সাবেক সিইসি নুরুল হুদা পুলিশের হেফাজতে

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশ: ২২ জুন, ২০২৫, ০৮:১৫ পিএম
সাবেক সিইসি নুরুল হুদা পুলিশের হেফাজতে
সাবেক সিইসি নুরুল হুদা

সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ কে এম নুরুল হুদাকে নির্বাচন ব্যবস্থার ‘প্রহসনমূলক আচরণ’-এর অভিযোগে রোববার (২২ জুন) রাতে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। এর আগে সন্ধ্যার দিকে রাজধানীর উত্তরায় স্থানীয় জনতা তাকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান।

নুরুল হুদার বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। দলটির পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল শেরেবাংলা নগর থানায় এ আবেদন জমা দেয়। অভিযোগে বলা হয়েছে, বিগত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন—২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে দায়িত্ব পালনকারী সিইসি ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ভোট কারচুপি ও অনিয়মের মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলে সহায়তা করেছেন।

মোট ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে মামলার আবেদন করা হয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন:

১. ২০১৪ সালের নির্বাচন:

তৎকালীন সিইসি কাজী রকিব উদ্দিন আহমেদ

কমিশনার আবদুল মোবারক, আবু হানিফ, জাবেদ আলী, শাহ নেওয়াজ

তৎকালীন নির্বাচন সচিব ও ইসি দপ্তরের অন্যান্য কর্মকর্তা

২. ২০১৮ সালের নির্বাচন:

সিইসি এ কে এম নুরুল হুদা

কমিশনার রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম, শাহাদাত হোসেন চৌধুরী

তৎকালীন আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারী, ডিএমপি কমিশনার বেনজীর আহমেদ,

পুলিশ, এসবি, এনএসআই ও ডিজিএফআই’র সাবেক প্রধানরা

৩. ২০২৪ সালের নির্বাচন:

সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল

কমিশনার আহসান হাবীব খান, আলমগীর হোসেন, আনিছুর রহমান

তৎকালীন নির্বাচন সচিব

এছাড়া অভিযোগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকারসহ একাধিক সাবেক প্রশাসনিক কর্মকর্তার নামও রয়েছে।

একই দিন বর্তমান সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দীনের কাছে আরেকটি আবেদন জমা দেয় বিএনপি। সেখানে ২০১৮ সালের নির্বাচনে দলের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার, হামলা, হত্যা ও নির্যাতনের অভিযোগ তোলা হয়। অভিযোগে নির্বাচন কমিশনের নীরবতা ও ব্যর্থতার কথা উল্লেখ করে তৎকালীন কমিশনের বিরুদ্ধে নির্বাচনী বিধিমালার আওতায় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করা হয়।

বিএনপি অভিযোগ করেছে, ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অধিকাংশ ভোট আগের রাতেই সম্পন্ন হয়ে যায়। ওই নির্বাচন ‘নিশিরাতের ভোট’ নামে সমালোচিত হয়। এ নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন সিইসি নুরুল হুদা এবং তার চার কমিশনার। বিরোধী দল মাত্র সাতটি আসনে জয় পায়।

ওসি হাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, নুরুল হুদার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে এবং তাকে গ্রেফতার করে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে কী ধরনের মামলা ও কী ধারায় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে