সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৬৫ হাজার ৫০২ জন প্রধান শিক্ষকের পদ অবশেষে দশম গ্রেডে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হলো। প্রশাসনিক উন্নয়নসংক্রান্ত সচিব কমিটি এই প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে, যা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ বুধবার (১০ ডিসেম্বর) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে জানায়। এর মাধ্যমে দীর্ঘদিনের দাবি পূরণের পথে এগোলেন দেশের প্রাথমিক শিক্ষার দায়িত্বে থাকা সর্ববৃহৎ এই কর্মকর্তা-কর্মচারী গোষ্ঠী।
এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রশাসনিক উন্নয়নসংক্রান্ত সচিব কমিটির অষ্টম সভায়। গত ৩ ডিসেম্বর মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিষয়টি বিস্তৃত আলোচনায় উঠে আসে। সেখানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৬৫ হাজার ৫০২টি প্রধান শিক্ষক পদের বেতন গ্রেড ১১ থেকে গ্রেড ১০ এ উন্নীত করার প্রস্তাব উপস্থাপন করেন। পরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ আনুষ্ঠানিকভাবে এই সিদ্ধান্তের অনুমোদন পাঠায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে।
আলোচনায় জানানো হয়, রিট পিটিশন নম্বর ৩২১৪/২০১৮ অনুযায়ী ইতোমধ্যে ৪৫ জন প্রধান শিক্ষকের বেতন স্কেল গ্রেড ১১ থেকে গ্রেড ১০ এ উন্নীত করে সরকারি আদেশ জারি করা হয়েছে। এই ধারাবাহিকতায় বাকি ৬৫ হাজার ৫০২ জন প্রধান শিক্ষকের ক্ষেত্রেও একই গ্রেড উন্নীতকরণ প্রস্তাব করা হলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্মতি জানায়। অর্থ বিভাগের ব্যয় ব্যবস্থাপনা এবং বাস্তবায়ন অনুবিভাগও এই প্রস্তাবে সম্মতি দেয় এবং বেতন স্কেল দশম গ্রেডে নির্ধারণ করে।
সভায় বিষয়টি বিস্তারিত পর্যালোচনা শেষে উপস্থিত সদস্যরা সম্মিলিতভাবে এই উন্নীতকরণের সুপারিশ করার পক্ষে একমত হন। তবে সুপারিশে উল্লেখ করা হয় যে, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং অর্থ বিভাগ যে শর্তসমূহ আরোপ করেছে সেগুলো পূর্ণাঙ্গভাবে অনুসরণ করতে হবে। পাশাপাশি প্রয়োজনীয় সব প্রশাসনিক আনুষ্ঠানিকতাও সম্পন্ন করতে হবে।
শিক্ষাবিষয়ক কর্মকর্তারা মনে করছেন, বেতন গ্রেড উন্নীত হলে প্রধান শিক্ষকদের দায়িত্ব ও কর্মপ্রেরণা বাড়বে, যা সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে। তবে বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে নির্ধারিত শর্ত পূরণ এবং প্রশাসনিক প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করার ওপরই নির্ভর করবে কবে থেকে প্রধান শিক্ষকরা এই সুবিধা পাবেন।