টেকসই ও স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি কয়েক দশক ধরে। প্রতিবছর ভাঙন রক্ষায় বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন ও মানববন্ধন এ অঞ্চলের মানুষের নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু মানবিকতা আজ মুখ থুবড়ে পড়েছে। প্রতি বছর ভাঙনে পানি বন্দী মানুষকে উপজেলা প্রশাসন থেকে যতটুকু সম্ভব পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে। সহানুভূতি ও প্রতিশ্রুতির কমতি থাকেনা পাউবো, জেলা প্রশাসক সহ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের। কিন্তু বাস্তবে কাজের কাজ কিছুই হয়না। ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ রক্ষার্থে জীবন বাজী রেখে এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে চেষ্টা চালায় তখন পানি উন্নয়ন বোর্ড কিছু জিওব্যাগ আর বাঁশ দিয়ে ফটোসেশনে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। পানিতে প্লাবিত হলে পিআইও অফিস সহ আশেপাশের এলাকার মানুষ ত্রাণ নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। প্রতিবছর এমন ঘটনা ঘটে খুলনার পাইকগাছায় দেলুটি ইউনিয়নের ২২নং পোল্ডারে। ৬নং ওয়ার্ডের কালিনগর অমল কবিরাজের বাড়ির সামনে ওয়াবদার বেড়িবাঁধে ভাঙন আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে।
গতবছর ২২ আগস্ট বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে জোয়ারে ভদ্রা নদীর অতিরিক্ত পানি বৃদ্ধি পেয়ে উপজেলার দ্বীপব্যষ্টিত দেলুটি ইউনিয়নের ২২নং পোল্ডারের কালিনগর বাওয়ালি বাড়ির দক্ষিণ পাশের ৩শ’ ফুটের বেশি এলাকা জুড়ে ওয়াপদার বাঁধ (রাস্তা) ভেঙে লোকালয় প্লাবিত হয়। এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে এবং উপজেলা প্রশাসন, পাউবোর উদ্যোগে এক সপ্তাহের চেষ্টায় ভাঙনের স্থানে বাঁধ নির্মাণ করা হয়। কিন্তু ১৬.০৯.২৪ তারিখে আবারও দারুণ মল্লিক গ্রামে ওয়াটার স্লুইচগেট সংলগ্ন প্রায় ৩শ ফুটের বেশি বেড়িবাঁধে ফাটলসহ জোয়ারে পানি প্রবেশ করে। এবছরো ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। তবে এবার অমল কবিরাজের বাড়ির সামনে। এবছর অতিবৃষ্টি, নদীতে প্রবল স্রোত, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, লঘুচাপে বাঁধে ভাঙন সহ বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। যেকোনো সময় বড়ধরনের বিপদ ঘটতে পারে। এলাকাবাসী নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে। আছে আতংকে। সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী। দেলুটি ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য পলাশ রায় বলেন, ২২ নম্বর পোল্ডারের আয়তন প্রায় আড়াই হাজার হেক্টর। যেকোনো এক স্থানে ভেঙে গেলে ১৩টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে ফসল ও কাঁচা ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হবে। ভেসে যাবে চিংড়িঘের ও পুকুরের মাছ। ২২ নং পোল্ডারের কালিনগর অমল কবিরাজের বাড়ির সামনে ওয়াবদা ভেড়ীবাঁধের অবস্থা দিন দিন খুবিই খারাপের দিকে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণের সাথে যোগাযোগ করলে আমাদের শুধু আশস্ত করছেন যে দ্রুত বিকল্প বাধ নির্মাণ হবে। কিন্তু ভাঙনের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। বুধবার এলাকাবাসী সকাল ১১টায় মানববন্ধন করেছে।