ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে অটোরিকশা চালকরূপী তিন ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করেছেন সরাইল থানা পুলিশ। ঘটনার ৫২-৫৩ ঘন্টার মধ্যে গত শুক্রবার বিকেলে উপজেলা সদরের নাথপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মো. সারূ মিয়া (২৫), মো. ফরহাদ (২০) ও মো. সবুজ (২০) নামের তিন ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে তিন কিশোর চালক। পরে তাদের কাছ থেকে ছিনতাইকৃত মালামালও উদ্বার করেছেন পুলিশ। ভুক্তভোগির এজহার, পুলিশ ও স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, নাসিরনগর উপজেলার গোকর্ণ গ্রামের মো. আমিন মিয়ার স্ত্রী মোছা: মাহমুদা বেগম (৩২) তার মাদ্রাসা পড়ুয়া ছেলেকে বাড়িতে যাওয়ার জন্য গত মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর সরাইলের বিশ্বরোড মোড়ে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অজ্ঞাতনামা এক অটোরিকশা চালক সরাইল যাওয়ার কথা বলে মাহমুদাকে উঠায়। কিন্তু সরাইলের দিকে না গিয়ে অন্যদিকে ঘুরেফিলে প্রায় ২ ঘন্টা অতিবাহিত করে। সন্দেহ হলে মাহমুদা চালককে বলে সরাইল যেতে তো এত সময় লাগার কথা না। তুমি কোন দিকে যাচ্ছ? চালক বলে এই রাস্তা দিয়ে দ্রƒত সরাইল যাওয়া যাবে। রাত প্রায় সাড়ে ৯টার দিকে ওই চালক সরাইল-নাসিরনগর সড়কের পাশে মনোয়ারা হাসপাতালের পেছনে বড্ডাপাড়া নামক স্থানের একটি পরিত্যাক্ত বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে ফোন করে আরো অজ্ঞাতনামা ৩ যুবককে জড়ো করে। তারা মাহমুদা বেগমকে ছুঁড়া ধরে ভয়ভীতি দেখিয়ে মারধর করে জিম্মি করে ফেলে। পরে মাহমুদার কাছ থেকে স্বর্ণ, রৌপ্য, এনরয়েড মুঠোফোন সেট, নগদ টাকাসহ প্রায় ৪৮ হাজার টাকার মালামাল ছিনিয়ে নেয়। পরে মাহমুদাকে গরূ বাজার সংলগ্ন সড়কে এনে ছেড়ে দেয়। রাতেই মাহমুদা অজ্ঞাতনামা ছিনতাইকারী যুবকদের বয়স ১৮-৩০ বছরের মধ্যে উল্লেখ করে সরাইল থানায় একটি এজহার দায়ের করেন। অভিযানে নামে সরাইল থানা পুলিশ। ঘটনার প্রায় ৬০ ঘন্টার পর প্রযুক্তি ও বিভিন্ন কৌশল অবলম্বর করে ওই ছিনতাইকারীদের চিহ্নিত পূর্বক অবস্থান নিশ্চিত করেন। গত শুক্রবার অভিযানে নামেন এসআই মুনাফ ও মো. ফারূক হোসেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ। অভিযান কালে নাথপাড়া থেকে প্রয়াত মনু মিয়ার ছেলে মো. সারূ মিয়া প্রকাশ সারোয়ার, একই পাড়ার হাবিব মিয়ার ছেলে মো. ফরহাদ ও আরিফাইল এলাকার প্রয়াত রফিক মিয়ার ছেলে মো. সবুজ প্রকাশ বাবু মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বলেন, অজ্ঞাত আসামীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করেছি। তারা ঘটনার সাথে সম্পৃক্তার কথা স্বীকার করেছে। তাদের কাছ থেকে ছিনতাইকৃত মালামালও উদ্ধার করেছি। ভুক্তভোগি মহিলার এজহারের ভিত্তিতে তাদের বিরূদ্ধে মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। গত শনিবার তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।