খুলনার পাইকগাছায় হরিঢালীতে সরকারি বদ্ধ জলমহলের ইজারাকৃত জমির হারি না দিতে ইজারা গ্রহিতার পক্ষের পরিচালকদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের ঘটনায় শনিবার কপিলমুনি প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ দিন সকাল ১১ টায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে হরিঢালীর আল আমিন গাজী তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, উপজেলার চিনামলা, গোয়ালবাথান মৌজার ১নং খাস খতিয়ানের হরিঢালী ইউনিয়নের হরিদাশকাটি (বদ্ধ) জলমহল যার দাগ নং ১৫৩, ২০৬, ১২৭০, ৬০, ১৪৯৯ দাগের ০৮.৯২ একর জমির ইজারা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর তা সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী দীর্ঘ দিন ধরে পাইকগাছার কপিলমুনিস্থ নগর শ্রীরামপুর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লি: এর পক্ষে রবীন্দ্র নাথ বিশ্বাস গ্রহণ করেন। যার ধারাবহিকতায় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসের পক্ষে সর্বশেষ গত বছর ২৯ ফেব্রুয়ারী উপজেলা জলমহল ব্যবস্থাপনা কমিটির রাজস্ব সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক রবীন্দ্র নাথ একই বছর ৪ এপ্রিল যথাক্রমে ০৬, ৫২৩ ও ৫৩ নং চালানের মাধ্যমে ১৪৩১ সালের ইজারা মূল্য, ভ্যাট ও আয়কর বাবদ রাজস্ব প্রদান করেন। এর পরি প্রেক্ষিতে উপজেলা সহকারী কমিশনারের ৯ এপ্রিল ৩১ নং-স্মারকের নির্দেশনা মোতাবেক ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো: কামাল হোসনে ১৪ এপ্রিল তাকে জলমহলের দখল বুঝে দেন। এরপর সমিতির পক্ষে রবীন্দ্র নাথ জলমহলটি সুষ্ঠু পরিচালনার স্বার্থে গত বছর ৩০ নভেম্বর বাংলা ১৪৩১- ১৪৩৩ সাল পর্যস্ত ৩ বছর মেয়াদে মোট জলমহলের ৬ আনা হরিঢালী ইউনিয়নের শেখ শহর আলীর ছেলে শেখ বিল্লাল হোসেন, শেখ ইকবাল হোসেন, নগর শ্রীরামপুরের মুকাম আলী গাজীর ছেলে আবু বক্কার গাজী, নোয়াকাটির মৃত অবেদ আলী গাজীর ছেলে আ: রউফ গাজী ও শরিফুল সরদারের ছেলে এস,এম মিনারুল ইসলামকে সাবলিজ হিসেবে ইজারা দেয়। এরপর হরিদাশকাটি গ্রামের শেখ মতিউর রহমানসহ অন্যান্যরা তাদের কাছ থেকে মৌখিক চুক্তিতে ইজারা নিয়ে ঐ জমিতে ধান চাষ করে। তবে তারা চুক্তি মোতাবেক কোন ধান বা ইজারার টাকা না দিয়ে নানা টালবাহানা করে আসছিলেন। এক পর্যায়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মধ্যস্থতায় সিদ্ধান্ত মোতাবেক মোতিয়ার তার অংশের ৭ শ’আটি এক ভ্যান ধান দিতে সম্মত হওযায় ঘটনার দিন ১১ এপ্রিল শেখ মতিয়ার রহমান শান্তিপূর্ণ ভাবে এক ভ্যান ৫ শ’ আটি ধান তাদেরকে ঘটনাস্থল থেকে বুঝে দেয়। পরবর্তীতে তারা বিষয়টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে মতিউর দিং পাইকগাছা থানায় মিথ্যা অভিযোগ ও স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন তথ্য সরবরাহ করে। সামাজিক ও রাজনৈতিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে তারা এ অপকর্ম অব্যাহত রেখেছে বলে লিখিত বক্তব্যে দাবি করা হয়েছে। অভিযোগ পত্রে বলা হয়, শেখ মতিউর রহমান ও তার স্ত্রী হাসিয়ারা বেগমকে মারপিট করে একই গ্রামের মৃত ঈমান সরদারের ছেলে মো. খাইরুল সরদার, হরিঢালীর আলামিন গাজী ও পরেশ দত্ত (৩০) কে জড়িয়ে ২৫ মণ ধান কেড়ে নেওয়ার মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত মিথ্যাচার করেছেন। মতিয়ার রহমানের উদ্ধৃতি দিয়ে উল্লেখ করা হয়েছে যে, তারা ৯৯ বছরের সরকারি বন্দোস্ত নিয়ে ২০০১ সাল থেকে দীর্ঘ ২৪ বছর ধরে হরিদাসকাটি বিলের তিন বিঘা জমিতে তারা ভোগ দখলে রয়েছেন। প্রকৃত পক্ষে গত ২০০৯ সালের ২০ মে উপজেলা কৃষি খাস জমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্ত কমিটির সভায় ভূমিহীন বাছাই সংক্রান্ত সংশোধনীতে কপিলমুনি ইউনিয়ন ভূমি অফিস ২০০৯ সালে ২২ এপ্রিল ১৬০ নং স্মারকে বাতিল প্রস্তাব, নামপত্তন কেসের আদেশ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ও অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) দপ্তরের মিস কেস/আপীল কেস সমূহের বাতিল প্রস্তাব/ আদেশ মোতাবেক হরিদাশকাটি জলমহলটি পার্শ্ববর্তী নোয়াকাটি, হরিদাসকাটি, হরিঢালী ও উলুডাঙ্গা গ্রামের পানি সরবরাহের একমাত্র পথ হিসেবে উল্লেখ করে কপিলমুনি তহশীলের ৭টি বন্দোবস্ত কেস বাতিল করেন। যার মধ্যে হরিদাসকাটির মো: মুনছুর শেখ এর ছেলে মতিয়ার রহমান শেখ ও তার স্ত্রী হাসিয়া বেগমের নামীয় বন্দোবস্ত কেস নং জেলা-৬৯১/০০-০১, ভূমি-৫১৪/০০-০১, তহশীল-৬১/০০-০১। হরিদাসকাটি মৌজার ১ নং খাস খতিয়ানের ২০৬/১৪০৩-০.৪০, ৯১৪-০.৬০ মোট ১ একর জমি অন্যতম। মূলত এর পর থেকে নগর শ্রীরামপুর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির লি: এর পক্ষে মৃত গোলক বিহারী বিশ্বাসের ছেলে রবীন্দ্র নাথ বিশ্বাস জলমহলটির বৈধ ইজারা গ্রহণপূর্বক দখল বুজে নিয়ে মাছসহ ধান চাষাবাদ করে আসছেন। সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, মূল ইজারা গ্রহিতা রবীন্দ্র নাথ বিশ্বাস, সাবলিজ গ্রহিতা শেখ বিল্লাল, শেখ ইকবাল, আবু বক্কার, মিনারুলসহ আ: রউফসহ পরেশ ও খাইরুল সরদার।