রমজান আলীর (৬০) চোখে ছানি পড়ে ধীরে ধীরে ঝাপসা হয়ে যায় দৃষ্টি, হারিয়ে যায় রঙিন পৃথিবীর রূপ। অন্ধকার শুধু রাতের নয়, কখনো কখনো তা মানুষের চোখের ভেতরও নেমে আসে অন্ধকার। রমজানের মতো অনেকে অর্থাভাবে চিকিৎসার দ্বারপ্রান্তেও পা রাখতে পারেন না অনেকে। এ যেন হয়ে উঠেছে আলো বিলানোর এক অনন্য ঠিকানা। চোখের চিকিৎসা ও ছানি অপারেশনের এই মহতী ক্যাম্পের আয়োজন করেছে পার্বতীপুরের আলোর পথে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়। শারজা চ্যারিটেবল অর্গানাইজেশনের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় আজ শনিবার (৯ আগস্ট) পার্বতীপুরে আলোর পথে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় চত্বরে বিনা মূল্যে চোখের চিকিৎসা ও ছানি অপারেশন এই ক্যাম্পের আনুষ্ঠানিক উদ্ধোধন করেন, অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো: সাদ্দাম হোসেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন, আলোর পথে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের খালেদুর রহমান মিলন ও আঞ্জুমান আলা লাকি প্রমুখ।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা নানা বয়সের মানুষ সকাল থেকে ক্যাম্পে ভিড় জমিয়েছে কেউ জীবনের প্রথম চশমা পাওয়ার আশায়, কেউ বা হারিয়ে যাওয়া দৃষ্টি ফেরানোর জন্য ছানি অপারেশনের জন্য। সৈয়দপুর মরিয়ম চক্ষু হাসপাতালের সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডা: মুরাদ ইবনে হাসিব সৈকত নেতৃত্বে দিনব্যাপী চিকিৎসকরা ধৈর্য ও মমতায় রোগীদের চোখ পরীক্ষা করছেন, ব্যথাহীন অপারেশনের মাধ্যমে ফিরিয়ে দিচ্ছেন নতুন জীবনের আলো।
আলোর পথে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারি শিক্ষক আবুল কালাম মো: তৌহিদুল ইসলাম লিটন বলেন, সকাল থেকে ১৩৬ জনকে বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। এরমধ্যে ২৬ জনকে চোখের ছানি ও লেন্স স্থাপনের জন্য সৈয়দপুর মরিয়ম চক্ষু হাসপাতাল পাঠানো হয়। এদের সবাইকে বিনামূল্যে চিকিৎসা দেয়া হবে।
চিকিৎসা নিতে আসা পার্বতীপুর উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের রামপুরা গ্রামের রানী বালা (৫৫) বলেন, এতোদিন দৃষ্টিহীনতার অন্ধকারে বন্দী ছিলাম, আজ নতুন করে দেখবেন সন্তানদের মুখ, গ্রামের সবুজ প্রান্তর আর আকাশ দেখতে পাবে। এজন্য আয়োজকদের মনভরে দোয়া করেন।
এব্যাপারে পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো: সাদ্দাম হোসেন বলেন, অর্থের অভাবে যেন কারও চোখের আলো নিভে যেতে না হয় আয়োজক এই উদারতা প্রমাণ করেছে। বিনামূল্যে চোখের ছানি ও লেন্স স্থাপনের কাজ এটা একটা মহতী উদ্যোগ।