জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সংস্কার নিয়ে সরকারের সঙ্গে দ্বন্দ্ব তীব্রতর হচ্ছে। অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনার আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ। একই সঙ্গে তারা শুক্রবার (২৮ জুন) সারাদেশে লাগাতার ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ও ‘মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
এনবিআরের প্রধান কার্যালয় আগারগাঁওয়ে বুধবার (২৫ জুন) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়। কর্মকর্তারা বলেন, আলোচনার নামে ‘আই-ওয়াশ’ বন্ধ করতে হবে এবং সরকারের রাজস্ব ব্যবস্থা সংস্কারের শুরুটা করতে হবে বর্তমান এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণের মধ্য দিয়ে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়—
১. অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) বিকেল ৫টা-এ বিসিএস (কর) ও সিসিএস (কাস্টমস ও এক্সাইজ) ক্যাডারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার আহ্বান জানান।
২. ঐক্য পরিষদ জানায়, ২০ মে অনুষ্ঠিত আগের আলোচনায় ১৩ জন প্রতিনিধি অংশ নিলেও, তাদের মাত্র দুইজনকে ১০ মিনিট সময় দেওয়া হয়।
৩. এরপর উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেছিলেন, আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে—যা ঐক্য পরিষদের অভিজ্ঞতার সঙ্গে সম্পূর্ণ বিপরীত।
৪. এবার সরাসরি কোনো আমন্ত্রণ না জানিয়ে মিডিয়ার মাধ্যমে আলোচনা আহ্বানের খবর ছড়ানো হয়।
৫. ফলে ঐক্য পরিষদ একে 'আই-ওয়াশ' আখ্যা দিয়ে এই আলোচনায় অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
সংবাদ সম্মেলনে ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে যে কর্মসূচিগুলো ঘোষণা করা হয়েছে তা হলো:
১. বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত:
• ঢাকায়: রাজস্ব ভবনে অবস্থান কর্মসূচি ও কলম-বিরতি
• ঢাকার বাইরে: নিজ নিজ দপ্তরে অবস্থান ও কলম-বিরতি
• ব্যতিক্রম: আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা ও রপ্তানি কার্যক্রম
২. শুক্রবার (২৮ জুন):
• চেয়ারম্যান অপসারণ না হলে আয়কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব দপ্তরে লাগাতার 'কমপ্লিট শাটডাউন'
• আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা এর আওতার বাইরে থাকবে
• ‘মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচি পালন— ঢাকার বাইরে থেকে কর্মকর্তাদের আগেভাগেই ঢাকায় আসার জন্য টিকিট কাটার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
ঐক্য পরিষদ বলছে, সরকারের বাস্তবায়নকারী ৪৪ আমলার তালিকায় থাকা এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ না হলে তারা কোনো আলোচনাতেই যাবে না।
তারা আরও হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, এনবিআরের ভেতরে থেকে কেউ যদি ঐক্য পরিষদের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের কারণে প্রতিহিংসামূলক বদলি বা শাস্তির মুখোমুখি হন, তবে বিভাগজুড়ে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এক বিবৃতিতে বলেছেন, ২৬ জুন বিকেল ৫টায় আলোচনা হবে এবং তিনি সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নিজ নিজ দপ্তরে থেকে আর্থিক বছরের শেষ পর্যায়ের রাজস্ব আহরণ কার্যক্রমে মনোনিবেশ করার অনুরোধ করেছেন।