চাটমোহরে ভুয়া অভিভাবক ভোটার ও একই ব্যক্তি দুইবার ভোটার

এফএনএস (হেলালুর রহমান জুয়েল; চাটমোহর, পাবনা) : | প্রকাশ: ১৩ অক্টোবর, ২০২৫, ০৮:৩৩ পিএম
চাটমোহরে ভুয়া অভিভাবক ভোটার ও একই ব্যক্তি দুইবার ভোটার

পাবনার চাটমোহর পৌর সদরের সামাদ সওদা মহিলা দাখিল মাদ্রাসায় নানা অনিয়ম আর দূর্নীতির পর এবার নতুন তথ্য মিলেছে। ওই মাদ্রাসার এবতেদায়ী শাখার একজন শিক্ষক মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনের জন্য তৈরিকৃত ভোটার তালিকায় দাতা সদস্য হিসেবে একবার ভোটার হয়েছেন,আবার শিক্ষক প্রতিনিধি হিসেবেও ভোটার হয়েছেন। শুধু তাই নয় এবতেদায়ী শাখায় করা হয়েছে ভুয়া ভোটার। মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার তার অনিয়ম জায়েজ করার জন্যই এ ধরণের অনিয়ম করেছেন। শুধু তাই নয়,মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার মোসলেম উদ্দিন সুপার পদে বহাল থাকার জন্য মাদ্রাসার ছাত্রীদের দিয়ে ওই মাদ্রাসার সাময়িক বরখাস্তকৃত সুপার মওলানা আব্দুল ওয়াহহাবের বিরুদ্ধে মানববন্ধনও করিয়েছেন। মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড আর আদঅরতের নিদের্শনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তিনি এ ধরণের কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ।   

অভিযোগে জানা গেছে,মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার তার নানা অনিয়ম জায়েজ করতে,আদালতের নির্দেশ ও মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের নির্দেশ অমান্য করে মাদ্রাসার সুপার মওলানা আঃ ওয়াহহাবকে স্বপদে বহাল না করে তার ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতেই এই কার্যক্রম চালাচ্ছেন। যদিও তার বেতন-ভাতা এখন বন্ধ রয়েছে। ভারপ্রাপ্ত সুপার ভুয়া ভোটার করার পর মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন গোপনে করে কমিটি গঠণ করে তা অনুমোদনের জন্য মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডে পাঠান। মাদ্রাসার সুপার এই কমিটির বিরুদ্ধে মাদ্রাসা শিক্ষাাবোর্ডে অভিযোগ দায়ের করেন। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) শফিউল ইসলাম তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। এই তদন্ত কার্যক্রম ব্যাহত করতে ভারপ্রাপ্ত সুপার মোসলেম উদ্দিন নানা ফন্তি আটেন।   

মাদ্রাসার সুপার আঃ ওয়াহহাবেেক স্বপদে বহাল করার জন্য আদালত ও মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড নির্দেশ দিয়েছেন। গত ১৯ আগস্ট’২৫ ইং তারিখে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ছালেহ আহমাদ তাঁর দপ্তরের বামাশিবো/প্রশা/পাবনা-১২৬/৮৮ নং স্মারকপত্রে মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপারকে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের নির্দেশনা মোতাবেক এই পত্র দেওয়া হয়। কিন্তু তাকে বহাল করা হচ্ছেনা। মানা হচ্ছেনা আদালত ও মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের নির্দেশনা। উপরন্তু মাদ্রাসার সুপার যাতে স্বপদে ফিরতে না পারেন,এজন্য মাদ্রাসার এডহক কমিটির সভাপতি ইমরান হোসেন তাকে কারণ দর্শানো নোটিশ প্রদান করেছেন। বিগত ৯ বছর যাবত ভারপ্রাপ্ত সুপার হিসেবে দায়িত্বে থাকা সহকারি সুপার মোঃ মোসলেম উদ্দিন নানাবিধ সুবিধা ভোগ করার কারণে মাদ্রাসার সুপারকে স্বপদে বহাল করতে গড়িমসি করছেন বলে অভিযোগ। 

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ শফিউল ইসলাম মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার মোসলেম উদ্দিনকে ম্যানেজিং কমিটির সভা ডেকে আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক সুপারকে স্বপদে বহাল করার মৌখিক নির্দেশ প্রদান করলেও সেটাও আমলে নেয়নি ভারপ্রাপ্ত সুপার ।

এদিকে মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার মোসলেম উদ্দিনের বিরুদ্ধে মাদ্রাসার জমি বিক্রিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। মন্ত্রনালয়ের নির্দেশনা ছাড়া কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জমি বিক্রির এখতিয়ার কারো নেই। অথচ মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার কোটি টাকার জমি বিক্রি করে পকেটস্থ করেছেন। সুপার আব্দুল ওয়াহহাব ন্যায় বিচার চেয়ে বারবার বিভিন্ন দপ্তরে ও আদালতের স্মরণাপন্ন হন। আদালত তার বেতন-ভাতা প্রদানসহ স্বপদে বহালের নির্দেশনা প্রদান করেন। তারপরও মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার তা অগ্রাহ্য করে চলেছেন। এই মাদ্রাসার পাবলিক পরীক্ষার ফলাফলও তলানীতে ঠেকেছে। ইতোমধ্যে নানা অনিয়মের কারণে মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার মোঃ মোসলেম উদ্দিনের বেতন-ভাতাও বন্ধ করে দিয়েছে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড।    

আব্দুল ওয়াহহাব অভিযোগ করেন,ভারপ্রাপ্ত সুপার আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে ও বানোয়াট অভিযোগ করে বেড়াচ্ছেন। আমাকে স্বপদে না ফেরাতে নানা অপচেষ্টা চলছে।  

ভারপ্রাপ্ত সুপার মোসলেম উদ্দিন একই ব্যক্তিকে দুইবার ভোটার ও ভুয়া ভোটার করার বিষয়ে বলেন,আপনারা তো রিখছেন। লেখেন। সুপার আনতে পারে কিনা দেখেন। 

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) শফিউল ইসলাম বলেন,একজন ব্যক্তি দুই স্থানে ভোটার হতে পারেন না। ভুয়া ভোটার করলে,তদন্তপূর্বক পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।   

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে