ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ ও যশোরের উপর দিয়ে চলে যাওয়া মহাসড়কের বেহালদশায় পরিনত হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন সংস্কার ও মেরামত না হওয়ায় আর চলতি মৌসুমে বৃষ্টির ফলে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত ও খানাখন্দের। এতে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা আর দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রী ও চালকদের। সড়ক বিভাগ বলছে, ক্ষতিগ্রস্থ জায়গা গুলো ইটবালি দিয়ে চলাচলের ব্যবস্থা করছি, সংস্কারেও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
ঝিনাইদহ জেলা দেশের দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ জেলা। মোংলা নৌবন্দর ও বেনাপোল স্থলবন্দরের অধিকাংশ মালামাল এ জেলার সড়ক দিয়েই উত্তরবঙ্গে আনা-নেওয়া করা হয়। ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া, মাগুরা, চুয়াডাঙ্গা ও যশোর সড়ক দিয়ে দুর-পাল্লাসহ সকল যানবহন চলাচল করে থাকে। দীর্ঘদিন এ রুটে চলাচলকারী মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন। মহাসড়কের বিভিন্ন জায়গায় উঠে গেছে পিচ, সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় খানাখন্দের, আর জমে আছে পানি। বিশেষ করে আরাপপুর, ভাটই, গাড়াগঞ্জ, শেখপাড়া, কালীগঞ্জ, বিষয়খালী, চুটলিয়া, লউদিয়া, হামদহ বাইপাস, বারোবাজার, হাটগোপালপুরসহ বিভিন্ন স্থানের অবস্থা অত্যান্ত নাজুক। তৈরী হয়েছে বড় বড় গর্ত। যার কারনে সড়কের বিভিন্ন জায়গায় প্রতিদিন ছোট বড় দুর্ঘটনা দেখা দিচ্ছে। এসব স্থানে পড়ে নষ্ট হচ্ছে যানবাহন। ভাঙা রাস্তা দিয়ে চলাচলে দুর্ভোগের স্বীকার হতে হচ্ছে সব ধরনের মানুষের। সড়ক বিভাগের পক্ষ থেকে মাঝে মাঝে খানা-খন্দে কিছু ইট বালি দিয়ে মেরামত করলেও কয়েকদিন পরে আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসে। তাই দ্রুত সড়ক সংস্কার করার দাবী চালাচলকারী মানুষ ও এলাকাবাসীর।
গড়াই বাসের চালক মিজানুর রহমান জানান. দির্ঘদিন ধরে ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া. ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়কের এমন অবস্থা আমাদেও গাড়ি চালাতে খুব বেগ পেতে হয়। তার উপড় আবার কিছু কিছু যায়গাতে মহাসড়কের উপড় ইটের সলিং বোনা আছে। আমরা যখন জোড়ে গাড়ি চালাই যাত্রিরা ঝাকুনিতে এদিক ওদিক বাড়ি খাই। তাই আমরা দ্রুত সড়ক সংস্কার করার দাবী জানায়।ঢাকায় যাতায়াতকারি রয়েল পরিবহনের চালক উত্তম কুমার জানান, ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা-মাগুরা হয়ে পরিবহন চালিয়ে ঢাকাতে যেতে হয়। আগে যেখানে তিন ঘন্টাই ঢাকাতে যেতে পাড়তাম কিন্তু এখন তা সম্ভব হচ্ছে না কারণ একটাই মহাসড়কের অবস্থা এতটায় খারাপ যে একটু গতিতে গাড়ি চালালে যাত্রিরা বকাবকি শুরু করে দেয়।
রয়েল পরিবহনের যাত্রি রাজু আহমেদ জানান,আমি বিষয়খালী বাজার থেকে রয়েল পরিবহনে ঢাকাতে যাচ্ছি জরুরী একটা কাজে। তবে মহাসড়কের যে অবস্থা তাতে ঢাকার যাত্রা আমার জন্য খুব কষ্ট দায়ক হবে কলে আমি মনে করছি।
সড়কে নিয়মিত চলাচলকারী সুকান্ত কুমার জানান, আমি কালীগঞ্জ থেকে প্রতিদিন জেলা শহরে কাজের জন্য আসি। তবে মহাসড়কের যে অবস্থা তাতে করে জীবনের ঝুকি নিয়ে মোটর সাইকেলে করে চলাচল করি। তবে দীর্ঘদিন মহাসড়ক সংস্কার ও মেরামত না হওয়ার ফলে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত ও খানাখন্দের। তাইতো প্রতিনিয়িত ঘটছে দুর্ঘটনা। আর দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের।ইজিবাইক চালক হজরত আলী জানান, পেটের তাগিদে আমরা প্রত্যাহদিন মহাসড়কে বের হয়। কিন্তু সড়কের যে অবস্থা তাতে করে চলাচল করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তারপরও শত কষ্ট নিয়ে সড়কে চলাচল করতে হয়।
ঝিনাইদহ সওজ নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান জানান, বেশি ক্ষতিগ্রস্থ সড়ক সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ঠ দপ্তরে আবেদন করা হয়েছে। ইতি মধ্যে ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা সড়ক মেরামত করার কাজ চলমান রয়েছে। তবে অনুমোদন পেলে বাকি মহাসড়ক জনদুভোর্গ লাঘবে কাজ শুরু করা হবে বলে আশ্বাস এই কর্মকর্তার।ঝিনাইদহের চারটি রুটে জাতীয় মহাসড়ক রয়েছে প্রায় ৮৪ কিঃ মিঃ। যার মধ্যে বেশির ভাগ স্থানের সড়ক নষ্ট হয়েছে।