা ও নিজের ভবিষ্যৎ জীবন থেকে। অধিক পরিমাণে অযাচিত সময় নষ্ট করায় ঝরে পড়েছে নিজেদের লক্ষ্য থেকে। যা আগামী প্রজন্মকে ঠেলে দিচ্ছে এক অজ্ঞতার অন্ধকার যুগে। এই সামাজিক ব্যাধিকে রুখতে এবং তরুণের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য সবার আগে এগিয়ে আসতে হবে অভিভাবকদের।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW