ঈদে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় তৈরি হচ্ছে ১২০টি কোচ। কারখানায়।বর্তমানে প্রতিটি শপে তীব্র জনবল সংকটেও চলছে কাজ। আগত ঈদুল ফিতর উপলক্ষে যাত্রীদের বিশেষ সেবা দিতে ১শ’ ২০টি রেলকোচ মেরামত করা হচ্ছে। এসব কোচ দু’টি স্পেশাল ট্রেনসহ আন্তনগর ট্রেনগুলোর বহরে অতিরিক্ত কোচ হিসাবে জুড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৃটিশ আমলে ১৮৭০ সালে প্রতিষ্ঠিত সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় ২ হাজার ৮শ’ ৫৯টি শ্রমিক-কর্মচারীর পদ থাকলেও বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন মাত্র ৭শ’ ৭ জন। নতুন নিয়োগ না থাকায় কারখানাটিতে লোকবল সংকট তীব্র আকার ধারণ করলেও মাত্র ২০ শতাংশ জনবল নিয়ে খুঁড়িয়ে-খুঁড়িয়ে চলছে রেলওয়ে কারখানাটি।
আসন্ন ঈদ উপলক্ষে অধিক সংখ্যক যাত্রী পরিবহন সেবা দিতে দেশের বৃহত্তম সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় মেরামত কাজ দেখতে সংবাদকর্মীরা গেলে দেখা যায়, শ্রমিক-কর্মচারীরা কর্মব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। ক্যারেজ শপে (উপ-কারখানা) লক্ষ্য করা যায়, জরাজীর্ণ কোচগুলো থেকে সেঁটে ফেলা হচ্ছিল মরিচা ধরা ইস্পাত অংশ। সে সাথে কোচে নতুন আসন স্থাপন ও আভ্যন্তরীণ অঙ্গ-সজ্জার কাজ চলছিলো। ঈদকে সামনে রেখে কেবল ক্যারেজ শপ নয়, পেইন্ট শপ, বগি শপ, হেভি রিপিয়ারিং শপ, মেশিন শপসহ ২৮টি উপ-কারখানা কর্মমুখর এখন।
ক্যারেজ শপের ইনচার্জ (ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী) মমিনুল ইসলাম বলেন, আমরা খুব ব্যস্ত। এখন ১০ জনের কাজ করছেন মাত্র দুইজন শ্রমিক। এ অবস্থায় আমরা যাত্রী সেবা স্বাভাবিক রাখতে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ১শ’ ২০টি কোচ মেরামতে কাজ করছি। এরমধ্যে রয়েছে ৯০টি ব্রডগেজ ও ৩০টি মিটারগেজ কোচ। এরমধ্যে ৬৮টি কোচ রেলওয়ে পরিবহন বিভাগের কাছে এরইমধ্যে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি কোচগুলো আগামী ২০ মার্চের মধ্যে সংশ্লিষ্ট বিভাগে হস্তান্তর করা হবে।
সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) মোস্তফা জাকির হাসান বলেন, জনবল সংকট থাকার পরও ঈদুল ফিতরের যাত্রী সেবা দেওয়া আমাদের কাছে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। এবার ঈদে রাজধানী থেকে যাত্রীরা যাতে নির্বিঘ্নে স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে পারে সেজন্য প্রতিটি ট্রেনে অতিরিক্ত কোচ সংযোজনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
পদ্মা সেতু চালুর পর পশ্চিমাঞ্চল রেলপথ সম্প্রসারিত হয়েছে। এদিকে ঢাকা-খুলনা, ঢাকা-পার্বতীপুর রুটে ঈদে দুইজোড়া ট্রেনের চালুরও উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এ কারণে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় ১শ’ ২০টি কোচ মেরামতের পাশাপাশি আরও ৬০টি কোচ মেরামত করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। নিয়মিত কাজের অংশ হিসেবে এসব কাজ করা হচ্ছে বলেও তিনি জানান।