নীলফামারীতে ব্রিজের অভাবে হাজারো মানুষের চলাচলে দুর্ভোগ

এফএনএস (ওবায়দুল ইসলাম; সৈয়দপুর, নীলফামারী) : | প্রকাশ: ৪ মার্চ, ২০২৫, ০৩:৪৭ পিএম
নীলফামারীতে ব্রিজের অভাবে হাজারো মানুষের চলাচলে দুর্ভোগ

নীলফামারীর ডিমলায় হাজারো মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। ব্রিজের অভাবে দশ গ্রামের মানুষ আজ দিশেহারা। বিভিন্ন সময়ে এলাকার জনপ্রতিনিধিরা ব্রিজ নির্মাণের শত প্রতিশ্রুতি দিলেও কাজের কাজ হয় না কোন। নিরুপায় হয়ে এলাকার লোকজন নিজেই তৈরি করে কাঠের সাঁকো। দীর্ঘদিন ওই সাঁকোর ওপর দিয়ে চলাচল করছে লোকজন। কিন্তু প্রতি বছর ঠিক করতে হয় সাঁকোটি। নয়তো চলাচলে অনুপযোগি হয়ে পড়ে। 

তিস্তা নদীর বাঁধের রাস্তার এ কাঠের সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন পারাপার হয় হাজার হাজার মানুষ। ডিমলা উপজেলা শহর, হাট বাজার,স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা যাওয়ার একমাত্র পথ এটি। স্থানীয়রা নিজ উদ্যোগে বাঁশ ও কাঠের সাঁকো তৈরি করেন। 

সাঁকোটি ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের ঝারসিংহেশ্বর ও খগারচর গ্রামের তিস্তা নদীর বাঁধের রাস্তা। প্রায় ১০ গ্রামের ২০ হাজার মানুষের যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা এটি। সাঁকো দিয়ে পারাপারে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। 

শিক্ষার্থীরা এ পথে স্কুল,কলেজ,মাদ্রাসায় নিয়মিত যাতায়াতে নানা ভোগান্তির শিকার হন। কৃষকদের উৎপাদিত ফসল বাজারে নিতে হয় এ পথে। ব্রিজ না থাকায় তারা সময় মত বাজারে ফসল নিতে পারে না। ফলে লোকসান গুনতে হয় তাদের।  বিভিন্ন সময় জনপ্রতিনিধিরা ব্রিজ নির্মাণের আশ্বাস দেয়। কিন্তু তা বাস্তবায়ন হয় না। এ ব্রিজটি হলে এলাকার হাজারো মানুষের দুভোগ লাঘব হবে এমন মন্তব্য সুধীজনের।

স্থানীয় ব্যক্তি রতন মিয়া জানান,প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে ১০ গ্রামের হাজার হাজার লোক চলাচল করে। সড়কে কাঠের সাঁকোটি মানুষের গলার কাঁটা হয়ে রয়েছে। সাঁকোটি দিয়ে পারাপার করতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। বর্ষার সময় সাঁকোটি পানির স্রোতে ভেসে যায়,তখন কলাগাছের ভেলায় নদী পারাপার হতে হয়। অপর ব্যক্তি রফিকুল ইসলাম বলেন,কাঠের সাঁকোটি আমাদের ভোগান্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্ষা মৌসুমে শিশুদের ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সাঁকো দিয়ে স্কুলে পাঠাতে ভয় হয়। ভারী যানবাহন চলতে না পারায় বাজারে ফসলও নিতে পারি না। কেউ অসুস্থ্য হয়ে গেলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কোন বিকল্প ব্যবস্থা নেই। জরুরি কাঠের সাঁকোর স্থানে একটি ব্রিজের খুবই প্রয়োজন।

ওই এলাকার পঞ্চম শ্রেণী পড়ুয়া শিক্ষার্থী ইমন ও সাব্বির হোসেন বলেন,বর্ষাকালে আমাদের বিদ্যালয় যেতে অনেক সমস্যা হয়। আমরা অনেক ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো পাড় হয়ে বিদ্যালয়ে যাই। সড়কের ওই কাঠের সাঁকোয় একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানান উভয়ে।

পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান বলেন, এ এলাকার স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী,দরিদ্র কৃষক ও হাজারো পথচারীর যাতায়াতের সুবিধার্থে এখানে একটি ব্রীজ নির্মাণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অনুরোধ করেও কোন লাভ হয়নি।

ডিমলা উপজেলা প্রকৌশলী সফিউল ইসলাম  বলেন,প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নির্মাণ করা হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেল মিয়া বলেন, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে আলোচনা করে ব্রিজ নির্মাণের ব্যাপারে খুব শিগগির উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে