দেশে খাদ্যশস্য ঘাটতির শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বর্তমান মজুত দিয়ে সরকার সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশ্লিষ্টরা সংশয়ে রয়েছেন। কারণ গত বছর এ সময়ে সরকারি গুদামে যে পরিমাণ খাদ্যশস্য মজুত ছিল, চলতি বছর একই সময়ে তার চেয়ে প্রায় ৪ লাখ টন চাল-গম কম মজুত রয়েছে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারাই মনে করছেন, বর্তমান মজুত দিয়ে সংকট মোকাবিলা দুরূহ হয়ে পড়বে। তারা বলছেন, স্থানীয় হোক কিংবা আন্তর্জাতিক উৎসই হোক, চাল-গম সংগ্রহ করে এখনই খাদ্যশস্যের মজুত বাড়ানো জরুরি। অন্যথায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিগুলো চালিয়ে নেওয়া কঠিন হবে। জানা গেছে, পরিস্থিতি উপলব্ধি করে সরকার গত শুক্রবার চালের আমদানির ওপর থেকে সব ধরনের শুল্ক প্রত্যাহার করেছে। সূত্র বলছে, বর্তমানে সরকারি গুদামে চাল ৯ লাখ টন এবং গম ৪ লাখ টন অর্থাৎ ১৩ লাখ টন মজুত রয়েছে। গেল বছর একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল প্রায় ১৭ লাখ টন। অবশ্য খাদ্য সচিব সংকট হবে না বলেই আশ্বস্ত করেছেন। জানিয়েছেন, সরকার ইতোমধ্যে আমদানির ওপর থেকে সব ধরনের শুল্ক সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার করেছে। বেসরকারিভাবে ২ লাখ টন চাল আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ৫০ হাজার করে পৃথক দুটি দরপত্রে এক লাখ টন গম আমদানির উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। ফলে দেশে গমেরও কোনো সংকট হবে না। সরকার সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখেই ক্রয় পরিকল্পনা করছে। সময়মতো প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হলে যে সংকট এড়ানো সম্ভব, তা বলাই বাহুল্য। সেক্ষেত্রে জরুরি ভিত্তিতে মজুত বাড়াতে হবে বলে মনে করি আমরা। কারণ মজুত না বাড়ালে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিগুলো চালানোও কঠিন হয়ে পড়বে। এমনিতেই বছরের এ সময়ে চালের কিছুটা সংকট থাকে; কিন্তু তা যেন ঘনীভূত হতে না পারে, সেদিকে দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজনে চাল আমদানির বিষয় তো আছেই, পরবর্তী বছরগুলোয় এমন পরিস্থিতি যাতে না হয়, সেজন্য আগাম চিন্তা-গবেষণাতেও মনোযোগ দিতে হবে। ভুলে গেলে চলবে না, খাদ্য একটি অতিমাত্রায় সংবেদনশীল বিষয়। খাদ্য সংকট সাধারণ মানুষকে বিক্ষুব্ধ করে তুলতে পারে। এ সত্য এবং বাস্তবতা অনুধাবন করে সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।