রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রমে পরিবর্তন নিয়ে আপিল বিভাগের রিভিউ আদেশ পেছাল

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশ: ৬ আগস্ট, ২০২৫, ১১:৪২ এএম
রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রমে পরিবর্তন নিয়ে আপিল বিভাগের রিভিউ আদেশ পেছাল

দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রম নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে চলমান রিভিউ আবেদনের রায় ঘোষণার তারিখ পেছানো হয়েছে। নতুন করে এ বিষয়ে আদেশের দিন নির্ধারিত হয়েছে বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট)। এর আগে বিষয়টির শুনানি শেষে আদেশ ঘোষণার জন্য নির্ধারিত ছিল বুধবার (৬ আগস্ট)।

বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ছয় বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ সিদ্ধান্ত দেন। আদালতের কার্যক্রমে অংশ নেন ব্যারিস্টার সালাউদ্দিন দোলন, অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম এবং ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৩০ জুলাই আপিল বিভাগে রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রম বিষয়ে দায়ের করা রিভিউ আবেদনের শুনানি শেষ হয়। এর আগে, বিচারকদের সংগঠন বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে ৯ জানুয়ারি দ্রুত শুনানির আবেদন করা হয়। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগে আইনজীবী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার নিহাদ কবীর।

রিভিউ আবেদনের কেন্দ্রে রয়েছে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারির এক রায়। ওই রায়ে আপিল বিভাগ উল্লেখ করেন, যেহেতু সংবিধান দেশের সর্বোচ্চ আইন, তাই রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রম নির্ধারণে সাংবিধানিক পদাধিকারীদের সর্বাগ্রে স্থান দিতে হবে। এই রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি প্রকাশিত হয় ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর।

রায়ে বলা হয়, জেলা ও সমমর্যাদার বিচারকরা সরকারের সচিবদের সমান মর্যাদায় ১৬ নম্বরে উন্নীত হবেন এবং অতিরিক্ত জেলা জজ ও সমমর্যাদার বিচারকদের অবস্থান হবে ঠিক তার পরের ধাপে, অর্থাৎ ১৭ নম্বরে।

তবে একইসঙ্গে আপিল বিভাগ এই পদমর্যাদাক্রমকে শুধু রাষ্ট্রীয় আচার-অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য বলেও মন্তব্য করেন। নীতিনির্ধারণী বা প্রশাসনিক কার্যক্রমে এই তালিকা যেন প্রভাব না ফেলে, সে বিষয়েও সতর্কতা জারি করা হয়।

রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রম নিয়ে এই দীর্ঘমেয়াদি আইনি প্রক্রিয়ার সূচনা ঘটে ১৯৮৬ সালের ১১ সেপ্টেম্বর প্রণীত ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’-কে কেন্দ্র করে। পরবর্তীতে ২০০০ সালে এটি সংশোধন করা হলে এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক মহাসচিব আতাউর রহমান হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন। ২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট এই প্রজ্ঞাপন বাতিল করে আট দফা নির্দেশনা দেন।

বর্তমানে রিভিউ আবেদনের মধ্য দিয়ে নতুনভাবে রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রম পুনর্নির্ধারণের বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। আপিল বিভাগ এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না দেওয়া পর্যন্ত বিচার বিভাগের সদস্যদের মর্যাদাবিন্যাসের প্রশ্নটি অমীমাংসিতই রয়ে যাচ্ছে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে