ক্ষোভ প্রকাশ করে নূর হোসেনের পরিবারের সদস্যরা বললেন, নূর হোসেন গণতন্ত্রের জন্য জীবন উৎসর্গ করলেও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তাকে ব্যবহার করা হচ্ছে। রোববার (১০ নভেম্বর) নূর হোসেন চত্বরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো শেষে তারা এ অভিযোগ করেন।
দিবসটি উপলক্ষে আজ রোববার ভোরে নূর হোসেন চত্বরে ফুল দিয়ে তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান পরিবারের সদস্যরা। তারা অভিযোগ করে বলেন, দিবসটির আগে পরিবারের পক্ষ থেকে পোস্টার লাগানো হলেও ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে।
তারা বলেন, নূর হোসেন গণতন্ত্রের জন্য জীবন উৎসর্গ করলেও সংকীর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তাকে ব্যবহার করা হচ্ছে।
নূর হোসেনের ভাই মনোয়ার হোসেন বলেন, শহীদ নূর হোসেন তো ট্যাগ লাগানো কোনো প্রতিষ্ঠান না। নূর হোসেন হলেন সবার জন্য। গণতন্ত্রের জন্য সে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছে।
তার বোন শাহানা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, ‘সবাই ভুলে গেলেও আমরা পরিবার তো তাকে ভুলতে পারবো না।’
১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর স্বৈরশাসক এরশাদের পতনের দাবিতে ঢাকা অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। বুকে পিঠে ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’ লিখিয়ে মিছিলে অংশ নেন যুবক নূর হোসেন। মিছিলটি রাজধানীর গুলিস্তানের ঢাকা জিপিওর সামনে এলে স্বৈরশাসকের মদদপুষ্ট পুলিশবাহিনীর গুলিতে নূর হোসেনসহ তিনজন আন্দোলনকারী শহীদ হন। এর পর থেকে প্রতিবছর দিনটিকে নূর হোসেন দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
এদিন শ্রদ্ধা জানাতে আসেন বিভিন্ন দলের নেতা-কর্মীরা। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত না হওয়ায় আক্ষেপ জানিয়ে তারা বলেন, নূর হোসেন আত্মদান করলেও এখনো বাস্তবায়ন হয়নি তার স্বপ্ন, নিশ্চিত হয়নি জনগণের মৌলিক অধিকার। স্বৈরাচারের পতন হলেও স্বৈরতন্ত্র বারবার ফিরে আসছে।
রাজনীতিকরা বলছেন, একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলেই নূর হোসেনের আত্মদান স্বার্থক হবে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘বার বার রক্ত দিয়ে আমরা স্বৈরাচার শাসকদের উচ্ছেদ করি। কিন্তু স্বৈরাচার ব্যবস্থা বার বার ফিরে আসে।’