আবারও ডাইনোসরের রাজত্ব

এফএনএস বিনোদন | প্রকাশ: ৭ জুলাই, ২০২৫, ০৪:২৫ পিএম
আবারও ডাইনোসরের রাজত্ব

হলিউডের ইতিহাসে অন্যতম সফল ও চর্চিত ফ্র্যাঞ্চাইজি ‘জুরাসিক পার্ক’-এর যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৯৩ সালে, স্টিভেন স্পিলবার্গের হাত ধরে। সেই যাত্রার তিন দশক পরও ডাইনোসরের রোমাঞ্চ যেন একফোঁটাও কমেনি দর্শকমনে। এরই প্রমাণ ‘জুরাসিক ওয়ার্ল্ড রিবার্থ’। ইউনিভার্সেল পিকচার্স প্রযোজিত এই নতুন কিস্তি মুক্তির পরই বিশ্বব্যাপী বক্স অফিসে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

গ্যারেথ এডওয়ার্ডস পরিচালিত ‘জুরাসিক ওয়ার্ল্ড রিবার্থ’ মুক্তি পেয়েছে বিশ্বের ৮২টি দেশে। সিএনএন জানিয়েছে, সিনেমাটি মুক্তির প্রথম পাঁচ দিনেই বিশ্বব্যাপী আয় করেছে ৩১৮ দশমিক ৩ মিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে উত্তর আমেরিকার বাজারেই আয় হয়েছে ১৪৭ দশমিক ৩ মিলিয়ন ডলার।

বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য চীনের বাজার, যেখানে ছবিটি আয় করেছে ৪১ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার। ছবিটি সেখানে ৬৫ হাজার পর্দায় প্রদর্শিত হয়েছে, যার মধ্যে ৭৬০টি ছিল আইম্যাক্স স্ক্রিন। চীনে এটি চলতি বছরের সবচেয়ে বড় ‘মোশন পিকচার অ্যাসোসিয়েশন’ মুক্তির রেকর্ডও গড়েছে। এছাড়া যুক্তরাজ্য ও আয়ারল্যান্ডে মিলে আয় করেছে ১৬ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলার, মেক্সিকোতে ১৩ দশমিক ৯ মিলিয়ন এবং জার্মানিতে ৭ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলার।

এই সিনেমা মূলত একটি গোপন মিশনের গল্পকে ঘিরে, যেখানে ডাইনোসরের ডিএনএ থেকে হৃদরোগের চিকিৎসার জন্য ওষুধ তৈরির চেষ্টা দেখা যায়। এ গল্পের মধ্যেই মিশেছে অ্যাডভেঞ্চার, থ্রিলার এবং ভিজ্যুয়াল ইফেক্টের নৈপুণ্য। ছবিতে অভিনয় করেছেন হলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী স্কারলেট জোহানসন, মাহেরশালা আলী এবং জোনাথন বেইলি। সঙ্গে চিত্রনাট্য লিখেছেন মূল ‘জুরাসিক পার্ক’-এর লেখক ডেভিড কোয়েপ।

ইউনিভার্সালের ঘরোয়া পরিবেশনা প্রধান জিম ওর বলেছেন, ‘এটা সত্যিই দারুণ সাফল্য। গ্রীষ্মের মৌসুমে দর্শক ঠিক এমন কিছুই চায়—বড় ক্যানভাস, উত্তেজনা আর অসাধারণ নির্মাণ।’

তবে সমালোচকরা সিনেমাটিকে মিশ্রভাবে গ্রহণ করেছেন। রটেন টমেটোজে ছবির স্কোর ৫১ শতাংশ, আর প্রথম সপ্তাহের দর্শকদের কাছ থেকে সিনেমাস্কোর পেয়েছে ‘বি’ গ্রেড। তবু স্টুডিওর দাবি, আট থেকে আশি—সব বয়সের দর্শকই সিনেমাটি উপভোগ করছেন।

অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক বক্স অফিসে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে অ্যাপলের প্রযোজনায় নির্মিত ‘এফ১: দ্য মুভি’। ব্র্যাড পিট অভিনীত রেসিং-নির্ভর এই ছবিটি ৭৮টি বাজার থেকে আয় করেছে ৫৬ দশমিক ৩ মিলিয়ন ডলার। যদিও ছবিটির বিশাল বাজেট ছিল ২৫০ মিলিয়ন ডলার, তাই লাভের মুখ দেখতে আরও কিছুটা সময় লাগবে।

আরেকদিকে, ডিজনির লাইভ-অ্যাকশন রিমেক ‘লিলো অ্যান্ড স্টিচ’ বৈশ্বিক আয়ে ৯৭২ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা এ বছরের সবচেয়ে সফল হলিউড ছবি হয়ে উঠতে চলেছে।

তবে বছরের সবচেয়ে বড় হিট এখনো চীনের ‘নে ঝা ২’। এর আয় ইতিমধ্যে ১ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে।

সবমিলিয়ে, ‘জুরাসিক ওয়ার্ল্ড রিবার্থ’ আবারও প্রমাণ করেছে যে, তিন দশক পেরিয়ে গেলেও ডাইনোসরের গল্পের আবেদন একটুও কমেনি। বরং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই আবেদন বেড়েই চলেছে, নতুন প্রযুক্তি আর তারকাবহুল কাস্টের ছোঁয়ায়।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে