হলিউড ও ইউরোপীয় সিনেমার দুই উজ্জ্বল মুখ-টিম বার্টন ও মনিকা বেলুচ্চি। গত দুবছরে তাদের প্রেমের গল্প ছিল ভক্তদের আগ্রহের কেন্দ্রে। তবে সেই অধ্যায় শেষ হলো হঠাৎ করেই। এক যৌথ বিবৃতিতে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে জানালেন, আর একসঙ্গে এগোনো সম্ভব হচ্ছে না। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘পারস্পরিক সম্মান ও গভীর যত্নের মধ্য দিয়েই টিম বার্টন ও মনিকা বেলুচ্চি আলাদা হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’ সংক্ষিপ্ত এ বার্তাই বলে দিল, সম্পর্কের ইতি হলেও তিক্ততার জায়গা নেই, আছে কেবল একে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধা। দুজনের প্রথম দেখা ২০০৬ সালে, কান চলচ্চিত্র উৎসবে। তবে তখন দুজনই অন্য সম্পর্কে ছিলেন। তাই দেখা হলেও সে সম্পর্ক গড়ে ওঠেনি। দীর্ঘ সময় পর ২০২২ সালে, ফ্রান্সের লুমিয়ের উৎসবে, যখন মনিকা বেলুচ্চি বার্টনকে আজীবন সম্মাননা তুলে দেন, তখনই যেন নতুন করে সূচনা হয় তাদের যাত্রার। এরপর থেকে ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে। ২০২৩ সালে রোম ফিল্মস ফেস্টিভ্যালে তারা যখন প্রথমবার যুগল হিসেবে প্রকাশ্যে আসেন, তখনই আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হন দুজন। তাদের প্রেমকাহিনি কেবল ব্যক্তিজীবনে সীমাবদ্ধ থাকেনি, ছুঁয়ে গেছে পেশাগত জগতকেও। বার্টন তার বহুল প্রতীক্ষিত চলচ্চিত্র ‘বিটলজুস বিটলজুস’-এ খলচরিত্র ডেলোরেসের জন্য বেলুচ্চিকে বেছে নেন। এটি শুধু এক কাজের সিদ্ধান্ত ছিল না, বরং তাদের সম্পর্কের নতুন মাত্রা যোগ করেছিল। এরপর লন্ডনে ছবির প্রিমিয়ারেও দুজনকে একসঙ্গে দেখা যায়। ক্যামেরার ঝলকানিতে ধরা পড়ে এক অভিনব জুটির আভিজাত্য, যা ভক্তদের কাছে ছিল এক বিশেষ মুহূর্ত। এরপর নিজেদের সম্পর্ক নিয়ে ২০২৩ সালে ফরাসি সাময়িকী এল ফ্রান্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বেলুচ্চি বলেছিলেন, ‘আমি খুশি যে মানুষটিকে (বার্টন) পেয়েছি। জীবনে এমন সাক্ষাৎ বিরল। আমি মানুষটিকে ভালোবাসি, আর এবার পরিচালককেও পাব-একটি নতুন যাত্রা শুরু হলো।’ এ বক্তব্য সে সময় প্রমাণ করেছিল, তিনি বার্টনের প্রতি কতটা নিবেদিত ছিলেন। সম্পর্কটি তখন শুধু ব্যক্তিগত ভালোবাসাই নয়, সৃজনশীলতার মেলবন্ধন হিসেবেও দেখা হচ্ছিল। বার্টনের ব্যক্তিগত জীবন দীর্ঘ সময় জুড়ে আলোচিত ছিল। অভিনেত্রী হেলেনা বোনহ্যাম কার্টার ছিলেন তার জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। ২০০১ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত তাদের একসঙ্গে থাকা, দুটি সন্তান-বিলি ও নেল। একসঙ্গে করেছেন একাধিক সফল চলচ্চিত্র, যেমন ‘সুইনি টড’, ‘অ্যালিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড’, ‘ডার্ক শ্যাডোজ’। অন্যদিকে, মনিকা বেলুচ্চি ১৯৯৯ সালে বিয়ে করেছিলেন ফরাসি অভিনেতা ভিনসেন্ট ক্যাসেলকে। তাদেরও দুটি কন্যা-দেভা ও লিওনি। তবে ২০১৩ সালে তাদের বিচ্ছেদ হয়।