পুঠিয়ায় এক গৃহবধূ আত্মহত্যা নিয়ে ধূম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে লাশ দাফন সম্পন্ন হয়। আর রাতে পাঁচ ভাই বিচারের দাবিতে থানায় হাজির হয়ে মামলা কারার দাবি তুলেছেন। অবশ্য থানা পুলিশ মামলা গ্রহন করেনি। তারা বাধ্য হয়ে আগামী সোমবার আদালতের মাধ্যমে মামলা করার প্রস্তুতি নিয়েছেন। জানা গেছে, বৃহস্পতিবার ভোররাতে উপজেলার কান্দ্রা আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকায় মায়ের বাড়ির বাথরুমের বাঁশের সঙ্গে রশি পেঁচিয়ে সে আত্মহত্যা করেছে। নিহত হাবিবা বেগম কান্দ্রা গ্রামের মৃত খলিলুর রহমান মাষ্টারের ছোট মেয়ে। এক বছর আগে দুর্গাপুর উপজেলার দোমাদি গ্রামের জয়নাল প্ররামানিকের ছেলে ইব্রাহিম ওরফে হাসিবুর সঙ্গে বিবাহ হয়। সে একজন মাদ্রাসার শিক্ষক। তাদের একটি ১ বছর বয়সী কন্যা সন্তান রয়েছে। হাবিবার পরিবারের সদস্যরা বলছেন,স্বামী শ্বশুর শাশুড়ি ও দেবর মিলে তাকে নির্যাতন করত। বাধ্য হয়ে সে ২ জুন বাবার বাড়িতে চলে আসেন। নিহতের মা রুমিনা বেগম বলেন,মেয়ের শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন ছিল। যা লাশ ধোয়ানোর সময় আমরা খেয়াল করি। তখন আমার মানসিক অবস্থা ভালো ছিল না। স্থানীয় ইউনিয়ন মেম্বরসহ কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা যেভাবে সই করতে বলেছে, আমি সেভাবেই করেছি। এখন আমি আমার মেয়ের মৃত্যুর সঠিক বিচার চাই। নিহতের ভাই মামুন বলেন,আমরা অশিক্ষিত মানুষ, আইন-কানুন তেমন বুঝি না। মেম্বারসহ কয়েকজন এলাকার নেতারা আমাদের ভয় দেখিয়ে বলে,যদি জামাই উল্টো মামলা করে তাহলে তোমরা ফেঁসে যাবে। পোস্টমর্টেম করে কোনো লাভ নেই। তাই দ্রুত সই দিয়ে লাশ দাফনের ব্যবস্থা করা হয়। নিহতের পরিবার পাঁচ ভাই দাবি, পরিবারের সকল সদস্যের সম্মতি না নিয়ে থানা পুলিশ লাশ দাফনের অনুমতি দিলেন কেন। বিকেলে লাশ দাফন সম্পন্ন করা হয়। আর রাতেই ছয় ভাই একসঙ্গে উপস্থিত হয়ে থানায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মামলা করতে চাইলে পুঠিয়া থানা পুলিশ তাদের মামলা গ্রহন করেননি। আমারা ৯ ভাই ২ বোন। সবাই বিভিন্ন জায়গায় আলাদা আলাদা বসবাস করি। তাই আসতে দেরি হয়েছে। আমাদের অজান্তে লাশ দাফনের অনুমতি দিয়েছে থানা। এরপর থানায় গিয়ে বিচার চাইতে গেলে,অভিযোগ নেয়নি। আমরা আদালতের দ্বারস্থ হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে আগামী সোমবার মামলা করব। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিহতের ভাই বলেন, থানা পুলিশ মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে লাশ পোস্টমর্টেম ছাড়াই দাফন করার অনুমতি সম্পন্ন করেছেন।
এ ব্যাপারে পুঠিয়া থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কবির হোসেন বলেন, আমি ছুটিতে ছিলাম। এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। ওসি তদন্ত সবকিছু বলতে পারবে।