ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে প্রশাসনের যৌথ অভিযানে অবৈধ পশুর হাট উচ্ছেদ করা হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুরে উপজেলা সদর থেকে ২ কিলোমিটার দূরে সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই আঞ্চলিক সড়কের উপর কালীকচ্ছ বাজারের পশুর হাটে এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে। নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোশারফ হোসাইন ও সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. রফিকুল হাসানের নেতৃত্বে সরাইল থানা, হাইওয়ে থানা ও সেনা সদস্যরা অভিযান পরিচালনা করে প্রায় কয়েক সহস্রাধিক পশু ক্রেতা বিক্রেতাকে সেখান থেকে সরিয়ে দিয়েছেন।
ইউএনও’র দফতর ও স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই আঞ্চলিক মহাসড়কের সরাইল সদরের বড়দেওয়ান পাড়া বড্ডাপাড়া এলাকায় সরাইলের সবচেয়ে বড় ও পুরাতন স্থায়ী বৈধ পশুর হাট। বড় অংকের ইজারা মূল্য প্রতিবছরই এই হাটটি ইজারা দিচ্ছেন সরকার। গত ৫-৬ বছর ধরে বৈধ এই হাটের মাত্র ২ কিলোমিটার দূরে একই সড়কের কালীকচ্ছ বাজারে সড়কের উপর অবৈধ পশুর হাট বসছে। শুরূ থেকেই উপজেলা প্রশাসন ওই হাটটি উচ্ছেদে কাজ করে আসছেন। কিন্তু প্রতিবছরই কোন না কোন ভাবে হাটটি বসছেই। বিশেষ করে সরাইল বাজারটি মূলত সপ্তাহের শুক্র ও সোমবারে জমে থাকে। কোরবাণীর ঈদের ৫-৬ দিন আগ থেকে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত অবৈধ পন্থায় কালীকচ্ছ বাজারে পশুর হাট চলমান থাকে। বিশেষ করে ওই দুই বারে সকাল ৮টা থেকেই অবৈধ পশুর হাটটি জমজমাট ভাবে জমতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল সোমবার সকাল ৮টা থেকেই অবৈধ ওই বাজারটি জমতে শুরূ করে। বেলা বাড়ার সাথে সেই বাজারে বিক্রেতা ও ক্রেতার সংখ্যা দ্রূত গতিতে বাড়তে থাকে। ওদিকে একই দিন সকাল বেলায় উপজেলার বিশেষ আইনশৃঙ্খলা সভায় অবৈধ পশুর হাট নিয়ে আলোচনা হয়। সকাল ১১টার দিকে কালীকচ্ছ ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মো. মনিরূজ্জামান মানিক উনার ফেরিফাইড ফেসবুক আইডি থেকে বাজারটির লাইভ দিয়ে তিনি নিজে ক্রেতাদেরকে ওই বাজার যাওয়ার আহবান জানানোর বিষয়টি আলোচনায় স্থান পায়। পরে এই সভা থেকেই ইউএনও, ওসি পুলিশ ও সেনা সদস্যদের নিয়ে কালীকচ্ছ অবৈধ পশুর হাট উচ্ছেদে নামেন। প্রায় ঘন্টাব্যাপি অভিযানে ওই বাজারের প্রায় সহস্রাধিক ক্রেতা বিক্রেতাকে উচ্ছেদ করেন প্রশাসন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ক্রেতা জানান, বাজারে বাঁশ বসানোর খরচের কথা কতিপয় ব্যক্তি একশত টাকা করে উত্তোলন করেন। বিএনপি নেতা মনিরূজ্জামান মানিক লাইভে অবৈধ ওই পশুর হাটে লোকজনকে ডাকার কথা স্বীকার করে বলেন, মহাসড়কে পশুর হাট অবৈধ। লোকজন তাদের সুবিধার্থে জমে। আমরা এই হাট থেকে কোন টাকা পয়সা নেয় না। সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোশারফ হোসাইন বলেন, মনগড়া মত মহাসড়কের উপর প্রতিদিন অবৈধ উপায়ে একটি পশুর হাট বসিয়ে দিবেন। তা আমরা মেনে নেব না। আরো ২ দিন ওই বাজার থেকে পশুর বিক্রেতাদের উচ্ছেদ করেছি। গতকালও করলাম। এই ধরণে অনিয়ম কোন ভাবেই সহ্য করা হবে না।