ব্ল্যাকমেইলের শিকার হয়ে সোনা পাচার করতেন অভিনেত্রী

এফএনএস বিনোদন | প্রকাশ: ৮ মার্চ, ২০২৫, ০৮:০৫ পিএম
ব্ল্যাকমেইলের শিকার হয়ে সোনা পাচার করতেন অভিনেত্রী

ভারতের কন্নড় চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেত্রী রান্যা রাও সম্প্রতি দুবাই থেকে স্বর্ণ পাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন। ডিরেক্টরেট অব রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স (ডিআরআই) অভিযোগ করেছে, তিনি স্বর্ণ সম্বলিত পোশাক পরে এবং পোশাকের মধ্যে স্বর্ণের বার লুকিয়ে পাচারের চেষ্টা করছিলেন। তবে গ্রেপ্তারের পর রান্যা রাও দাবি করেছেন, তাকে ব্ল্যাকমেইল করে সোনা পাচার করতে বাধ্য করা হয়েছিল। 

রান্যা রাও গত ৪ মার্চ দুবাই থেকে বেঙ্গালুরু ফেরার সময় বেঙ্গালুরুর কেম্পেগৌড়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ডিআরআই কর্মকর্তাদের হাতে গ্রেপ্তার হন। অভিযোগ রয়েছে, তিনি ১৫ দিনের মধ্যে চারবার দুবাই ভ্রমণ করেছেন, যা কর্তৃপক্ষের সন্দেহের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বিমানবন্দরে তল্লাশি চালিয়ে তার জ্যাকেটের ভেতর থেকে ১৪.২ কেজি বিদেশি স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়, যার মূল্য প্রায় ১২.৫৬ কোটি রুপি। এ ছাড়া তার বাসভবনে অভিযান চালিয়ে নগদ ২.৬৭ কোটি রুপি এবং ২.০৬ কোটি রুপি মূল্যের সোনা বাজেয়াপ্ত করা হয়। মোট বাজেয়াপ্ত সম্পত্তির মূল্য ১৭.২৯ কোটি রুপি। 

গ্রেপ্তারের পর রান্যা রাও দাবি করেন, তাকে ব্ল্যাকমেইল করে সোনা পাচার করতে বাধ্য করা হয়েছিল। তবে এই ব্ল্যাকমেইলের পেছনে কারা জড়িত, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তদন্তকারী সংস্থাগুলো এই দাবির সত্যতা যাচাই করছে। 

এই ঘটনায় এক পুলিশ কনস্টেবলকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, তিনি রান্যা রাওকে বিমানবন্দর থেকে নিরাপদে বের হয়ে যেতে সাহায্য করছিলেন। তার ভূমিকা নিয়েও তদন্ত চলছে। 

বেঙ্গালুরুতে অর্থনৈতিক অপরাধের জন্য বিশেষ আদালত রান্যা রাওকে ১০ মার্চ বিকেল ৪টা পর্যন্ত ডিআরআই-এর হেফাজতে রাখার আদেশ দিয়েছে। আদালত তাকে তদন্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে সহযোগিতা করতে এবং প্রতিদিন আধা ঘণ্টার জন্য তার আইনজীবীর সঙ্গে সাক্ষাতের অনুমতি দিয়েছে। এ ছাড়া আদালত ডিআরআই-কে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা অনুসরণ করে তাকে প্রয়োজনীয় মৌলিক সুবিধা প্রদান করতে বলেছে। 

রান্যা রাওয়ের সোনা পাচার মামলার তদন্তের দায়িত্ব নিয়েছে সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই)। সংস্থাটির একটি দল ইতিমধ্যে বেঙ্গালুরুতে পৌঁছেছে। তারা একটি বৃহত্তর সিন্ডিকেটের সঙ্গে রান্যার জড়িত থাকার অভিযোগ তদন্ত করবে। সিবিআইয়ের তদন্তে এই মামলার আরও গভীরে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 

রান্যা রাও ২০১৪ সালে কন্নড় চলচ্চিত্র ‘মানিক্য’-তে সুপারস্টার সুদীপের বিপরীতে অভিনয় করে রাতারাতি খ্যাতি অর্জন করেন। এরপর তিনি আরও কয়েকটি দক্ষিণ ভারতীয় চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। তার এই অভিনয় জীবনে সোনা পাচারের মামলা একটি বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা দিয়েছে। 

এই ঘটনায় সামাজিক মাধ্যম এবং সংবাদমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা চলছে। অনেকেই রান্যা রাওয়ের দাবি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন, আবার কেউ কেউ তার পক্ষেও কথা বলছেন। এই মামলার তদন্ত যত এগোবে, ততই নতুন তথ্য উঠে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

রান্যা রাওয়ের এই ঘটনা চলচ্চিত্র জগত এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। তদন্তের ফলাফলই নির্ধারণ করবে, তিনি আসলে ব্ল্যাকমেইলের শিকার নাকি স্বেচ্ছায় এই অপরাধে জড়িত ছিলেন। 

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে