কালীগঞ্জে দুই ইউনিয়নের ৪০ গ্রামের মানুষের ভরসা বাসের সাঁকো

এফএনএস (টিপু সুলতান; কালীগঞ্জ, ঝিনাইদহ) : | প্রকাশ: ৯ আগস্ট, ২০২৫, ১১:৫৮ এএম
কালীগঞ্জে দুই ইউনিয়নের ৪০ গ্রামের মানুষের ভরসা বাসের সাঁকো

ঝিনাইদহ কালীগঞ্জে বেগবতী নদীর ওপর নির্মাণাধীন সেতু ঠিকাদারের গাফলতির কারনে বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত সড়ক দিয়ে চলাচল করতে পারছে না। যে কারনে এলাকাবাসি নিজেরা বেগবতি নদীর উপর বাশের সাকো তৈরি করে জীবনের ঝুকি নিয়ে চলাচল করছে দুই ইউনিয়নের অন্তত ৪০ গ্রামের মানুষ।

ভারি বৃষ্টির পানির কারণে ব্যাপক ভাঙ্গন দেখা দেওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে আশপাশের ৪০ গ্রামের মানুষ। বিশেষ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজের ধীরগতি ও গাফলতির কারণে প্রায় ২১ মাসে  ব্রীজের কাজ শেষ করতে পারেনি।বেগবতী নদীর ওপর কোলাবাজার এলাকায় ৪ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয় ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে। সেতুটির কাজ করছেন মেসার্স জাকাউল্লাহ শামিম অ্যান্ড ব্রাদার্স,মেসার্স মিজানুর রহমান ট্রেডার্স যৌথভাবে কাজ করছে। সেতুর নির্মাণ কাজ ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে শেষ করার কথা।বর্তমানে সেতুর দুই পাশের দুটি পাইলিংয়ের কাজ শেষ হয়েছে এবং জামাল ও কোলা ইউনিয়নের জনসাধারনের জলাচলের জন্য বিকল্প সড়ক তৈরি করা হয়েছিল বাশ ও কাঠ দিয়ে কিন্তু ভারি বৃষ্টির কারণে সেটা তলিয়ে ভেঙ্গে গেছে। কোলা ও জামাল ইউনিয়নের মানুষ চলাচল বন্ধ হওয়ার অবশেষে তারা নিজেরাই বেগবতি নদীর উপরে বাশের সাকো তৈরি করে নিয়েছে। কিন্ত বাশের এ সাকো দিয়ে চলাচল করা অত্যান্ত ঝুকি হয়ে পড়েছে।

কালীগঞ্জের এ সড়কটি যশোর ঝিনাইদহ মহাসড়ক সংলগ্ন ছালাভরা/কোলাবাজার বেগবতী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন কোলা ও পার্শ্ববর্তী জামাল ইউনিয়নের কমপক্ষে ৪০ গ্রামের মানুষ। কোলা বাজারের এপার থেকে ওপারে যেতে অন্তত ১০ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে যেতে হচ্ছে। চলতি মাসের ৪ আগষ্ট গ্রামবাসির উদ্যোগে বাঁশের সাঁকো তৈরী করেছে যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।এলাবাসিরা বলছেন,কোলাবাজার বেগবতী নদীর ওপর নির্মাণাধীন সেতুটি জামাল ও কোলা ইউনিয়নের বাসিন্দাদের মধ্যে সেতুবন্ধনকারী। কোলাবাজারটি দেশের গ্রামাঞ্চালের মধ্যে একটি অন্যতম বাজার। যেখানে ছোট বড় মিলে কমপক্ষে সহস্্রাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট রয়েছে। এ বাজারটির এপার ওপারে রয়েছে কলেজ,মাধ্যমিক বিদ্যালয়,প্রাথমিক বিদ্যালয়, হেফজোখানা,বিভিন্ন এনজিও, মাদ্রাসা,ব্যাংক বীমা,ইউনিয়ন পরিষদ,পুলিশ ফাঁড়িসহ অসংখ্য অফিস। বেশ কিছুদিন নদী পার হয়ে আসা যাওয়া করতে পারছিলেন না যে কারনে এলাকাবাসির অন্তত ১০ কিলোমিটার ঘুরে বাড়ি ফিরতে হচ্ছিল। অবশেষে এলাকাবাসি নিজেরা কোনভাবে পারাপারের জন্য বাঁশের সাঁকো নির্মান করেছেন।কৃষিনির্ভর এই অঞ্চলে প্রচুর কৃষিপণ্য উৎপাদিত হলেও সময় মতো পরিবহণের ব্যবস্থা না থাকায় সেগুলো বাজারে পৌঁছানো যাচ্ছে না। ফলে চাষিরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন ও ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বেগবতি সেতু নির্মাণ না হওয়ায় কয়েক হাজার মানুষ পড়েছেন চরম বিপাকে। এছাড়া স্থানীয় গাড়ি চালকরা মোটরসাইকেল, ভ্যান, ট্রাক, ট্রাক্টর,নসিমন,আলমসাধু, করিমন,ভ্যান রিকসা চলাচল করতে পারছে না।এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত নাজুক হওয়ায় সাধারণ মানুষ প্রতিদিন চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।এলাকার আব্দুল কুদ্দুস বলেন,আমাদের কথা কেউ শোনছে না, কাজ শুরু করে কোন কারন ছাড়াই ঠিকাদার ফেলে রেখেছে এবং কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী  বিষয়টি আমলে নিচ্ছে না।

বিশেষ করে জামাল ও কোলা ইউনিয়নের জনসাধারনের চলাচলের এই বাশের সাকো একমাত্র ভরসা। অনেকে আবার ঝুকি নিয়ে বাশের সাকো দিয়ে পারাপার না হয়ে অন্তত ১০ কিলোমিটার ঘুরে বাড়ি ফিরছেন।অনেকে মটর সাইকেল,বাইসাইকেল, ভ্যান,রিকসাসহ ছোট বড় যানবাহন বাড়িতে নিতে পারে না।কালীগঞ্জের বেগবতি নদীর উপর ব্রীজ নির্মাণে ঠিকাদারের গাফলতির কারনে দেরি হওয়ায় কারণে গ্রামবাসিরা নিজেরাই বাঁশের সাঁকো তৈরি করে চলাচলের ব্যবস্থা করেছে। এটি বিশেষ করে গ্রামীন এলাকায় সেতু নির্মাণে দেরি হলে মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে।এই সাঁকোটি এখন ৪০ গ্রামের মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা।স্থানীয় বাসিন্দারা জানান,দীর্ঘদিন ধরে নতুন সেতু নির্মাণ না হওয়ার কারণে প্রতিদিনই দুর্ভোগ পোহাতে হয়। আশপাশের গ্রামের স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা এই সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করে। বয়স্ক ও শিশুদের নিয়ে সাঁকো পারাপারে চরম ভোগান্তি নিয়ে দিন কাটছে তাদের।ব্রীজের কাজ শেষ করে হবে নির্দিষ্ট করে কেউ বলতে পারছে না।এলাকার জনসাধারণের এ ভাগান্তি শেষ হবে কবে দুই ইউনিয়নের মানুষ তা নিয়ে মারাত্নক দুশ্চিন্তায় পড়েছে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে