সারাদেশে সাড়ম্বরে ৭ম জাতীয় ভোটার দিবস পালন করা হলেও এর ব্যতিক্রম ঘটেছে নওগাঁর মহাদেবপুরে। এদিন এ জাতীয় দিবসটি পালনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোন গুরুত্বই দেননি। বরং সরকারি অনুষ্ঠান সারা হয়েছে দায়সারা গোছে। অনুষ্ঠানে অফিসের লোকজন ছাড়া বাইরের তেমন কেউ উপস্থিত ছিলেন না। বাইরের কাউকে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য দাওয়াতই করা হয়নি। দর্শক উপস্থিত না থাকলেও আলোচনা সভা চালিয়ে যাওয়া হয়েছে। যারা বক্তা তারাই শ্রোতার ভূমিকা পালন করেন। কিন্তু এনিয়ে কর্তৃপক্ষের কোন মাথা ব্যাথা নেই। তারা বলছেন ভোটার না থাকলেও অসুবিধা নেই। একটি সরকারি জাতীয় দিবস পালনে এমন অব্যবস্থাপনার বিষয়ে স্থানীয় জনমনে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। তারা দায়সারা অনুষ্ঠান আয়োজন করে সরকারের ভাবমুক্তি ক্ষুন্ন করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন। গত কয়েকটি নির্বাচন ভোটারবিহীনভাবে আয়োজন করার পর এখন সে অবস্থা থেকে জনতা মুক্তি পেয়েছে বলে মনে করে আগামী নির্বাচন ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হবে বলে আশা পোষণ করছেন। কিন্তু এই রকম সময়ে ভোটার দিবসের জাতীয় অনুষ্ঠান আয়োজনে এমন অনীহা প্রদর্শনে স্থানীয়রা দারুণ আশাহত হয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, মহাদেবপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আল মামুন ২০২৩ সালে মহাদেবপুরে যোগদান করে কারচুপির নির্বাচন পরিচালনা করেন। সংশ্লিষ্টরা সেসময় একের পর এক লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও তিনি একটিরও নিরশন করেননি। চিহ্নিত ভোট কারচুপির বিষয়েও তিনি কোনই ব্যবস্থা নেননি। সেসময় তিনি নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করা কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের যাতায়াত ভাতা বিতরণে অনিয়মের আশ্রয় নেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া গতমাসে ভোটার তালিকা হালনাগাদকরণে সুপারভাইজার ও তথ্য সংগ্রহকারি নিয়োগে তার এক কর্তৃত্বে বিতর্কীতদের নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ ওঠে। এনিয়ে তখন বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। আগামী নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে তিনি একের পর এক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও স্থানীয়রা অভিযোগ করেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, “তোমার আমার বাংলাদেশে ভোট দিব মিলেমিশে” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে রোববার (২ মার্চ) সকালে উপজেলা নির্বাচন অফিসারের কার্যালয়ের উদ্যোগে ৭ম জাতীয় ভোটার দিবস পালন উপলক্ষে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: আরিফুজ্জামান এতে সভাপতিত্ব করেন। উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা ইব্রাহিম খানের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন সহকারি কমিশনার (ভূমি) রিফাত আরা, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আল মামুন, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: খুরশীদুল ইসলাম, সাংবাদিক লিয়াকত আলী বাবলু, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র প্রতিনিধি আমিনুল ইসলাম, ভোটার তালিকা হালনাগাদ করণে নিয়োজিত সুপারভাইজার আব্দুল মোমিন, নতুন ভোটার রেদোয়ানুল ইসলাম ও মাহফুজা আক্তার প্রমুখ।
বিষয়টি জানতে দুপুরে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে গেলে নির্বাচন কর্মকর্তা আল মামুন এনিয়ে বিরুপ মন্তব্য পেশ করেন। তিনি বলেন, অনুষ্ঠানে ভোটারদের উপস্থিত থাকার দরকার নাই। অনুষ্ঠান হলেই হলো। জানতে চাইলে মোবাইলফোনে নওগাঁ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুল মোত্তালিব জানান, নতুন ভোটাররা উপস্থিত থাকলে ভালো হতো। বিষয়টি তিনি দেখবেন বলেও জানান।