অবশেষে সুপারহিরোপ্রেমীদের বহু প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়েছে মার্ভেল সিনেমা ইউনিভার্স। এবার তারা নিয়ে এসেছে সেই বিখ্যাত কমিক চরিত্রগুলো, নাম ‘দ্য ফ্যান্টাস্টিক ফোর’। এই সিনেমার মাধ্যমে মার্ভেল সিনেম্যাটিক ইউনিভার্সে শুরু হচ্ছে নতুন অধ্যায়। কমিকসপ্রেমীদের জন্য ফ্যান্টাস্টিক ফোর নতুন কিছু নয়। ১৯৬১ সালে স্ট্যান লি ও জ্যাক কিরবির হাতে জন্ম নেওয়া এই দলটি মার্ভেলের প্রথম সুপারহিরো টিম। রিড রিচার্ডস, সু স্টর্ম, জনি স্টর্ম ও বেন গ্রিম-এই চার চরিত্র বহুবার বড় পর্দায় এসেছে। এবার তারা এসেছে মার্ভেল সিনেম্যাটিক ইউনিভার্সের নিজস্ব ভাষায়। ‘ফার্স্ট স্টেপস’ নামটিই ইঙ্গিত করছে যে এটি হবে তাদের উত্থানের, পরিণত হওয়ার ও পৃথিবী তথা মহাবিশ্বে নিজেদের অবস্থান গড়ে তোলার কাহিনি। চার বছর আগে এক দুর্ঘটনার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছিল চারজন মানুষের ভাগ্য বদলের গল্প। মহাকাশে এক অজানা রশ্মির ছোঁয়ায় বদলে যায় রিড রিচার্ডস, সু স্টর্ম, জনি স্টর্ম ও বেন গ্রিমের জীবন। তারা আর সাধারণ মানুষ রইল না, হয়ে উঠল ফ্যান্টাস্টিক ফোর। এক অদ্ভুত পরিবার, এক অতিমানবিক প্রতিরোধ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবী তাদের বীর হিসেবে স্বীকৃতি দিলেও তারা নিজেরাই জানত, আরও বড় কিছু একদিন এসে দাঁড়াবে সামনে। এক সন্ধ্যায় রিডের অ্যাপার্টমেন্টে বসে ডিনারের টেবিলে জমেছে হালকা হাসাহাসি, বন্ধুত্ব আর পারিবারিক উষ্ণতা। তখনই রিড আর সু জানায় তাদের সবচেয়ে আনন্দের খবর। তারা বাবা-মা হতে চলেছে। কিন্তু এই আনন্দের মুহূর্ত চিরস্থায়ী হয় না। হঠাৎ আকাশে এক রহস্যময় সিলভার সার্ফার এসে ঘোষণা করে-‘তোমাদের গ্রহ চিহ্নিত করা হয়েছে। গ্যালাকটাস আসছে।’ সেদিন থেকে সবকিছু বদলে যায়। রিড জানত কিছু একটা আসছে। কারণ, মহাকাশে একের পর এক গ্রহ অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছিল। এবার দেরি না করে তারা রওনা হয় নিজেদের তৈরি রকেট ‘এক্সেলসিয়র’-এ, সরাসরি মুখোমুখি হতে গ্যালাকটাস-এর, সেই ভয়ংকর গ্রহ-গিলিয়ে সত্তার, যার পায়ের ছায়াতেই হারিয়ে যায় সভ্যতা। তারা পৌঁছায় এক গ্রহমণ্ডলে এবং চোখের সামনে দেখতে পায় একটি আস্ত গ্রহ ধ্বংস হয়ে যেতে। তাদের বন্দি করে আনা হয় গ্যালাকটাসের সামনে, যে এবার দেয় একটি অবিশ্বাস্য প্রস্তাব- পৃথিবী রেহাই পাবে, যদি সু স্টর্ম তার গর্ভে থাকা সন্তানকে তার হাতে তুলে দেয়। গ্যালাকটাস জানে, এই অনাগত শিশুর মধ্যে লুকিয়ে আছে এক অলৌকিক শক্তি- একটি নতুন সম্ভাবনা, একটি ভবিষ্যৎ; যা সে নিজেই নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। কিন্তু সু রুখে দাঁড়ায়, জনি জ্বলে ওঠে, বেন গর্জন করে, রিড যুদ্ধ করে। তারা একত্রে বলে, ‘না’। সেই না-র পথেই জন্ম নেয় ফ্র্যাংকলিন। ফিরে আসে তারা পৃথিবীতে, ফিরে আসে এক নতুন ভয় নিয়ে। মানুষ এখন তাদের দেখে ভয়ের চোখে। প্রেস কনফারেন্সে রিড যতই বোঝাতে চায়, তারা গ্যালাকটাসকে থামাতে পারেনি, বিশ্ব ততটাই আশাহত হয়। তখনই সু স্টর্ম মঞ্চে ওঠে, কোলের শিশুকে সামনে রেখে বলে- ‘তোমরা হয়তো আমাদের প্রতি বিশ্বাস হারিয়েছ, কিন্তু আমরা তোমাদের জন্য লড়াই ছাড়িনি। আমি আমার সন্তানের জন্য যেমন লড়ব, তেমনি পৃথিবীর জন্যও জীবন দেব।’