এক মাসব্যাপী উত্তাল আন্দোলনের অবসানে আজ মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) বিকেল ৫টায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ পাঠ করবেন। রাজনৈতিক দল, শহিদ পরিবার, আহত আন্দোলনকর্মী এবং জনগণের সরব উপস্থিতিতে এই ঘোষণাপত্র পাঠ অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশের জন্য এক স্মরণীয় মুহূর্ত হয়ে উঠবে। অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ টেলিভিশন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং নিশ্চিত করেছে, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস’ উপলক্ষে এই ঐতিহাসিক ঘোষণাপত্র পাঠ অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস উপস্থিত সকলের সামনে জাতির উদ্দেশে বক্তব্য রাখবেন। এটি এক মাস ধরে চলা গণআন্দোলনের রাজনৈতিক পরিণতি ও অন্তর্বর্তী সরকারের ভবিষ্যৎ রূপরেখা তুলে ধরবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এই উপলক্ষে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে সকাল থেকে দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক আয়োজন চলছে। সকাল ১১টা থেকে শুরু হয়েছে দেশের খ্যাতিমান শিল্পীদের পরিবেশনায় সংগীতানুষ্ঠান। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় থাকবে ড্রোন শো এবং রাত ৮টায় পরিবেশিত হবে ব্যান্ড সংগীত। এসব আয়োজনে সাধারণ মানুষ, আন্দোলনের কর্মী ও শিল্পীসমাজ একত্রিত হয়ে গণজাগরণকে উৎসবে রূপ দিয়েছে।
এদিকে জনসমাগম নির্বিঘ্ন করতে জাতীয় সংসদ ভবন এলাকা ও মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে যান চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলীর স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত বছর আজকের দিনটি— সোমবার, ৫ আগস্ট ২০২৪—জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ক্যালেন্ডারের শেষ দিন, যাকে ‘৩৬ জুলাই’ নামে অভিহিত করা হয়েছে। এক মাস ধরে চলা আন্দোলনের এই চূড়ান্ত দিনেই শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন দীর্ঘ ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনের পতন ঘটে এবং দেশে নতুন অন্তর্বর্তী রাজনৈতিক পরিকাঠামোর সূচনা হয়। তীব্র গণআন্দোলন, শহিদদের আত্মত্যাগ এবং জনতার প্রতিরোধের মুখে শেখ হাসিনা দেশত্যাগে বাধ্য হন।
জাতির সামনে বিকেল ৫টায় পাঠ করা এই ঘোষণাপত্র তাই শুধু একটি রাজনৈতিক বিবৃতি নয়, বরং ইতিহাসের মোড় ঘোরানো এক জাতীয় ঐক্যের দলিল। এই ঘোষণাপত্রে নতুন বাংলাদেশের দিকনির্দেশনা, জনগণের বিজয়ের স্বীকৃতি এবং ভবিষ্যৎ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার রূপরেখা স্পষ্ট হয়ে উঠবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।