সুদীপ-পৃথার সংসার ভাঙল—বয়সের ব্যবধান, না কি অন্য কারণ?

এফএনএস বিনোদন | প্রকাশ: ৬ এপ্রিল, ২০২৫, ০৫:৫৮ পিএম
সুদীপ-পৃথার সংসার ভাঙল—বয়সের ব্যবধান, না কি অন্য কারণ?

টলিউডে ফের ভাঙনের সুর। অভিনেতা সুদীপ মুখোপাধ্যায় ও অভিনেত্রী পৃথা চক্রবর্তীর দীর্ঘ প্রায় এক দশকের দাম্পত্য জীবনের ইতি ঘটেছে। শনিবার (৫ এপ্রিল) পৃথা নিজেই সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট দিয়ে এই খবর জানান। তিনি লেখেন, “আমরা আর একসঙ্গে নেই। আমি ও সুদীপ মুখোপাধ্যায় আইনি বিচ্ছেদের পথে হাঁটলাম। তবে আমরা আজীবন বন্ধু হয়ে থাকব।”

এই ঘোষণার পরই আলোচনার কেন্দ্রে চলে আসে এই তারকা দম্পতির সম্পর্ক, যা শুরু থেকেই ছিল বেশ আলোচিত। কারণ, তাদের মধ্যে বয়সের ব্যবধান ছিল প্রায় ২৫ বছর। একদিকে সুদীপ তখন একজন পরিণত বয়সের জনপ্রিয় অভিনেতা, অন্যদিকে পৃথা ছিলেন তরুণী, যিনি তখন কেবলই তার ক্যারিয়ার শুরু করেছেন।

সুদীপ ও পৃথার পরিচয় ঘটে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে। তখনই নাচে দক্ষ পৃথাকে দেখে মুগ্ধ হন সুদীপ। শোনা যায়, প্রথম প্রস্তাবটি এসেছিল পৃথার দিক থেকেই। বয়সের এতটা ব্যবধান সত্ত্বেও দুজনের ভালোবাসা বাধা পেরিয়ে এগিয়ে যায়। যদিও শুরুতে এই সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি পৃথার বাবা-মা। কারণ, এটি ছিল পৃথার প্রথম বিয়ে, আর সুদীপের দ্বিতীয়।

এর আগে অভিনেত্রী দামিনি বসুর সঙ্গে ঘর বেঁধেছিলেন সুদীপ। সেই সংসারে রয়েছে তার এক কন্যাসন্তান। ২০১৩ সালে সেই সম্পর্কের ইতি টানার পর ২০১৫ সালে পৃথাকে বিয়ে করেন তিনি। নতুন সংসারেও একটি সন্তান জন্ম নেয়। দুই সন্তানকে নিয়ে বেশ শান্তিপূর্ণ ভাবেই চলছিল তাদের দাম্পত্য জীবন—তাই হঠাৎ এই ভাঙনের খবরে অনেকেই অবাক হয়েছেন।

বিচ্ছেদের প্রকৃত কারণ যদিও কেউই খোলাসা করে বলেননি, তবে সম্পর্কের ভাঙন যে একদিনে হয়নি, তা স্পষ্ট। সুদীপ মুখার্জিকে একটি সংবাদমাধ্যম থেকে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, “আমি এখন শুটিংয়ে ব্যস্ত। পৃথা কী করেছে, আমি জানি না। এ নিয়ে এখন কিছু বলতেও চাই না।”

তবে নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি কিছু ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট দিয়েছেন, যেখানে ‘ডিটাচমেন্ট’ এবং ‘হতে দাও’ জাতীয় বাক্য দেখা গেছে। বিষয়টি নিয়ে জিজ্ঞেস করা হলে সুদীপ বলেন, “সমস্যা তো সবার জীবনেই থাকে। আমার জীবনেও আছে। কিন্তু সব কিছু নিয়ে কথা বলা মানায় না।”

অন্যদিকে, যদিও তারা এখন বিচ্ছিন্ন, তথাপি দুই সন্তানকে নিয়ে এখনো তারা একই ছাদের নিচে রয়েছেন বলেও জানান এই অভিনেতা।

বয়সের ব্যবধান নিয়ে শুরু থেকেই নানা প্রশ্ন উঠেছে। অনেকেই মন্তব্য করেছেন, পৃথা নাকি সুদীপের আর্থিক অবস্থার কারণেই সম্পর্ক গড়েছেন। এই প্রসঙ্গে পৃথা আগেই বলেছিলেন, “আমি কোনো তরুণ পুরুষের মধ্যে আমার মনের মানুষকে পাইনি। আর সুদীপের টাকা থাকলেও, আমি তাকে কখনোই টাকার জন্য ভালোবাসিনি।”

তবু ভালোবাসার সেই সম্পর্কের ইতি হয়ে গেল ১০ বছরের আগেই।

এই তারকা জুটির বিচ্ছেদে হতাশ হয়েছেন অনেক অনুরাগী। তবে সম্পর্কের ইতি টানলেও তারা প্রকাশ্যে একে অপরকে সম্মান ও বন্ধুত্বের বার্তা দিয়েছেন, যা এই বিচ্ছেদকে কিছুটা হলেও শান্তভাবে গ্রহণ করার সুযোগ দিয়েছে তাদের ভক্তদের কাছে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে