সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা অবশেষে দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তার মর্যাদা ও দশম গ্রেডের বেতন পাচ্ছেন। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ এই সংক্রান্ত রায় ঘোষণা করেছে। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন চার বিচারকের আপিল বেঞ্চ এই রায় দেন।
২০১৪ সালের ৯ মার্চ তৎকালীন সরকার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণির মর্যাদা দেওয়ার ঘোষণা দেয়। ওই দিনই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। তবে পরবর্তী সময়ে মন্ত্রণালয় প্রশিক্ষিত প্রধান শিক্ষকদের জন্য ১১তম এবং অপ্রশিক্ষিত প্রধান শিক্ষকদের জন্য ১২তম গ্রেড নির্ধারণ করে দেয়, যা প্রধান শিক্ষকরা ন্যায়সংগত মনে করেননি।
এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে আসছিল। একপর্যায়ে ২০১৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেডের বেতনসহ গেজেটেড মর্যাদা দেওয়ার নির্দেশ দেয়। ওই রায়ে ২০১৪ সালের ৯ মার্চ থেকেই এই আদেশ কার্যকর করার কথা বলা হয়।
হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে সরকার আপিল করলে দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়ার পর ২০২২ সালের ৬ জানুয়ারি আপিল বিভাগ আপিল খারিজ করে দিয়ে প্রধান শিক্ষকদের পক্ষে রায় দেয়। কিন্তু সেই রায় কার্যকর করতে সরকারের গড়িমসি দেখা গেলে শিক্ষকরা আদালত অবমাননার মামলা করেন। অবশেষে ১৩ মার্চ আপিল বিভাগ সরকারের রিভিউ আবেদন খারিজ করে প্রধান শিক্ষকদের পক্ষে চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করেন।
এই রায়ের ফলে দেশের প্রায় ৩০ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তার মর্যাদা ও জাতীয় বেতন কাঠামোর দশম গ্রেডে বেতন পাবেন।
আইনজীবী সালাউদ্দিন দোলন বলেন, “দ্বিতীয় শ্রেণির অন্যান্য কর্মকর্তা যেখানে দশম গ্রেডের বেতন পান, সেখানে প্রধান শিক্ষকদের ১১ ও ১২তম গ্রেডে রাখা ছিল সম্পূর্ণ অবিচার। আদালতের এই রায় শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের আন্দোলনের সফলতা।”
বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমিতির সভাপতি রিয়াজ পারভেজ বলেন, “এই রায়ে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। সরকারের এখন উচিত দ্রুত এই রায় কার্যকর করা।”